প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুরে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে দুজন মুক্তিপ্রাপ্ত কারাবন্দীকে পুনর্বাসনে ৫৭ হাজার টাকা ব্যয় করার একটি সংবাদ গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে খুবই গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছে। এটি যে একটি মহৎ উদ্যোগ তাতে কোনো সন্দেহ না থাকলেও পাঠকদের মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদটি পড়ে জানা যায়, অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতির মাধ্যমে মুক্তিপ্রাপ্ত দুজন কারাবন্দীকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চাঁদপুর শহরের ষোলঘরস্থ জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে উক্ত দু ব্যক্তির হাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপকরণ ও নগদ অর্থ তুলে দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
মুক্তিপ্রাপ্ত কারাবন্দী দুজন হচ্ছেন : মোঃ মিজানুর রহমান হাওলাদার (বয়স ৬৫ বছর), গ্রাম : সন্না, বাকিলা, হাজীগঞ্জ। তিনি ২৪ বছর কারাবরণ করে ২০২২ সালের ৩ জুলাই মুক্তিলাভ করেছেন। অপরজন হচ্ছেন মোঃ আব্দুস সোবহান (বয়স ৫৩ বছর)। তিনি চাঁদপুর বড় স্টেশনস্থ রেল শ্রমিক কলোনীর ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। তিনি ২৩ বছর কারাবরণ করে ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর মুক্তিলাভ করেছেন। মিজানুর রহমান হাওলাদারের পুনর্বাসনে তার চাহিদানুযায়ী তাকে লন্ড্রী দোকান পরিচালনার জন্যে নগদ ৩২ হাজার টাকা এবং আঃ সোবহানের চাহিদা অনুযায়ী তাকে ২২ হাজার টাকা মূল্যের ভ্যান ও তরকারি ব্যবসার জন্য পুঁজি হিসেবে নগদ তিন হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
পাঠকদের কৌতূহল নিবৃত্ত করতে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি সম্পর্কে কিছু লিখা দরকার। বাংলাদেশে অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬২ সালে উক্ত সমিতির মাধ্যমে। সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করতে প্রতিটি জেলায় এ সমিতির শাখা খোলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সমিতির অভিন্ন গঠনতন্ত্র না থাকায় বিভিন্ন জেলায় সমিতির কার্যক্রমে সামঞ্জস্যহীনতা পরিলক্ষিত হয়। এটি নিরসনে ২০০২ সালে অভিন্ন নমুনা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়। এই সমিতি শুধু মুক্তিপ্রাপ্ত কারাবন্দীদের পুনর্বাসনে কাজ করে না, কারাভ্যন্তরে বন্দীদের সাধারণ শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষাসহ যুগোপযোগী বৃত্তিমূলক কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করছে। এ সমিতিতে ১৮ বছরোর্ধ্ব যে কেউ সাধারণ সদস্য ও আজীবন সদস্য পদ লাভ করে অপরাধী সংশোধন কার্যক্রমে ভূমিকা রাখতে পারেন। চাঁদপুরে পদাধিকারবলে জেলা প্রশাসক এ সমিতির সভাপতি। তাঁর নেতৃত্বে এ সমিতির কার্যক্রম ধীরগতির হলেও প্রশংসনীয়। আমরা এ সমিতির কার্যক্রমে গতিশীলতা, সুনাম ও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করছি।