শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫০

ভয়াবহ দুর্ঘটনার আগে গাছগুলো কাটার ব্যবস্থা নিন

অনলাইন ডেস্ক
ভয়াবহ দুর্ঘটনার আগে গাছগুলো কাটার ব্যবস্থা নিন

‘পুরাণবাজারে বিশাল আকৃতির গাছ ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্কে বাসিন্দারা’। এটি গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত শীর্ষ সংবাদ। এ সংবাদে লেখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বিশাল আকৃতির সরকারি ৩টি গাছ ভেঙ্গে বসতিতে পড়ার আতঙ্কে এবং ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে মমিনবাগ এলাকার ৭টি পরিবার সবসময় এ আতঙ্কে থাকেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট ২০২৫) সরজমিনে ওই স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বিশাল আকৃতির রেইনট্রি গাছ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই গাছটির নিচের অংশে কোনো মাটি নেই। যে কোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে গাছটি ভেঙ্গে বসতিতে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। এছাড়াও একই এলাকায় আরো দুটি বড়ো রেইনট্রি গাছ রয়েছে। সেগুলোরও একই অবস্থা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক মিয়া বলেন, ব্রিজ সংলগ্ন গাছটি নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে যে কোনো সময় গাছটি ভেঙ্গে আমার বসতিতে পড়তে পারে। রাতের বেলায় ঘুমের ঘোরে ভেঙ্গে পড়লে ঘরে থাকা লোকজনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার জানা মতে, এসব গাছ সরকারি জায়গায়। আমি অনুরোধ করবো, গাছগুলো সরকারি খরচে যেনো কেটে নেয়। আর অনুমতি দিলে আমরা খরচ দিয়ে গাছগুলো কাটার ব্যবস্থা করতে পারবো। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৭টি পরিবারের লোকজন বসবাস করে। এদিকে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজ সংলগ্ন সংযোগ সড়কটির নিচের মাটি ও ব্লক সরে গেছে। অতিবৃষ্টির কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ গাছটিসহ অন্য গাছগুলো সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃক জরুরি ভিত্তিতে কেটে নেয়া হোক।

বন বিভাগকে সংশ্লিষ্ট রেখে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর পৌরসভা কিংবা সদর উপজেলা প্রশাসন ধসে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা পুরাণবাজারের তিনটি গাছ কাটার ব্যবস্থা নিতে হবে অতি দ্রুত। কেননা বর্ষা মৌসুম চলছে। ভারী বর্ষণে গাছগুলো উপড়ে পড়তে পারে। আর উপড়ে পড়লেই নিশ্চিত হতাহতের ঘটনা ঘটবে। দিনের বেলা কিংবা সন্ধ্যা-রাতে এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে হতাহতের ঘটনা হয়তো বা এড়ানো যাবে। কিন্তু গভীর রাতে ঘটলে ঘরচাপা পড়ে হতাহতের ঘটনা এড়ানো যাবে না। এমতাবস্থায় জবাবদিহিতা এড়াতে পারবেন না সরকারের কর্মকর্তারা। এক্ষুণি উদ্যোগ নিলে ফলপ্রসূ হবে, আর কালবিলম্বে ঘটবে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, সরকারি গাছ চাইলেই যখনতখন কাটা যায় না। এজন্যে কমিটি গঠন করতে হয় এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পাদন করে তারপর গাছ কাটতে হয়। চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখার মোড় থেকে নাজিরপাড়া রোডের মাথা পর্যন্ত আ. করিম পাটোয়ারী সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে চাঁদপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল সরকারের নির্দিষ্ট নিয়মনীতি না মেনে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে দিয়ে অনেক গাছ কেটে ফেলার ব্যবস্থা করেন এবং গণমাধ্যমে সংবাদের উপজীব্য হন। এমন বিব্রতকর অবস্থায় অধ্যক্ষ মহোদয় সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। এ ঘটনাটি মনে করিয়ে দিলাম এজন্যে যে, যাতে পুরাণবাজার এলাকার তিনটি সরকারি গাছ কাটার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এবং সরকারি নিয়মনীতি রক্ষা করা হয়। সময়মত কিছু করলে সেটা যে ফল দেবে, অসময়ে সেটা দুঃস্বপ্ন রূপে ধরা দেবে। অতএব, সাবধান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়