প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৮
চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গণশৌচাগার নেই কেন?

‘খোলা জায়গায় মসজিদের পাশে কেনো এমনটা!’-এটি গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ছবি সম্বলিত একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনের শিরোনাম। এতে লেখা হয়েছে, মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর ইবাদতের স্থান, শ্রেষ্ঠতম পবিত্র জায়গা। সেই পবিত্র জায়গার আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। কিন্তু চাঁদপুর শহরের বাইতুল আমিন জামে মসজিদ এবং বাইতুল আমিন রেলওয়ে মডেল মাদ্রাসার পাশেই ময়লা আবর্জনার ভাগাড় এবং প্রস্রাবের জায়গা। অথচ এই স্থানটি শহরের প্রাণকেন্দ্র, যাকে ‘হার্ট অব দ্যা টাউন’ বলা হয়। মসজিদটিও চাঁদপুর শহরের মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত। এমন একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদের পাশেই কেনো এই চিত্র? এটি সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। সচেতন মানুষমাত্রই বলছেন, মসজিদের পাশে কেনো এ রকম নোংরা কাজ করবে-উন্মুক্তভাবে প্রস্রাব করা, ময়লা ফেলা! এতে রাস্তাঘাট-মসজিদ-মাদ্রাসার সৌন্দর্য নষ্ট ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পাশেই একটি পুকুর আছে। পুকুরে মাছ চাষ করা হয়। সেই পানিতে ময়লা ও প্রস্রাবের পানি গিয়ে পড়ে। দ্রুত এ রকম পরিবেশগত জঘন্য কদাচার দূর করতে সচেতন মহল দাবি জানিয়েছেন।
আমরা মনে করি, এ কদাচার বন্ধের জন্যে চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গণশৌচাগার বা পাবলিক টয়লেট স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সদ্য সাবেক শপথ চত্বর বর্তমান বাইতুল আমিন চত্বরের কাছাকাছি পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার মালিকানাধীন কোনো জায়গা নেই। এই মোড়ের নিকটবর্তী স্থানে চাঁদপুর কোর্ট স্টেশনের পূর্বাংশে রেলওয়ের পর্যাপ্ত পরিত্যক্ত জায়গা আছে, যেখানে ইজারার মাধ্যমে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা যায়। এজন্যে চাঁদপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের আবশ্যকতা রয়েছে। এ বিষয়টি এ সম্পাদকীয় নিবন্ধ আমরা এর আগেও উল্লেখ করেছি। ব্যক্তিগতভাবে পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়রকেও কেউ কেউ এ বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি সে তাগিদে সাড়া দেননি। রেল কর্তৃপক্ষ যদি চাঁদপুর কোর্ট স্টেশনে পৌরসভাকে জায়গা ইজারা দিতে রাজি না হয়, তাহলে লাকসাম, আখাউড়াসহ বিভিন্ন স্টেশনের মতো নিজেদের উদ্যোগে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে লীজ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চালাতে পারে। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসন বা পৌরসভার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে উৎসাহিত করতে হবে। চাঁদপুর পৌরসভার সচেতন নাগরিকবৃন্দের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেয়া যায়। এতে জেলা প্রশাসনও জেলা সদরস্থ চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ের পরিবেশগত অবস্থার উন্নয়নে কিছু একটা করার ব্যাপারে দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন করতে পারে, যেমনটি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের ব্যাপারে করে ইতোমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
আমরা মনে করি, সরকারের এক বিভাগের আরেক বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে একটি এলাকায় অভাবনীয় উন্নয়ন করা সম্ভব। কিন্তু এ সমন্বয় ও বৈঠক করার ক্ষেত্রে যে কষ্ট বা তদবির করতে হয়, সেটা করার মতো লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। আমলাদের মধ্যে কেউ আন্তরিক হলেও বদলি সেক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ বাধা কাটানো যায়, যদি ওই আমলার বদলির পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত আমলা পূর্বসূরির কাজের পরম্পরা ধরে রাখেন। তিক্ত হলেও সত্য, এমন উদার আমলা আতশী কাচ দিয়ে খুঁজে পেতেও কষ্ট হয়।