রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:২৮

যাত্রী অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা

সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজটের ভোগান্তি লাঘবের চিত্র নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরার দাবি

বিশেষ সংবাদদাতা
সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজটের ভোগান্তি লাঘবের চিত্র নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরার দাবি

সড়কে দুর্ঘটনায় প্রতিবছর হাজারো মানুষের প্রাণহানি কমাতে উন্নত গণপরিবহন নামানোর মধ্য দিয়ে যানজটের ভোগান্তি লাঘবের পরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরার জন্যে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলসমূহের কাছে দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে নগরীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে যাত্রী অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি তুলে ধরে বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত ১১ বছরে ৬২ হাজার ৬১৯ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮৬ হাজার ৬৯০ জন নিহত, ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫৭ জন আহত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে অসহনীয় যানজটে প্রতিদিন কেবল রাজধানীতে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যার আর্থিক ক্ষতি ৯৮ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি অপচয় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ যানজটে সময় ও আর্থিক ক্ষতি হিসেবে আসলেও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত ক্ষতি কয়েক গুণ বেশি। দীর্ঘক্ষণ যানজটে পড়ে নাগরিকদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে ও উদ্বেগ বাড়ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুস ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও প্রজননতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজধানীতে যানজটের তীব্রতা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। মারাত্মকভাবে শব্দ ও বায়ুদূষণও হচ্ছে। এতে যাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। নিয়মিত যানজটের বিরক্তি থেকে মানুষের সংসার ভাঙ্গার ঝুঁকি বাড়ে ৫০ শতাংশ। শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশ এবং স্নায়বিক ক্ষতির অন্যতম কারণও অতিরিক্ত যানজট বলে মনে করেন তারা। বর্তমানে টিনএজদের বিপদগামিতা যানজট ও বেকারত্বের কারণ বলে মনে করেন অনেকেই। তিনি আরো বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা, যানজট ও বিশৃঙ্খলা রোধে ২০১৮ সালে প্রণীত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নে যাত্রী ও নাগরিক সমাজের মতামত উপেক্ষা করায় এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারেনি। উন্নত গণপরিবহনের অভাবে দেশে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, অটোরিক্সার মতো ছোট ছোট যানবাহন দেশের প্রধান বাহনে পরিণত হয়েছে। ৫৬ শতাংশ মানুষ বাধ্য হয়ে প্রাইভেট পরিবহন ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের পরিবহনে দুর্নীতি ও ভুলনীতির ফলে যানজট এখন নগর, বন্দর পেরিয়ে গ্রামেগঞ্জেও সম্প্রসারিত হয়েছে। হাজারো ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার সড়ক সেক্টরে সংস্কারের কোনো কার্যক্রম হাতে নেয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে সড়কে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি বন্ধ করা ও যানজটের ভোগান্তি লাঘবের কৌশল থেকে স্ব স্ব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অর্ন্তভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দীপক রায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সংগঠনের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ রফিকুজ্জামান, সিনিয়র সদস্য সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মো. ইয়াসিন চৌধুরী, মো. বিল্লাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়