প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৮
গাছের ডাল কাটা নিয়ে ঝগড়ার জের
ফরিদগঞ্জে ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে ভাই খুন ॥ আটক ৩

ফরিদগঞ্জে ঘরের চালে গাছের ডালা পড়েছে এমন অভিযোগ নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে ছোট ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে বড়ো ভাই খাজা আহাম্মদ (৫৫) নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাতে উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের খাসের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ রাতেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত নিহত খাজা আহাম্মদের বড়ো ভাই মো. নুর মোহাম্মদ খান (৫৮), ছোট ভাই শাহজালাল (৪০) এবং তার স্ত্রী আসমা বেগম (৩৩) কে আটক করেছে। নিহত খাজা আহাম্মদের দুই ছেলে দুই মেয়ে। এর মধ্যে দুই ছেলেই সৌদি প্রবাসী।
|আরো খবর
নিহত খাজা আহাম্মদের স্ত্রী রুবী বেগম জানান, বুধবার দুপুরে তার স্বামীর ছোট ভাইদের একজন অলি উল্ল্যাহর ঘরের চালে আরেক ছোট ভাই শাহজালাল গাছের ডাল কেটে ফেলে। এতে ঘরের ক্ষতির আশঙ্কা করে ঘটনাটি ওইদিন রাতে তার স্বামী খাজা আহাম্মদকে জানায় অলি উল্ল্যাহর স্ত্রী রোজিনা বেগম। এই বিষয় নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে তার স্বামীকে প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে শাহাজালাল। তা গায়ে না পড়ায় বাড়ি থেকে হাতুড়ি এনে মাথায় আঘাত করলে লুটিয়ে পড়েন তার স্বামী। পরে অভিযুক্ত অন্যরা তার স্বামীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে বেদম মারধর করেন। এক পর্যায়ে তাকে উদ্ধার করে রাতে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
আরেক ভাই অলি উল্ল্যাহর স্ত্রী রোজিনা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাতে ভাসুর শাহজালাল ঘরের পাশের গাছের ডাল কাটলে তা তার ঘরে পড়ে। এতে তার ঘরটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়। বিষয়টি তিনি তার আরেক ভাসুর খাজা আহাম্মদকে জানান। এই বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফরিদ আহমেদ খাজা আহাম্মদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছন।
নিহত খাজা আহাম্মদের মেয়ে হালিমা আক্তার জানান, এই জমি নিয়ে তার বাবা-চাচাদের বিরোধ মিটছে না। তার যখন প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল, তখন তার চাচা শাহজালাল তার ঘরের সামনে দিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আসা গাড়ি ঢুকতে দেননি। এই জমি নিয়ে আমার বাবাকে প্রাণ দিতে হলো। তার দুই ভাই প্রবাসে থাকে।
খাজা আহাম্মদের বড়ো ছেলে সৌদি প্রবাসী শ্রাবণ আহমেদ রাকিব বলেন, এভাবে আর কোনো মৃত্যু চাই না। আমার বাবাকে এই জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঝগড়ার কারণে প্রাণ দিতে হলো। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের বিচার চাই। আজ আমরা প্রবাসী দুই ভাই এতিম হয়ে গেলাম।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।