|আরো খবর
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পরিণতি: ভারতে ২৭টি বিমানবন্দর বন্ধ, বাতিল শত শত ফ্লাইট
ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পরিণতিতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিমান চলাচল বিঘ্ন। নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার ইতোমধ্যে উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারতের অন্তত ২৭টি বিমানবন্দরে বেসামরিক ফ্লাইট স্থগিত করেছে, যা ১০ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর ফলে ৪৩০টিরও বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ।সামরিক অভিযানের পটভূমি
৭ মে রাতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত নয়টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি লক্ষ্য করে একযোগে বিমান ও ড্রোন হামলা চালায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী একে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নাম দেয়।
বন্ধ হওয়া বিমানবন্দরসমূহ
নিরাপত্তাজনিত কারণে যেসব বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- শ্রীনগর
- জম্মু
- লেহ
- ধারমশালা
- আমৃতসর
- জোধপুর
- ভুজ
- জামনগর
- চণ্ডীগড়
- রাজকোট
(মোট ২৭টি বিমানবন্দর, সম্পূর্ণ তালিকা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত)
ফ্লাইট বাতিল ও পরিবর্তন
ভারতের শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন সংস্থাগুলো— ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট, আকাসা এয়ার— সবকটিই তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটের বড় একটি অংশ বাতিল বা পুনঃনির্ধারণ করেছে। শুধু ইন্ডিগো একাই ১৬৫টি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান আকাশসীমা আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়, ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোকেও বিকল্প রুট নিতে হচ্ছে। কাতার এয়ারওয়েজ তাদের পাকিস্তান রুট সাময়িক বন্ধ করেছে এবং তুর্কি এয়ারলাইনস, এমিরেটস, ফ্লাইদুবাই-এর মতো সংস্থাগুলো বিকল্প এয়ারস্পেস ব্যবহার করছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগ
দেশজুড়ে যাত্রীরা ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিমানবন্দরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন। সামাজিক মাধ্যমে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিমান সংস্থাগুলো যাত্রীদের রিফান্ড ও পুনঃনির্ধারণের সুবিধা দিলেও তা অনেকক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থে এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপকে রাজনৈতিক মহল প্রশংসা করলেও, এর ফলে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ ও অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— "বেসামরিক অবকাঠামো এতটা ক্ষতিগ্রস্ত করে কি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা যায়?"
‘অপারেশন সিন্দুর’ ভারতের এক অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দৃঢ় অবস্থানের প্রতীক হলেও, এর অভিঘাত এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে। বিমান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।