প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১৩
ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ।। অভিযুক্তকে গণপিটুনি ও বাড়ি ভাংচুর

ফরিদগঞ্জে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মনির হোসেন (৪৫) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালককে তার স্ত্রীসহ আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় কিছু যুবক অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গণধোলাই দেয়। তবে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক মনির হোসেনের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং মনির হোসেন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রূপাকে আটক করে নিয়ে আসে। ঘটনাটি উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে ঘটে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, ধর্ষণের ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাতে মামলা দায়ের করে।
|আরো খবর
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার লাকসাম এলাকা থেকে বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নে এসে বসতি স্থাপন করে মনির হোসেন। সে এ পর্যন্ত দুটি বিয়ে করেছে। দুই স্ত্রীই কাছাকাছি দুই স্থানে থাকে। ঘটনাস্থলে মনির কয়েক বছর পূর্বে নতুন বাড়ি করে দ্বিতীয় স্ত্রী রূপা আক্তারকে নিয়ে বসবাস করে।
আত্মীয়তার সূত্র ধরে মনির হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী রূপার সাথে স্থানীয় মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েটির (১৩) সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে মনির হোসেন ও তার স্ত্রী রূপা আক্তার মেয়েটিকে নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ফিরে। রাতে বাড়ি ফিরলেও মেয়েটি তাদের ঘরেই থাকে।
সকালে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মনির হোসেনের বাড়ি ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে মনির হোসেনকে গণপিটুনি দেয় এবং তার বাড়িঘর ভাংচুর করে।
স্থানীয় আলাউদ্দিন, ফয়েজ বক্সসহ কয়েকজন জানান, বাড়ির পাশেই একটি খালে রাতে কিছু লোকজন পানি সেচ করার সময় মনির হোসেনের ঘর থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পায়। ভোর বেলা ওই মেয়েটিকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে, আবার পথিমধ্যে মনির হোসেন তাকে জোর করে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তাদের সন্দেহ হয়। এ সময় লোকজন জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানালে উত্তেজিত জনতা মনির হোসেনকে গণপিটুনি ও বাড়ি ভাংচুর করে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, আমরা মেয়েটির কাছে ওই রাতে তার সাথে কী কী হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। প্রথমে মেয়েটি সঠিকভাবে কিছু বলেনি। পরে তার বাবার উপস্থিতিতে আবারো তাকে জিজ্ঞাসা করলে মেয়েটি আমাদের কাছে স্বীকার করে তার সাথে মনির হোসেন খারাপ কাজ করেছে। দ্বিতীয়বার একই কাজ করতে চাইলে তার স্ত্রী তাকে বাধা দেয়। এ সময় মনির হোসেন তার স্ত্রীকে মারধর করে। তাছাড়া মেয়েটির মাথা ব্যথা উঠলে তাকে ঔষধ খেতে দেয়, সেটি খাওয়ার পর তার ঘুম চলে আসে বলে সে জানায়।
এদিকে সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং মনির হোসেন ও তার স্ত্রী রূপাকে আটক করে নিয়ে আসে। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি টিমও তাদের সহয়তা করে।
এদিকে একটি পক্ষ জানায়, মনির হোসেনের সাথে এ ঘটনা নিয়ে একটি পক্ষ দফারফা করতে চেয়েছিল। কিন্তু অংক না মিলায় তা হয়নি। তবে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার, মনির হোসেন এবং তার স্ত্রীকে আটক করেছি। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।