তারা একসময় ছিলো হিন্দুস্তানের দালাল, পরে হয়েছে পাকিস্তানের দালাল .........অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম

সারাদেশে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টার প্রতিবাদে চাঁদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চাঁদপুর জেলা শাখা এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

বিকেল তিনটার পর থেকেই বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জড়ো হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের জোড়পুকুর পাড়, কালীবাড়ি মোড়, বাইতুল আমিন চত্বর, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, নতুন বাজার হয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ করে ।

প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম। তিনি বলেন, দেশের মজলুম জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্যাতিত নিষ্পেষিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে জালেম সরকারের শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বাংলার মাটিতে তার ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আমরা কী দেখতে পাচ্ছি! দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং দলের বিরুদ্ধে কুৎসা, মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল। তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। আজকে একটি কঠিন শপথ নিয়ে আপনারা এখানে হাজির হয়েছেন। একটি মহল আমাদের নেতা-নেত্রী সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখছে। তারা কে, তাদের সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। তারা একসময় ছিলো হিন্দুস্তানের দালাল, পরে হয়েছে পাকিস্তানের দালাল। বিএনপি কখনো কারো দালালি করে না। তারা চায় বাংলার মাটিতে হিন্দুস্তানের পতাকা উড়াতে, আরেক পক্ষ চায় পাকিস্তানের পতাকা উড়াতে। আমাদের দল চায় স্বাধীন বাংলার মাটিতে লাল সবুজের পতাকা উড়বেই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর ডাকে এদেশের মানুষ যখন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, সে সময় এই জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজম পাকিস্তানে ছিলো। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী এখন বেহেস্তের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। জামায়াতের আমির নাকি জিন্দা ওলি। আমরা সবাই বেহেস্তে যেতে চাই। কিন্তু কাউকে ভোট দিলে আমরা বেহেস্তে যাবো এ কথা কি আমরা বিশ্বাস করতে পারি? পারি না।তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করেছেন তার চেয়ে কঠিন আন্দোলন সামনে অপেক্ষমান। আমরা জালিমের বিরুদ্ধে থাকবো এবং মজলুমের পক্ষে থাকবো। আর রাজনৈতিকভাবে তারেক রহমানের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল। তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, আবারো আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। বিএনপির প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যারা বিএনপির পরিবারে আছি, আমাদের সকল আত্মীয়-স্বজনকে বিএনপির সদস্যে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ বিএনপি ও সকল জাতীয়তাবাদী চেতনার শক্তি এক হয়ে আমরা নির্বাচন করবো। সেই নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। আর আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে মাঠে ময়দানে যিনি আমাদের আগলে রেখেছেন, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে আমরা চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে ইনশাল্লাহ জয়লাভ করবো। তিনি শ্রমিক মেহনতি জনগণকে বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তার হোসেন মাঝি ।

চাঁদপুর জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাদলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় শ্রমিক দল নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব আলম ছৈয়াল, সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি নয়ন মাহমুদ ভূঁইয়া, পৌর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম (কালু) ছৈয়াল, ফরিদগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আজিম খান, মতলব উত্তর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল মালেক, ছেঙ্গারচর পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল আজিজ, রেলওয়ে শ্রমিক দলের সভাপতি মারুফ হোসেন, শাহরাস্তি উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মানিক হোসেন, হাজীগঞ্জ পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, শাহরাস্তি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাচ্চু মিয়া ও হাইমচর উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন স্বপন।

ছবি ক্যাপশন : চাঁদপুরে জেলা শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করছে। পাশে মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিম।