প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০১
এতোটা ভালোর পর কী হবে?

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চঁাদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমানের মানবসেবা এবং রোগীবান্ধব মানসিকতায় হাসপাতালটিতে সুযোগ সুবিধা এবং সেবার মান বাড়ছে। তত্ত্বাবধায়ক মহোদয় রোগীদের সেবার মান কীভাবে বাড়াবেন সেটা নিয়েই সবসময় ভাবেন। তার প্রমাণ পাওয়া গেলো হাসপাতালের অপারেশনের রোগীদের জন্যে পোস্ট অপারেটিভ সেবা চালু করার মধ্য দিয়ে । এই সার্ভিসটি দু মাস হলো হাসপাতালে চালু করা হয়েছে। অপারেশন থিয়েটার ব্লকের ভেতর ঢুকতেই এই পোস্ট অপারেটিভ রুম। ১১ শয্যার এই রুমটি টাইলস এবং একাধিক এসি দিয়ে যেভাবে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে, যা দেখলে কোনোভাবেই সরকারি হাসপাতালের (সচরাচর অবহেলিত যা দেখা যায়) পরিবেশ বা এমন সেবার সুযোগ মনে হবে না। তত্ত্বাবধায়ক জানান, যে কোনো জটিল অপারেশনের রোগীর অপারেশন করার পর ২৪ ঘণ্টা তার জন্যে ক্রিটিক্যাল সময়। এ সময়টাতে রোগীকে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা দরকার। সে প্রয়োজন অনুভব থেকেই নিজ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করে এখানে অপারেশনের রোগীদের জন্যে পোস্ট অপারেটিভ রুম তৈরি করেছি। যতোটুকু সম্ভব এটাকে আধুনিকায়ন করেছি। এখানে ২৪ ঘণ্টা জটিল অপারেশন রোগীকে রাখা হয়। তারা চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকেন। বুধবার (২ জুলাই ২০২৫) এই পোস্ট অপারেটিভ রুমে গিয়ে দেখা গেলো, পঁাচজন অপারেশন রোগী রয়েছে এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া হচ্ছে। এমন সেবায় রোগী এবং রোগীর স্বজনরা সন্তুষ্ট।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চঁাদপুর জেনারেল হাসপাতালের অতীত ইতিহাস ভালো নয়। এই হাসপাতালটি যতোটা না সমস্যায় আক্রান্ত ছিলো, তারচে’ বেশি আক্রান্ত থাকতো অতীতের তত্ত্বাবধায়করা। সেজন্যে বারবার নেতিবাচক সংবাদের উপজীব্য হয়েছেন। আজ থেকে আড়াই বছর আগে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক যখন যোগদান করেন, তখন তিনি সমস্যার পাহাড়েই যেন আরোহন করেন। সেজন্যে তিনিও সংবাদের উপজীব্য হয়েছেন, তবে নেতিবাচক নয় ইতিবাচক মানসিকতা প্রদর্শন করে হাসপাতালটিকে ক্রমশ সমস্যা ও অনিয়ম মুক্ত করার ধারাবাহিক প্রয়াস চালিয়েছেন। এক্ষেত্রে শতভাগ সফল বললে অত্যুক্তি হবে। তারপরও আমাদের প্রমাণসাপেক্ষ পর্যালোচনায় তিনি এই হাসপাতালের স্মরণকালের সেরা তত্ত্বাবধায়কের তকমা পাওয়ার উপযোগিতা অর্জন করেছেন। যদিও তিনি নানা সীমাবদ্ধতা ও অদৃশ্য চাপে তঁার কিছু সহকর্মীকে কর্মস্থলে যথাসময়ে আসা ও যাওয়া নিশ্চিত করতে পারেন নি এবং হাসপাতালে কর্মকালীন অবস্থায় নিকটবর্তী প্যাথলজি/ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়া থেকে পুরোপুরি বিরত করাতে পারেন নি। তঁার বড়ো গুণ ঠাণ্ডা মাথায় ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা। তিনি স্বীয় মেধায় সকল রিসোর্সকে কাজে লাগিয়ে হাসপাতালটিকে দেশের অন্যান্য জেলা সদরস্থ একই মানের হাসপাতাল থেকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছেন, যেটা পর্যবেক্ষক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণকারীদের অভিমত। সকল আলোচনা-সমালোচনার পর এটা অকপটে বলা যায় যে, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক অনেক ভালো। তঁার বদলি ও পদোন্নতি দুটোই কিন্তু তঁাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সেজন্যে আশঙ্কা, তারপর যিনি আসবেন, তিনি কি তঁার মতো হবেন, না তারচে’ বেশি ভালো হবেন? আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা যাতে অন্তত বিদ্যমান থাকে কিংবা তারচে’ ভালো হয় সে বিষয়ে সুবিবেচনা আগাম মাথায় রাখার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।