বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭

চাঁদপুর শহরে পাবলিক টয়লেট : চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিন

অনলাইন ডেস্ক
চাঁদপুর শহরে পাবলিক টয়লেট : চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিন

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ম্যাফ-এর আয়োজনে ‘চাঁদপুর শহরে পাবলিক টয়লেট : স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও মর্যাদার দাবিতে নাগরিক প্রতিনিধিদের গোলটেবিল আলোচনা’ অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ভুক্তভোগী, শ্রমজীবী ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) চাঁদপুরের মাধ্যমে পৌরসভার প্রশাসকের কাছে চাঁদপুরকে একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও মর্যাদাপূর্ণ শহরে রূপান্তরের আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে চাঁদপুর শহরের ব্যস্ততম এলাকা টাউন হল, শপথ চত্বর, বাস স্ট্যান্ড, ওয়্যারলেস ও লঞ্চঘাট-এই ৫টি স্থানে নতুন করে স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিক টয়লেট ও ওয়াশ ব্লক নির্মাণের দাবি জানানো হয়। এছাড়া নারীদের জন্যে পৃথক ও নিরাপদ টয়লেট, টেকসই রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিতকরণ, উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর ড্রেনেজ সিস্টেম স্থাপনের দাবিও উত্থাপন করা হয়।

এফসিডিও-এর অর্থায়নে বি-স্পেস প্রকল্পের আওতায় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদ-এই চার দলের সমন্বয়ে গঠিত মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম, চাঁদপুরের উদ্যোগে এ গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক ও জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম জাকারিয়া (উপ-সচিব)। তিনি বলেন, যারা বাসার বাইরে বাজার করতে আসেন বা অন্য যে কোনো কাজে শহরে আসেন তাদের জন্যে টয়লেটের সমস্যাটি একটি বড়ো সমস্যা। আমাদের অনেক পাবলিক টয়লেট করার চিন্তা আছে। কিন্তু জায়গার কিছুটা সমস্যা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে আমরা ২০টি পাবলিক টয়লেটের জন্যে আবেদন পাঠিয়েছি, এর মধ্যে চাঁদপুর পৌরসভা পাবে ৬টি, বাকিগুলো পাবে অন্য পৌরসভা।

দেখা যাবে চাঁদপুর পৌরসভা ছয়টি টয়লেট নির্মাণে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন ও বরাদ্দ পেয়েও বাস্তবে সব ক’টি টয়লেট বানাতে পারবে না, ততক্ষণে অন্য পৌরসভাগুলোর ১৪টি টয়লেট নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বলতে যে অংশটা বোঝায় তার সিংহভাগই রেলওয়ে এলাকায়। যেমন, পাঁচ রাস্তার মোড় (সাবেক শপথ চত্বর, বর্তমান বাইতুল আমিন চত্বর) এলাকায় পাবলিক টয়লেট করতে চাইলে কোটি টাকার বিনিময়েও পৌরসভা জায়গা কিনতে পারবে না; তাদেরকে জায়গা লীজের জন্যে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ণা দিতেই হবে। কেননা এ মোড় সংলগ্ন চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন লাগোয়া রেলওয়ের অনেক জায়গা অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যেগুলো লীজ ছাড়া কারো কাছে বিক্রির কোনো ব্যবস্থা রেলওয়ের নীতিতে নেই। কোর্ট স্টেশন কার্যালয় থেকে কিছুটা পূর্বে প্লাটফর্ম সংলগ্ন উত্তর অংশ পাবলিক টয়লেটের জন্যে খুবই উপযোগী জায়গা। এখানে পাবলিক টয়লেট করলে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে কোর্ট স্টেশনে সারাক্ষণ অবস্থানকারী আমজনতা, শহরে নানা স্থান থেকে নানা প্রয়োজনে আগত লোকজন এবং নির্ধারিত সময়ে ট্রেনে ওঠানামাকারী যাত্রী সাধারণ ব্যাপক ব্যবহার করতে পারবে। এখানে টয়লেট নির্মাণ করে চাঁদপুর পৌরসভা কিংবা রেল কর্তৃপক্ষ ইজারা দিয়ে লাভবানও হতে পারবে। একইভাবে মাতৃপীঠ স্কুলের নিকটস্থ চার রাস্তার মোড় সংলগ্ন সাবেক ছায়াবাণী সিনেমা হল এলাকায় এবং মিশন রোডের মাথায় রেলওেয়ের অব্যবহৃত জায়গায় পৌরসভা ও রেলওয়ের উদ্যোগে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ হতে পারে। এজন্যে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে, চট্টগ্রাম-এর সাথে কিংবা রেল মন্ত্রণালয়ের সাথে চাঁদপুর পৌরসভা কার্যকর যোগাযোগ করতে পারে কিংবা মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) যোগাযোগ করে গোলটেবিল আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, তবেই চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ও জনাকীর্ণ স্থানগুলোতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের ব্যাপারে চাঁদপুর পৌরসভার চিন্তা বা পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবে রূপ পাবে, অন্যথায় নয়। স্মর্তব্য, চাঁদপুর শহরের ক্রাইং নীড বলতে যে ক’টি বিষয় বোঝায়, তার মধ্যে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এটিকে যদি জনচাহিদার শীর্ষে আছে বলা হয়, তাহলে সে বলাটা মোটেও ভুল হবে না-এটা আমাদের দৃঢ় অভিমত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়