শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ২১:৩৪

পরকীয়ার ঘটনায় ইউসিবিএল বাবুরহাট উপ-শাখার ইনচার্জকে আটক ॥ মুচলেকায় ছাড়

গোলাম মোস্তফা
পরকীয়ার ঘটনায় ইউসিবিএল বাবুরহাট উপ-শাখার ইনচার্জকে  আটক ॥ মুচলেকায় ছাড়

ইউসিবিএল ব্যাংক চাঁদপুর শাখার এক নারী গ্রাহকের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কারণে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ইউসিবিএল বাবুরহাট উপ-শাখার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে আটক করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ।

চাঁদপুরের শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর স্ত্রী ইউসিবিএলের পালবাজারস্থ শাখায় একাউন্ট করেন। ওই গৃহবধূ ব্যাংকটিতে আসা যাওয়ার সুবাদে তৎকালীন ব্যাংক কর্মকর্তা বর্তমানে বাবুরহাট উপ-শাখার ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামের সাথে পরাকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা তৈরি হয়। উভয়ের অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের কাছেও ধরা পড়ে।

ঘটনাটি নিয়ে উভয় পরিবার পক্ষ থেকে স্ব স্ব উদ্যোগে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। নারী গ্রাহক ও ওই ব্যাংক কর্মকর্তার বিষয়টি নিয়ে অতি বাড়াবাড়িতে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী নারী গ্রাহকের স্বামী মেহেদী আল-মাহমুদ চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ইউসিবিএল বাবুরহাট উপ-শাখার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৮মে ২০২৫) দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই নুরুল আমিন অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নিয়ে আসেন।

অভিযোগের বাদী ভুক্তভোগী মেহেদী আল মাহমুদ জানান, ইউসিবিএল চাঁদপুর প্রধান শাখায় একাউন্টে লেনদেন করতে গিয়ে তার স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। তার স্ত্রীকে ইউরোপ নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার নাম ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি করে। তার সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়ানোর পর থেকে স্ত্রী সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে চলছিলো । উভয়েরই সম্পর্কের গভীরতা ব্যাপক হওয়ায় মেহেদীর স্ত্রীকে বাবুরহাট রোডের মাথায় ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একসাথে ধরা হয়। এ সময় রফিকুল ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করার চেষ্টা করে। পরে আশেপাশের লোকজনের চেষ্টায় মেহেদী সেখান থেকে রক্ষা পেয়ে চাঁদপুর শহরে চলে আসেন। এদিকে পরকীয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রফিকুল ইসলাম চাঁদপুর প্রধান শাখা থেকে বদলি হয়ে ব্যাংকটির বাবুরহাট উপ-শাখার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন।

পুলিশ রফিকুল ইসলামকে থানায় নিয়ে আসলে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্যে চাঁদপুর ইউসিবিএল ম্যানেজার রাজনৈতিক দলের নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে তদবির করতে শুরু করেন এবং বাদীকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ব্যাংকে লেনদেন করতে এসে মেহেদী আল মাহমুদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক হয়েছে। নোয়াখালী জেলায় প্রথম স্ত্রী-সন্তান থাকে। প্রথম স্ত্রীর কথা জেনেও মেহেদী আল মাহমুদের স্ত্রী স্বেচ্ছায় বিয়ে করার জন্যে রাজি হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, অপরের স্ত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি করার ঘটনায় স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুর ইউসিবিএলে (ব্যাংকে) প্রবাসীদের স্ত্রীরা একাউন্টে লেনদেন করতে আসলে তাদের সাথে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কারো কারো পরকীয়া সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টি। ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এর আগেও অনেক সংসার নষ্ট করেছে। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে মোবাইল ফোনে প্রবাসী স্ত্রীদের পটিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে রফিকুলের মতো ব্যাংক কর্মকর্তাদের কেউ কেউ। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ জোরদারের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা। তা না হলে প্রবাসীর স্ত্রীরা পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে স্বামী সন্তান রেখে পালিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাহার মিয়া বলেন, উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি পারিবারিকভাবে ফয়সালা করবেন এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাকে তার অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ডেকে আনা হয়েছে, এটাকে আটক বলা যাবে না।

এ বিষয়ে ইউসিবিএলের চাঁদপুর ব্যবস্থাপক মো. ফয়সাল বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেনে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত হয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়