রবিবার, ১১ মে, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩, ০০:০০

আবারো পুলিশের অনেক বড়ো সাফল্য

আবারো পুলিশের অনেক বড়ো সাফল্য
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট বাজার সংলগ্ন এলাকা ও মঠখোলা, ফরক্কাবাদ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক অটোবাইক ও সিএনজি অটোরিকশা চুরির পর যখন সংশ্লিষ্ট চোরদের শনাক্ত করতে ও ধরতে পুলিশ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলছিলো, আর এতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চলছিলো হতাশা, তখন হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ অটোরিকশা চোর চক্রের আট সদস্যকে ধরে রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। অনেক বড়ো এই সাফল্যকে জানান দিতে তাই জেলা পুলিশের কর্ণধার পুলিশ সুপার আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করেছেন। এ প্রেস ব্রিফিং নিয়ে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ব্যানার হেডিংয়ে প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের বিশাল সাফল্য : আন্তঃবিভাগীয় সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের ৮ সদস্য আটক ॥ প্রাইভেটকারসহ চার গাড়ি জব্দ’।

সংবাদটিতে কামরুজ্জামান টুটুল লিখেছেন, চাঁদপুর জেলা পুলিশের জালে আটক হয়েছে আন্তঃবিভাগীয় সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের ভয়ঙ্কর ৮ সদস্য। এদের প্রত্যেকের বাড়ি সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায়। তাদের থেকে ৩টি সিএনজি অটোরিকশা ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় এবং হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের নির্ঘুম অভিযানে ঘটনার দুদিন এবং মামলা দায়েরের একদিনের মাথায় পুরো চোরচক্রকে আটক ও চিহ্নিত করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এই চক্রের আরো দুই সদস্য পলাতক রয়েছে। পুরো বিষয়ে বুধবার (৩১ মে) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে সংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার)। হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে এক চোরকে শনাক্ত করে তাকে আটকের পর পুরো টিমের ৮ সদস্যকে আটক করা হয়। এর পরপর সিএনজি চালিত ৩টি অটোরিকশা উদ্ধার এবং চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। আটককৃতদের সবার বাড়ি সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলায়। এরা দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরির কাজ করতো। মালামাল উদ্ধারসহ চোর চক্রকে সিলেটে গিয়ে আটকের অভিযানে মূল নেতৃত্ব দেন হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পুলিশকে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়েছে।

আসামীদের আটকে নিরবচ্ছিন্ন কাজ করেন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মিজবাহুল আলম, সুফল চন্দ্র সিংহ, পলাশ মজুমদারসহ সঙ্গীয় ফোর্স। ২৬ মে হাজীগঞ্জের দক্ষিণ রায়চোঁ গ্রামের মোঃ শরীফ হোসেনের একটি সিএনজি অটোরিকশা চুরির ঘটনার সূত্র ধরে এই চোরচক্র আটক এবং গাড়ি জব্দ হয়। আসামী চোর সজলু (পলাতক) ও উষার আলী (পলাতক) সিএনজি অটোরিকশা চুরি করার উদ্দেশ্যে হাজীগঞ্জ বাজারসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় এসে অবস্থান করে বিভিন্নস্থান রেকি করে বেড়াতো। রেকি করা শেষে ঊষার আলী হাজীগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করে। এর মধ্যে গত ২৫ মে চোর সজলু হাজীগঞ্জ হতে সিলেটে চলে যায়। সজলু সিলেটে গিয়ে তার অপর সহযোগী আনহার আলী, নজরুল, সোহানসহ অন্যরা একটি প্রাইভেটকার (জব্দকৃত) নিয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অবস্থান নেয়। এরই মধ্যে চোর সজলু অপর সহযোগী বিল্লালকে খবর দিয়ে সিলেট থেকে নিয়ে আসে। এরপরেই এরা সবাই কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে একত্রে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ বিশ্বরোড চৌরাস্তায় চলে আসে। এখানে এসে সজলু প্রাইভেটকার থেকে নেমে যায় এবং আগে থেকে হাজীগঞ্জে থাকা ঊষার আলীসহ পূর্বে রেকি মোতাবেক উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিণ রায়চোঁ এলাকায় চলে যায়। এদিকে প্রাইভেটকারে থাকা অপর চার সহযোগী প্রাইভেটকারটি নিয়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরের দিন ২৬মে তারা হাজীগঞ্জ বাজার এলাকা তিনবার রেকি করে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে মান্নান গ্যাস পাম্পে চলে আসে। এখানে এদিন রাত প্রায় দেড়টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে আসামী আনহার আলীর কাছে পৌঁছে দেয়া হয়, যা চালিয়ে সিলেটে নিয়ে যাবার জন্যে বলা হয়। সিলেটে যাওয়ার পথে সিএনজিসহ হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক হয় আনহার আলী। মূলত আনহার আলীর দেয়া তথ্য মতে পুরো ঘটনা, অন্য সকল সিএনজি জব্দ ও অন্য আসামীদের সিলেট হতে আটক করতে সমর্থ হয় হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।

ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ শিশু সোহান হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে শুধু ফরিদগঞ্জ উপজেলা নয়, পুরো চাঁদপুর জেলায় আলোড়ন সৃষ্টির পর সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের আট সদস্যকে আটক ও প্রাইভেট কারসহ চারটি সিএনজি উদ্ধারে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সাফল্য চাঁদপুরসহ সন্নিহিত জেলাগুলোতে চাঞ্চল্য সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে। এজন্যে অবশ্যই হাজীগঞ্জ থানার চৌকস ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জোবাইর সৈয়দসহ তার সংশ্লিষ্ট সহকর্মীদেরকে সাধুবাদ ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। নিঃসন্দেহে এ সাফল্য আশাব্যঞ্জক ও অনেক বেশি প্রশংসনীয়। এ সাফল্যের পেছনে পুলিশ সুপার ও হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনা ও তদারকি ছিলো অসামান্য। হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের এই সাফল্যে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস, বিশেষ করে প্রত্যাশা অনেক বাড়বে বলে আমাদের ধারণা। এই প্রত্যাশা পূরণে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ বিভিন্ন মামলা ও ঘটনার তদন্তে বারবার সাফল্যের সন্ধান পাক--আমরা নিরন্তর সে কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়