রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের জয়ে সিরিজে সমতা আনলো বাংলাদেশ

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪৮

প্রার্থীদের সমর্থকদের প্রচারণার নামে কৃত্রিম জট, প্রচণ্ড ভিড়, ভোটগ্রহণ ধীর গতি : লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত

রায়পুর বণিক সমিতির ভোটের ফলাফলে অপ্রত্যাশিত চমকের শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
রায়পুর বণিক সমিতির ভোটের ফলাফলে অপ্রত্যাশিত চমকের শঙ্কা

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি।। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন ঘিরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেলো। কিন্তু ভোটের দিনটাই অনেকটা ম্লান হয়ে গেলো তীব্র যানজট, ভোটের ধীরগতি ও বৃষ্টির কারণে। সকাল ১০টা থেকেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর ভোট দিতে পারছেন অনেকে। ফলে বিপুল আগ্রহ নিয়েও অনেক ভোটার হতাশ হয়ে ভোটকেন্দ্র ত্যাগও করছেন। ভোটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে আগে যে ধারণা ছিল, আজকের পরিস্থিতি তাতে কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকেই বলছেন, অর্ধেকের বেশি ভোট না পড়লে নির্বাচনের ফলাফল বিস্ময়কর হয়ে যেতে পারে। সন্ধায় জানা গেলো শতকরা ৯৮ ভাগ ভোট কাস্টিং হয়েছে। এখনও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।

এ সময় ভোটারদের ভিড়ে বাজারের মূল সড়ক এবং অলিগলি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। গাড়িঘোড়া চলাচল তো দূরের কথা, মানুষের হাঁটাও দায় হয়ে যায়। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে একদিকে লম্বা লাইন, বাইরে আবার প্রচারণার নামে প্রার্থীদের লোকজনের জটলা—সব মিলে সুষ্ঠু ভোটযজ্ঞে ছেদ ফেলেছে। ভোটারদের অভিজ্ঞতা : কেউ ৪৫ মিনিট, কেউ পাঁচ মিনিট আলো ঔষধালয়ের প্রোপাইটর মানিক কবিরাজ দুপুর আড়াইটার দিকে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বের হতে পেরেছেন প্রায় ৪৫ মিনিট পর। তিনি বলেন, ‘ভোটের জন্য এমন দীর্ঘ লাইন কখনও দেখিনি। বুথে পৌঁছাতে বেশ সময় লেগেছে। বাইরে প্রচণ্ড ভিড় আর গরমে কষ্ট পেতে হয়েছে।’

অন্যদিকে আলম ফার্নিচারের মালিক মো. আলমের অভিজ্ঞতা একেবারে ভিন্ন। তিনি বিকেল তিনটার দিকে ভোট দিয়ে বের হয়েছেন মাত্র পাঁচ মিনিটেই। তিনি বলেন, ‘ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে মনে হচ্ছে, অনেক প্রার্থীর লোকজন কৃত্রিম ভিড় তৈরি করে প্রচারণা চালাচ্ছে।’ ভোটের ধীরগতি আর যানজটে হতাশা রিটার্নিং অফিসার রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম অবশ্য বলছেন, ‘ভোট চলছে শান্তিপূর্ণভাবে। নিরাপত্তা, সিসি ক্যামেরা মনিটরিংসহ সব ব্যবস্থা নেওয়া আছে। তবে ভোটারের ভিড় বেশি হওয়ায় লাইনে কিছুটা সময় লাগছে।’

ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রার্থীদের সমর্থকেরা প্রচারণার নামে কৃত্রিম জট তৈরি করায় প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে ভোটগ্রহণ ধীর গতিতে হচ্ছে। অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অপ্রত্যাশিত ফলাফলের শঙ্কা এদিকে, আজকের পত্রিকার সাংবাদিক মাহবুবুল আলম মিন্টু জানান, সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ভোটের গতি ভাল ছিলো। দুপুর দুইটার পর যে গতি, তাতে বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র রায়পুর বাজার বণিক সমিতির ১ হাজার ৬২৫ ভোটারের মধ্যে প্রায় ১৩০০ জনের বেশি ভোট পড়ার কম পড়েছে। তিনি বলেন, ‘সকালে ভোট পড়ার হারছিল হতাশাজনক। কিন্তু দুপুরের পর ভিড় এবং যানজটে ভোটারদের অনেকেই ফিরছেন। এতে ভোটের হিসাবনিকাশ একেবারে পাল্টে যেতে পারে। অপ্রত্যাশিত ফলাফলও হতে পারে।' বিল্লাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভোটারদের যে উৎসাহ আমরা একদিন আগেও দেখেছি, ১৫০০ ভোট পড়েছে। এতে হেরে যাওয়া প্রার্থী হয়তো ফলাফল নিয়ে অভিযোগ তুলতে পারেন।’

সব মিলিয়ে, রায়পুর বাজার বণিক সমিতির নির্বাচন যে ভোটারদের আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছিল, আজকের ভোগান্তি সেই আস্থা কিছুটা হলেও নড়বড়ে করে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়—দিনশেষে কত ভোট পড়ে এবং ফলাফল কোন দিকে যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়