মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   উত্তরায় স্কুল ভবনে বিমান বিধ্বস্ত, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  •   উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১৯, জানালো ফায়ার সার্ভিস
  •   উত্তরায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
  •   চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
  •   রোগীর চাপে বেসামাল চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল!

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ২১:৩০

ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লক্ষাধিক টাকার চাঁদাবাজি!

শিক্ষকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ

কবির হোসেন মিজি
ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিতে  প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির লক্ষাধিক টাকার  চাঁদাবাজি!

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চার দফা দাবিতে ঢাকায় মহাসমাবেশে অংশ নিতে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তত ১২০০ শিক্ষকের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ১০০ টাকা করে এই চাঁদা তোলা হয়েছে। এভাবে সর্বমোট ১২শ' শিক্ষকের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়, যা নিয়ে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষকদের মাঝে।

জানা গেছে, এই চাঁদা তোলার নির্দেশ দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গিয়াস কবির ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাসেম। টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সমিতির সদস্য মাহবুব, সাইফুল, ফারুক, তাহমিনা, কাসেম এবং সেক্রেটারী হাসেম।

অভিযোগ রয়েছে, চাঁদা না দিতে চাওয়া এক শিক্ষককে প্রকাশ্যে অপমানজনক ও খারাপ আচরণের শিকার হতে হয় সাধারণ সম্পাদক হাসেমের হাতে।

শিক্ষকদের অনেকেই বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় গিয়ে সমাবেশে অংশ নিতে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয় না। অথচ সমিতির নেতারা অযৌক্তিকভাবে এই টাকা তুলেছেন। এছাড়া সমাবেশেও সকল শিক্ষক অংশগ্রহণ করেননি। তারা মাত্র ২০/২৫ জন অংশ নিতে যান। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, ঢাকায় যেতে তো এতো টাকা খরচ হয়নি। তাছাড়া পূর্বে এসব অনুষ্ঠানভিত্তিক খরচ সমিতি বহন করেছে। সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ সেই নিয়ম ভেঙ্গে অনিয়ম করে এমন চাঁদাবাজি করায় শিক্ষক মহলে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের জোর করে চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়েছে। এমনকি ১০০ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় আমাদের এক শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে।

এদিকে এই সংবাদের আলোকে বক্তব্য নিতে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমকে কল করার পর থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, শহরের একটি স্কুলের যে সকল শিক্ষক সমাবেশে যায়নি, সেই স্কুলের শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষকের কাছ থেকে জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মাসিক মিটিংয়ে এসব চাঁদা তোলার বিষয়েও অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষক সমাজের দাবি, এ ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গিয়াস কবিরের মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল দিলে বার বার বন্ধ পাওয়া যায়। সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেমের সাথে কথা হলে তিনি প্রথমে অনেকটা উত্তেজিত হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আপনাকে কি কেউ অভিযোগ দিয়েছে? পরে চাঁদা উঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা টাকা উঠিয়েছি ঠিক, তবে সব স্কুলের শিক্ষক দেয়নি। আমরা ৪০/৫০ জনের মতো ঢাকায় সমাবেশে গিয়েছি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রায় সব কটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক ১০০ টাকা করে চাঁদা উঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভবরঞ্জন দাস বলেন, এভাবে শিক্ষকদের কাছে টাকা উঠানো কোনো নিয়মের মধ্যেই পড়ে না। তাছাড়া এ বিষয়ে আমাকে কোনো শিক্ষক বা ডিপার্টমেন্টের কেউ অবগত করেননি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়