রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯:২২

মতলবে দক্ষিণে ভূমিদস্যু মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

এমএ গাফফার
মতলবে দক্ষিণে ভূমিদস্যু মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে  এলাকাবাসীর মানববন্ধন

মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৩নং খাদেরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মনিরুজ্জামান বেপারীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি খাল দখল ও মিথ্যা মামলায় এলাকাবাসীকে হয়রানির অভিযোগে শনিবার (২৩ আগস্ট ২০২৫) সকাল ১১ টায় খাদেরগাঁও ইউনিয়নের গড়েভাঙা গ্রামের বেপারী বাড়ির সামনে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।

জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৩নং খাদেরগাঁও গড়েভাঙা গ্রামের পুটিয়া থেকে খাদেরগাঁও বাজার হয়ে ধনাগোদা নদীর সাথে সংযুক্ত খালটির পানি দিয়েই ইউনিয়নের কৃষিকাজের পানি সরবরাহ হয়। কিন্তু মনিরুজ্জামান বেপারী কবরস্থানের নামে খালের অর্ধেক অংশ ভরাট করে দখলে নেয়। খালের মাঝ বরাবর বাঁধ দিয়ে ভরাট কাজ করলে এলাকার কৃষক সহ সাধারণ মানুষ বাধা প্রদান করে। কিন্তু তিনি তাদের বাধা উপেক্ষা করে নিজের খামখেয়ালিভাবে ভরাট কাজ চলমান রাখেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও এলাকাবাসীর পক্ষে গত ১ জুন ২০২৫ তারিখে মতলব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর মো. হালিম তালুকদার (পিতা মৃত মোজাফফর হোসেন তালুকদার) বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগটি তদন্তের জন্যে এসি ল্যান্ড জাবেদ আহম্মেদ পাটোয়ারীকে নির্দেশ দিলে তিনি নায়েরগাঁও ভূমি কর্মকর্তা দীপক সাহাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে খাল দখলের সত্যতা পেয়ে দখলদার মনিরুজ্জামানকে তার বাঁধ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি তাতে কোনো কর্ণপাত না করে কাজ চালিয়ে যান। পরে তহশীলদার একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধ সরিয়ে নিতে দখলদারকে সময় দিলেও তিনি তা সরিয়ে নেননি। নায়েরগাঁও ভূমি কর্মকর্তা এসি ল্যান্ডকে বিষয়টি অবগত করলে ১৮ জুন ২০২৫ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন এসি ল্যান্ড নিজেই। তখন দখলদার মনিরুজ্জামানকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচশত টাকা জরিমানা করেন। কারাবরণ শেষে দখলদার মনিরুজ্জামান এলাকায় এসে অভিযোগকারী ও খাল দখলে বাধা প্রদানকারীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেন। গত ১৪-০৮-২০২৫ তারিখে ৫৫৭-২০২৫ মোকাম বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চাঁদপুর-এ ১০৭-১১৭ (সি) ধারায় মো. জসিম প্রধান (পিতা মৃত হাবিবুল্লাহ প্রধান) কে ১নং আসামি করে মোট ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো চার-পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

২৪ শে জুন ২০২৫ মনিরুজ্জামান জেল থেকে বের হয়ে আসার পর দখলকৃত সরকারি খালের জায়গা না ছেড়ে উল্টো এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় নিজের দোষ ধামাচাপা দিতে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেন। অথচ মামলার বিবরণীতে লিপিবদ্ধ করেছেন ঘটনার সূত্রপাত হলো ১০ জুন সকাল ১০ টার সময় ও ১৫ জুন সকাল ১১ টার সময়। এখানেও ছলচাতুরি রয়েছে। তাছাড়া মামলার প্রধান সাক্ষী ঢাকা গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান মনিরুজ্জামানের আপন ভাগিনা, যে কিনা বাড়িতে থাকে না। তাছাড়া বাকি সাক্ষীরা গড়েভাঙা গ্রামের না, পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা।

শনিবার মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, মনিরুজ্জামান ফ্যাস্টিটের দোসর। মানব বন্ধনে নেতৃত্ব দেন ইফতেকার আহাম্মেদ (পিতা মৃত জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার), কাজল তালুকদার (পিতা মোজাফ্ফর তালুকদার), শাহাজালাল তালুকদার (পিতা আবুল হোসেন তালুকদার), মহসিন প্রধান, জসিম প্রধান ও মো. তাফাজ্জল হোসেন, শাহ আলম তালুকদার, হান্নান প্রধান নাছির প্রধান, রেজাউল করিম, আনোয়ার হোসেন, মো. সয়ন, আরিফ, সিয়াম, হাওয়া বেগম, মিনু আক্তার, রেজিয়া পারবিন, সুলতানা আক্তার, আছমা বেগম, লাইলুন নাহার, খোদেজা বেগমসহ শত শত এলাকাবাসী। মানব বন্ধনে বক্তারা দখলকৃত সরকারি খাল মুক্ত করা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন, পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সহ পুলিশ সুপারের সু দৃষ্টি কামনা করেন, একই সাথে ন্যায় বিচার দাবি করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়