প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৫, ২১:৫৭
টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়ে বাইসাইকেল পেলো ৩২ শিশু-কিশোর

ফরিদগঞ্জে একটানা ৪০ দিন জামাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে বাইসাইকেল উপহার পেলো ৩২ জন শিশু-কিশোর। শনিবার (২ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে রামদাসেরবাগ মানের বাড়ি জামে মসজিদের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের হাতে এ বাইসাইকেল তুলে দেন মসজিদ কমিটিসহ অতিথিগণ। সাইকেল উপহার পেয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন শিক্ষার্থীরা। এ ধরনের আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকাবাসী।
|আরো খবর
পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা নামাজ আদায়ের লক্ষ্য পূরণ করতে প্রতিদিন ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি শুরু করতো। ফজর থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়তে ব্যস্ত সময় পার করতো। এসব শিশু-কিশোরের বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। একাধারে ৪০ দিন (২০০ ওয়াক্ত) নামাজ জামাতে আদায় করতে গিয়ে এখন তাদের নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার অভ্যাস হয়ে গেছে বলে তারা জানায়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাইসাইকেল পেয়ে তারা খুশি।
এ সময় দু-তিনজন শিশু কিশোর বলেন, আমরা মোট ৫৯ জন এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। কিন্তু নিয়মিত ৪০ দিনে ২০০ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত আদায় করে ৩২ জন বাইসাইকেল পায়। তাতে আমরা হতাশ নই। আমরা যে নামাজ শুরু করেছি ইনশাআল্লাহ আর কখনো নামাজ ছাড়বো না।
প্রতিযোগিতায় বাইসাইকেল পাওয়া কয়েকজন শিশু কিশোর বলেন, ৪০ দিন জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে যে বাইসাইকেল পেয়েছি তা এখন পুরস্কার হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। এখন মনে হচ্ছে মসজিদমুখি হয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই কোটি কোটি টাকার সম্পদ। কঠিন বিপদের মধ্যেও আর কখনো নামাজ ছাড়বে না বলে তারা জানায়।
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং মানের বাড়ি মসজিদের পক্ষে উদ্যোক্তা হাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুনিয়ার জীবনের পাশাপাশি আখিরাতের জীবনের জন্যেও ভালো কাজের প্রয়োজন আছে। এলাকার বেনামাজি শিশু-কিশোর, যুব শ্রেণী ও বয়স্কদের সুপথে রাখতে আগামীতে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে চান বলে তিনি জানান।
ফরিদগঞ্জ তুলাতুলি জামে মসজিদের খতিব মুফতি আনোয়ার হোসাইন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি বাংলাদেশের অনেক স্থানেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্যে এলাকার শিশু, কিশোর, যুবশ্রেণী এবং বয়স্কদের মসজিদমুখি করতে এবং মোবাইলের আসক্তি, বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন ও যে কোনো ধরনের খারাপ অভ্যাস থেকে মসজিদমুখি করতে এ ধরনের উদ্যোগ সকলের জন্যে প্রশংসনীয় হয়ে উঠবে। তিনি বিভিন্ন মসজিদের সভাপতি এবং অন্যদের এ ধরনের উদ্যোগে উদ্যোগী হওয়ার জন্যে অনুরোধ করেন।
মানের বাড়ি মসজিদের সভাপতি আলহাজ্ব আবু জাফর খান সাহেব বলেন, আমাদের মসজিদের পক্ষ থেকে এলাকার মুসল্লিদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়ই এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের ধারণা ছিলো, যারা নিয়মিত নামাজ পড়বে তাদের দিয়ে কখনো খারাপ কাজ হতে পারে না। এ উদ্যোগ নেয়ার সাথে সাথে সত্যিই এলাকার অনেক মুসল্লিই ছোট ছোট এই শিশু- কিশোরদের সাথে সাথে তারাও মসজিদমুখি হয়ে পড়েছে। মুসল্লিদের নিয়মিত মসজিদমুখি করতে আশা করছি আবার নতুন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবো। তিনি আশা করেন এ ধরনের প্রতিযোগিতা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।