প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫৬
পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড
'কিসাস চাই'!
কিসাস’ পদ্ধতিতে সোহাগের হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে ঝালকাঠির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ!

রাজধানীর পুরান ঢাকায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন-এর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ‘কিসাস চাই’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঝালকাঠি। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ দুপুরে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
|আরো খবর
মিছিলটি শহরের টাউন হল মোড় থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার চত্বর, ঝালকাঠি প্রেসক্লাব, ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত গিয়ে এক মানববন্ধনে রূপ নেয়। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও সচেতন নাগরিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, যুব সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
“সোহাগ শুধু একজন ব্যবসায়ী নয়, সে আমাদের মতো একজন সাধারণ মানুষ। তার রক্ত বৃথা যেতে পারে না। কিসাস না হলে এমন ঘটনা থামবে না।” — মানববন্ধনে এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য
কী ঘটেছিল সোহাগের সঙ্গে?
গত ৬ জুলাই রাতে রাজধানীর লালবাগের চাঁনখারপুল এলাকায় সোহাগকে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয় চাঁদাবাজ ও ভাঙারি সিন্ডিকেটের সদস্যরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভাঙারি ব্যবসায় মুনাফা থেকে নিয়মিত চাঁদা না দেওয়ায় তাকে খুন করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একদল যুবক সোহাগকে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করছে।
পরিবারের অভিযোগ, পূর্ব পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া রয়েছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে আটক করলেও মূল হোতারা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ঝালকাঠির শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ও দাবি
শিক্ষার্থীদের দাবি:
- সোহাগ হত্যার দ্রুত বিচার
- হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি—"কিসাস"
- সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনা
- সোহাগের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান
“সোহাগ হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।” — বিক্ষোভে এক শিক্ষার্থীর দৃপ্ত ঘোষণা
প্রতিবাদে যেসব প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
- ঝালকাঠি সরকারি কলেজ
- ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- মোহাম্মদিয়া আলিয়া মাদ্রাসা
- স্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, “ছাত্রদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানাবো। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার দ্রুত সম্পন্ন হওয়া জরুরি।”
'সোহাগ হত্যার বিচার' সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল
এই আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক, টিকটক ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এ। হ্যাশট্যাগ #JusticeForSohag, #KisasChai, ও #StopSyndicate ব্যবহার করে হাজারো মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সোহাগ হত্যাকাণ্ড এখন আর শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় বিচারহীনতার বিরুদ্ধে সারাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতিরোধের প্রতীক। ‘কিসাস’ শুধু সোহাগের জন্য নয়, বরং প্রতিটি ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে একটি ন্যায়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