প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৪০
প্রথমবারের মতো কুমিল্লায় মহালয়া উৎসবে হাজারো ভক্ত-শ্রোতার সমাগম

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আনন্দঘন পরিবেশে কুমিল্লা ত্রিশূল গীতা শিক্ষালয়, শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী কালী মাতার মন্দির গীতা শিক্ষালয়, চন্দ্রিকা গীতা শিক্ষা কেন্দ্র, শ্রী শ্রী গুপ্ত জগন্নাথ মন্দির গীতা শিক্ষালয় ও মহেশাঙ্গন নিষ্কাম কর্মযোগ গীতা শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌথ আয়োজনে শ্রী শ্রী দুর্গোৎসবের পুণ্যময় সূচনা হয় মহালয়া উৎসবের মাধ্যমে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রোববার সকাল ৭টায় নগরীর মনোহরপুরস্থিত শ্রী শ্রী রাজরাজেশ্বরী কালী মাতা মন্দির প্রাঙ্গণে প্রথমবারের মতো এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। তদুপলক্ষে সকাল ৭টা হতে যথাক্রমে বেদ মন্ত্র পাঠ, শ্রী শ্রী চণ্ডী পূজা, শ্রী শ্রী চণ্ডী পাঠ ও আগমনী গান। সবশেষে উৎসবে আগত ভক্ত শ্রোতার মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন : ত্রিশূল গীতা শিক্ষালয়ের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক জেলা জিপি অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ, বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ঐক্য ফ্রন্ট কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমল চন্দ্র খোকন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত দাশ টিটু, ত্রিশূল গীতা শিক্ষালয়ের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য রোটা. নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট স্বর্ণকমল নন্দী পলাশ, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তাপস কুমার নাহা, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ত্রিশূল গীতা শিক্ষালয়ের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ও তত্ত্বাবধায়ক ড. বিশ্বজিৎ দেব, ত্রিশূল গীতা শিক্ষালয়ের সভাপতি (কর্ণধার) আশিষ দাস ও সাধারণ সম্পাদক অনন্য ভৌমিক, জাগো হিন্দু পরিষদ কুমিল্লার সভাপতি সাগর দাস, চন্দ্রিকা গীতা শিক্ষালয়ের পরিচালিকা তিথী চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন গীতা শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং হাজারো ভক্ত-শ্রোতার।
জানা যায়, বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। এদিন থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষের। শ্রী শ্রী চণ্ডী পাঠের মধ্যদিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। এদিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। মহালয়া মানেই আর ছয় দিনের প্রতীক্ষা মায়ের পূজার। এই দিনেই দেবীর চক্ষুদান করা হয়। আগামি ২৮ সেপ্টেম্বর রবিবার ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত মহালয়া থেকেই দুর্গাপূজার আনন্দধ্বনি শোনা যায়। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর পর প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে দুর্গোৎসবের। সনাতনীদের কাছে দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীক রূপে পূজিত।
পুরাণে আছে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চান। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’ রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও বধ করেন।