বিধবা ভাতা থেকে চালের কার্ড ও টিউবওয়েল-- সর্বক্ষেত্রেই ইউপি সদস্য মসুর ঘুষ বাণিজ্য

ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন মসুর বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। বিধবা ভাতার কার্ড, ভিজিডি কার্ড, টিউবওয়েল কিংবা টয়লেট প্রকল্প—যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই টাকার বিনিময়ে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

বিধবা কার্ড পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে চার হাজার টাকা নিয়েছেন দরিদ্র নারী কোহিনূর বেগমের কাছ থেকে। কিন্তু কার্ড দেননি, উল্টো টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দেন—এ কথা যেনো কাউকে বলা না হয়। একইভাবে ভিজিডি কার্ডের নামে তিন হাজার টাকা হাতিয়েছেন হতদরিদ্র উজ্জ্বল গাজীর কাছ থেকেও।

শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের নামেও চলছে টাকা আত্মসাৎ। আক্কাস রাড়ির স্ত্রী সাহিদা বেগম অভিযোগ করেন, টয়লেটের নামে আড়াই হাজার টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু টয়লেট দেননি। বরং অশালীন ভাষায় গালাগাল করেছেন। একই অভিযোগ করেছেন সুফিয়া, খাদিজা ও আঁখি বেগমও।

অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। বিধবা নারী রানু বেগম জানিয়েছেন, টিউবওয়েল দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে এ ইউপি সদস্য তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি কোনো টিউবওয়েল পাননি। এছাড়া আলী হোসেনের স্ত্রীর কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা ও ন্যায্য মূল্যের চালের কার্ড নিয়ে ফেরত দেননি বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্যে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন মসুকে টাকা দেয়ার বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, মানুষ বিভিন্ন কাজে খুশি হয়ে দেয় আর কি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি মহল আমার বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এগুলো করছে। 'অভিযোগকারী সকলেই কি মিথ্যা বলছে' এমন প্রশ্ন কোনো উত্তর দেননি তিনি।

এলাকাবাসীর দাবি, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগণের সেবা করার পরিবর্তে তিনি বিভিন্ন ভাতা ও প্রকল্পকে হাতিয়ার বানিয়ে অসহায়দের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।