প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৭
ধর্মীয় তীর্থভূমি থেকে বৈশ্বিক অর্থনীতির শক্তি : সৌদি আরবের যাত্রা মোহাম্মদ

সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের হৃদয়ে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দেশ, যার আয়তন প্রায় ২১ লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার। ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের কারণে এটি আন্তর্জাতিকভাবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পশ্চিমে লোহিত সাগরের বিস্তৃত উপকূলরেখা এবং পূর্বে পারস্য উপসাগর দেশের জন্যে নৌপরিবহন, বাণিজ্য ও জ্বালানি রপ্তানিতে অনন্য সুবিধা প্রদান করেছে। অভ্যন্তরভাগ জুড়ে বিস্তৃত মরুভূমির মধ্যে নাজদ অঞ্চল ও রুব আল-খালি (বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো) মরুভূমি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া হিজাজ পর্বতমালা দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ, ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও পর্যটন সম্ভাবনাকে বহু গুণ সমৃদ্ধ করেছে।
প্রাচীনকাল থেকে আরব উপদ্বীপের এই অঞ্চল ছিলো নানা গোত্র, উপজাতি ও বাণিজ্যপথের মিলনস্থল। বিশেষ করে ধূপ, মশলা ও বস্ত্রবাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট এখানে গড়ে উঠে, যা ভারত, আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছিলো। ইসলামের আবির্ভাবের পর মক্কা ও মদিনা শুধু এখানকারই নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি লাভ করে, যেখানে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মুসলিম হজ ও ওমরাহ পালন করে। বহু শতাব্দী ধরে বিভক্ত গোত্রভিত্তিক শাসন ও প্রাদেশিক বিভাজনের মধ্য দিয়ে চলা এই অঞ্চল আধুনিক যুগে একক রাষ্ট্রে পরিণত হয় ১৯৩২ সালে, যখন দূরদর্শী নেতা রাজা আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ বিচক্ষণ কূটনীতি ও সামরিক দক্ষতার মাধ্যমে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেন।
সৌদি আরবের সংস্কৃতি মূলত বেদুইন ঐতিহ্য, ইসলামি মূল্যবোধ ও আরবীয় আতিথেয়তার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। যাযাবর বেদুইনরা মরুভূমিতে জীবনধারার মাধ্যমে সাহস, বন্ধুত্ব ও আতিথেয়তার যে ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে, তা আজও দেশের সামাজিক আচরণে স্পষ্ট। ঐতিহ্যবাহী আরধা তরবারি নৃত্য জাতীয় পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক, যেখানে যোদ্ধাদের ঐক্য ও সাহসিকতার গল্প ফুটে উঠে। পাশাপাশি উট দৌড়, কবিতা পাঠ ও আরবীয় কফি সংস্কৃতি দৈনন্দিন জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে, যা অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে পারিবারিক সমাবেশ পর্যন্ত বিশেষ স্থান দখল করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার ‘ভিশন ২০৩০’-এর আওতায় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার বড়ো উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঐতিহ্যবাহী উৎসব ও সাংস্কৃতিক ইভেন্টের প্রসার ঘটানো হয়েছে, যেখানে স্থানীয় সঙ্গীত, হস্তশিল্প ও লোকশিল্প বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ ও জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসকে সামনে আনা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ আল-উলা, দিরিয়াহ ও জেদ্দার ঐতিহাসিক স্থানগুলো আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্যে উন্নত করা হচ্ছে, যা অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করে পাশাপাশি সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করছে।
দেশটিতে বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ, যার মধ্যে আনুমানিক ৬২-৬৫ শতাংশ নাগরিক এবং অবশিষ্ট ৩৫-৩৮ শতাংশ বিদেশি শ্রমিক ও প্রবাসী। তারা মূলত দক্ষিণ এশিয়া (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল), দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া (ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া) এবং আরব দেশ থেকে আগত। নির্মাণ, তেল ও গ্যাস শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন ও গৃহকর্মসহ বিভিন্ন খাতে তাদের অবদান দেশটির অর্থনীতিকে সচল রাখছে। বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও গৃহস্থালি খাতে এই শ্রমিকরা মুখ্য ভূমিকা পালন করছে, যা ভিশন ২০৩০-এর বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ।
