সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ২০:০৪

২০ বছর ধরে ফেলা হচ্ছে ময়লা

রায়পুর-চাঁদপুর মহাসড়কের পাশে ভাগাড়

পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ

তাবারক হোসেন আজাদ, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) থেকে
রায়পুর-চাঁদপুর মহাসড়কের পাশে ভাগাড়

রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বর্ডারবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে (গত ২০ বছর) বর্জ্য ফেলে আসছেন রায়পুর পৌরসভাসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও পৌরসভা ও বাজার কমিটি সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে আবর্জনার কারণে ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ রক্ষাকারী চরপাতা ইউনিয়নের খালের পানি প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষাক্ত পানি আটকে গিয়ে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে আর শুষ্ক মৌসুমে দুর্গন্ধ প্রকট হয়ে উঠছে। গ্রামবাসী অভিযোগ দিলেও আবর্জনার ভাগাড় নিয়ে সুষ্ঠু কোনো সমাধান হয়নি।

রোববার (২৪ আগস্ট ২০২৫) সরেজমিন দেখা যায়, রায়পুরের চরপাতা খালের পাশে আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন সকালে পৌরসভার দু কর্মচারী তাদের ময়লার গাড়ি নিয়ে এসে সহযোগীদের মাধ্যমে বর্জ্য ফেলছে।

তারা জানান, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত রায়পুর পৌর এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে আনা বর্জ্য এখানে ফেলা হয়। এছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট ও কারখানার বর্জ্যগুলোও এখানে ফেলছেন।

বর্ডারবাজার এলাকার কাঁচামাল বিক্রেতা খলিলুর রহমান জানান, আবর্জনার দুর্গন্ধে বাজারে বসে থাকা যায় না। ক্রেতা-বিক্রেতা সবারই দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে এ ময়লার ভাগাড়। বর্জ্য ফেলার স্থান থেকে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানুষকে নাকে-মুখে রুমাল চেপে চলতে হয়।

রায়পুর নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হোসেন আহাম্মদ বলেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ না করার বিষয়ে পৌরবাসী অনেকদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন। পৌরসভার বয়স দেড় যুগেরও বেশি। এ সময়েও জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পরিবেশ দূষণের শিকার হতে হয়, যা দুঃখজনক।

চরপাতা বর্ডারবাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিন পাটোয়ারী বলেন, এ বাজারে প্রায় ২০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ ও পৌরভার সাবেক মেয়র ইসমাইল খোকনের নির্দেশেই পৌর কর্মচারীরা ময়লা ফেলছেন। আর যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে সে স্থানটি চাঁদপুর থেকে রায়পুর ও লক্ষ্মীপুরের প্রবেশদ্বার। এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার প্রতিবাদে বছরে কয়েকবার স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ জানালেও গত ২০ বছরেও সুফল মিলছে না।

চট্টগ্রাম-রায়পুর-চাঁদপুর সড়কে চলাচলকারী শাহি পরিবহনের চালক মফিজুর রহমান বলেন, চাঁদপুর থেকে ফেরার পথে দেখা যায় সড়কের ওপর অনেক সময় ময়লা পড়ে থাকে। বর্ডারবাজার এলাকায় সড়কের ফুটপাত ময়লার দখলে থাকে। দুর্গন্ধে বাসযাত্রীদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, রায়পুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বিনা অনুমতিতে মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে, তা শুনেছি। সড়কের একটা অংশে ময়লা ফেলায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হবে।

রায়পুর পৌরসভার সচিব মাসুদ মোর্শেদ জানান, ময়লা ফেলার জন্যে পৌরসভার কোনো জায়গা নেই। অনেক খোঁজ করে অবশেষে বর্ডারবাজারে খালের পাশে পরিত্যক্ত স্থানে সাবেক মেয়দের নির্দেশেই ওই জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আমরা সরকারিভাবে জমি খুঁজতেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়