প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৫, ২১:৪১
‘জুলাই অভ্যুত্থান’ মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হচ্ছে

|আরো খবর
২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ এবার স্থান পেতে যাচ্ছে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ইতিহাস এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের বইগুলোতে এই ঘটনাবলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। ইত:মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে।সূত্র জানায়, চলতি বছর বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য বইয়ের কিছু অধ্যায়ে প্রাসঙ্গিকভাবে ‘জুলাই আন্দোলন’-এর প্রাথমিক দিকটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ্যবইয়ে এ অভ্যুত্থানকে একটি পৃথক ও ধারাবাহিক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এনসিটিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বর্তমানে আমাদের ইতিহাস বইগুলো মূলত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তবে সময়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার নীতিমালার আওতায় ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-কে সংযুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন প্রজন্ম যেন সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন হতে পারে, সে লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।”
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত এই অভ্যুত্থানকে বিশ্লেষকরা নতুন প্রজন্মের ‘প্রতিবাদ রাজনীতির’ এক যুগান্তকারী অধ্যায় হিসেবে দেখছেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা এ গণআন্দোলন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, টিএসসি, নীলক্ষেত এবং প্রেস ক্লাব এলাকা হয়ে ওঠে বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু। শিক্ষার্থীরা দুর্নীতি, রাজনৈতিক নিপীড়ন, শিক্ষা খাতে বৈষম্য এবং নাগরিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসে।
আন্দোলনটি এক পর্যায়ে গণজাগরণে রূপ নেয় এবং তৎকালীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে লক্ষাধিক মানুষ রাজপথে জড়ো হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এই অভ্যুত্থান চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।
শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের এটি ছিল সবচেয়ে বৃহৎ ও সংগঠিত ভূমিকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রও জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের পর পাঠ্যক্রম উন্নয়ন কমিটি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। সূত্র: সমকাল