প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০
তাঁর নামে আরো কিছু চাই

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমাদের দেশটি ১১টি সেক্টরে বিভক্ত ছিলো। সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৮ জন। এঁদের মধ্যে দুজন হচ্ছেন চাঁদপুর জেলার কৃতী সন্তান। একজন মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, যিনি ১নং সেক্টরে জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। বর্তমানে তিনি হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি (চাঁদপুর-৫) আসনে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন। আরেকজন সেক্টর কমান্ডার হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মেজর (পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল) আবু ওসমান চৌধুরী, যিনি ৮নং সেক্টরে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন। তিনি বিজেএমসির চেয়ারম্যান ও চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপালনের সুযোগ পান। ফরিদগঞ্জ উপজেলার কৃতী সন্তান, বিশিষ্ট লেখক আবু ওসমান চৌধুরী ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ৮৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর স্বল্প সময় পূর্বে সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে। তাঁর নামে তাঁর জীবদ্দশায় চাঁদপুর পৌরসভা মহিলা কলেজ রোডের নাম পরিবর্তন করে লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী সড়ক নামকরণ করে এবং তাঁকে দিয়ে সড়কটির নামফলক উন্মোচন করে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর জন্যে বৃহদাকারে আয়োজন করা হয়নি কোনো নাগরিক শোকসভা। তবে স্মৃতি সংসদ এবং অতি সম্প্রতি পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে।
|আরো খবর
সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (৩ জুন) বিকেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে এই পাঠাগার উদ্বোধন করেন ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আমাদের নতুন প্রজন্ম যদি মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরীর বীরত্বগাথা জানতে পারে, তাহলে তারা আগামীর বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সক্ষম হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও আবু ওসমান চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি মোঃ সহিদ উল্যাহ তপদার।
আমাদের কাছে যে বিষয়টি অত্যন্ত ভালো লেগেছে, সেটি হচ্ছে আবু ওসমান চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারটি কোনো ঠুনকো জায়গায় না করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে করা হয়েছে। এর ফলে পাঠাগারটি টেকসই হবে, যথাযথ গুরুত্ব ও মর্যাদা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা এজন্যে পাঠাগারের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পাঠাগারটি কার্যকর এবং এর বহুল ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে অন্তত স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে পাঠাগারকেন্দ্রিক বইপাঠ ও রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনাসহ নানা কর্মসূচি পালন করতে হবে বলে মনে করি।