সৌদি আরব বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তেল উৎপাদক এবং তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন (ওপেক)-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তেল ও গ্যাস খাত বহু দশক ধরে দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে, যা জিডিপির বড় অংশ এবং সরকারি রাজস্বের মূল উৎস। তবে দেশের অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমিয়ে বহুমুখী করাই ‘ভিশন ২০৩০’ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য। পর্যটন, প্রযুক্তি, বিনোদন, খনিজ অনুসন্ধান ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে সৌদি আরব টেকসই অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে, যা নতুন কর্মসংস্থান ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হবে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বিশ্বব্যাংকের ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাথাপিছু আয় প্রায় ২৭,০০০ মার্কিন ডলার, যা মধ্যপ্রাচ্যের ধনী অর্থনীতির একটি প্রতীক। তেল ও গ্যাস রপ্তানি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস হলেও, মক্কা ও মদিনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ধর্মীয় পর্যটনও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। প্রতিবছর লাখ লাখ হাজি ও ওমরাহ পালনকারী সৌদি অর্থনীতির বিভিন্ন খাতকে গতিশীল করে। পাশাপাশি ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগে প্রযুক্তি, বিনোদন, আর্থিক সেবা ও উৎপাদন খাত দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, যা দেশকে আধুনিক ও বৈচিত্র্যময় অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
সৌদি আরব নাগরিকদের মাথাপিছু ঋণ বর্তমানে আনুমানিক ৯,০০০–১০,০০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা শক্তিশালী আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রতিফলন। দীর্ঘদিন তেলের ওপর নির্ভরশীল অর্থনীতিকে বহুমুখী করার লক্ষ্যে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও শিল্প, প্রযুক্তি, পর্যটন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও খনিজ খাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি রাজস্বের উৎস বৃদ্ধি পেয়েছে, ঋণের চাপ কমেছে এবং বাজেট ঘাটতি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। এই স্থিতিশীলতা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াচ্ছে ও অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে টেকসই করছে।
নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক অধিকার সম্প্রসারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। আগে যেখানে নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত ছিলো, এখন উচ্চশিক্ষায় নারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তারা চিকিৎসা, প্রকৌশল, প্রযুক্তি, ব্যবসা ও গবেষণায় সক্রিয়। ২০১৮ সালে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি স্বাধীনতার নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। নারীরা ক্রীড়া, বিনোদন, উদ্যোক্তা ও কর্পোরেট নেতৃত্বেও ভূমিকা রাখছেন, যা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে বড়ো ভূমিকা রাখছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।
মরুর দেশ সৌদি আরবে হজ ও ওমরাহ অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখের উপরে হাজি ও ৭০ লাখের বেশি ওমরাহ পালনে দেশটি সফর করে। এই ধর্মীয় পর্যটন হোটেল, পরিবহন, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও খুচরা খাতকে সজীব রাখে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও সেবা সম্প্রসারণ দেশীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে, যা ‘ভিশন ২০৩০’-এ ধর্মীয় পর্যটনকে প্রধান অগ্রাধিকার দিয়েছে।
বিদেশি শ্রমশক্তি দেশের অবকাঠামো নির্মাণ, শিল্প, সেবা ও গৃহকর্মে অপরিহার্য। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও মিশর থেকে আগত শ্রমিকরা উন্নয়ন যাত্রার অঙ্গ হিসেবে কাজ করছে। বর্তমানে তারা মোট শ্রমবাজারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, যদিও ‘সৌদিকরণ’ নীতির মাধ্যমে স্থানীয় কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।
‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক পর্যটনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও আধুনিক বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন চলছে। দিরিয়াহকে ইসলামী ইতিহাসের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে, মাদাইন সালেহ ও আল-উলার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো বিশ্ব ঐতিহ্যপ্রেমীদের জন্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে, রেড সি প্রকল্পে বিলাসবহুল রিসোর্ট ও সামুদ্রিক পর্যটন অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে। নীয়ম সিটি প্রযুক্তিনির্ভর ও পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে পর্যটক ও বিনিয়োগ আকর্ষণে কাজ করছে। এসব উদ্যোগ দেশকে ধর্মীয় তীর্থকেন্দ্র থেকে সাংস্কৃতিক ও বিনোদনের বিশ্বমানের গন্তব্যে রূপান্তরিত করছে।
অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য বাড়াতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশ গবেষণা ও ই-গভর্ন্যান্সে বিনিয়োগ ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক। স্মার্ট সিটি নির্মাণ ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার কর্মসংস্থান বাড়াচ্ছে। ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ, ফর্মুলা-১, গলফ, বক্সিং ও টেনিসের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজনে দেশটির সুনাম ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ নিশ্চিত হচ্ছে, যা বৈশ্বিক ইমেজ ও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।
সৌদি আরব প্রাচীন ইতিহাস ও গভীর ধর্মীয় ঐতিহ্যের দেশ। ইসলাম ধর্মের জন্মভূমি হিসেবে মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান, যেখানে মক্কা ও মদিনার ধর্মীয় গুরুত্ব দেশটিকে বৈশ্বিক ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দীর্ঘ সময়ের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্য দেশের পরিচিতি গড়ে তুলেছে, যা মানুষের মাঝে গর্বের বিষয়।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘ভিশন ২০৩০’ শুধু তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে বহুমুখী ও টেকসই অর্থনীতি গড়ার পরিকল্পনা নয়, বরং একটি উন্মুক্ত, আধুনিক ও সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয় এই ভিশন দেশকে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে ও প্রাচীন ঐতিহ্যের মর্যাদা রক্ষায় প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সৌদি আরব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। দেশটি ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’ ও ‘মিডল ইস্ট গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’-এর মাধ্যমে কার্বন নির্গমন কমানো, গাছ রোপণ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি খাতের দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটির জ্বালানি মিশ্রণে বৈচিত্র্য আনছে, যা শুধু পরিবেশবান্ধব নয় বরং শক্তি নিরাপত্তাকেও শক্তিশালী করছে। এসব উদ্যোগ বৈশ্বিক পরিবেশ নীতিতে সৌদি আরবকে একটি প্রভাবশালী অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও সৌদি আরব একটি প্রধান শক্তি। জি-২০, ওপেক+ এবং ইসলামিক কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (ওআইসি) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে দেশটি তেল উৎপাদন ও মূল্য স্থিতিশীলতায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি উদ্যোগ, মানবিক সহায়তা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে দেশটির অবদান বেড়েছে। চীন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তা কাঠামোয় একটি প্রভাবশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।
শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও দ্রুত অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিং আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়, কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেলস এবং নতুন গড়ে ওঠা প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটগুলো বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিশেষায়িত কর্মী তৈরি করছে। বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের আকর্ষণ করতে বৃত্তি, গবেষণা তহবিল এবং আধুনিক ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে সৌদি আরব ভবিষ্যতের প্রযুক্তিনির্ভর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যে একটি শক্তিশালী মানবসম্পদভিত্তি তৈরি করছে।
এছাড়া সৌদি সমাজে বিনোদন ও জীবনধারার বিপ্লবী পরিবর্তন এসেছে। সিনেমা হল, সঙ্গীত, কনসার্ট, ফ্যাশন শো ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, যা আগে কল্পনাও করা যেতো না। বিনোদন খাতের এই প্রসার পর্যটন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করেছে, পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের জন্যে সৃজনশীল ক্ষেত্র উন্মুক্ত করেছে। এই নতুন ধারা সমাজে সাংস্কৃতিক উদারতা ও বৈশ্বিক সংযোগকে আরও জোরদার করছে, যা দেশটির সামাজিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক ইমেজকে শক্তিশালী করছে।
মোহাম্মদ সানাউল হক : +9660576328550, [email protected]