শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০

রেমিটেন্স চায় রাষ্ট্র, নিরাপত্তা দেয় না

মোহাম্মদ সানাউল হক
রেমিটেন্স চায় রাষ্ট্র, নিরাপত্তা দেয় না

সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দুর্দশা। মাতৃভূমি ছেড়ে জীবিকার সন্ধানে আসা এসব মানুষ বিভিন্নভাবে দুর্বৃত্তদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। বৈধ পথে গিয়েও ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারছেন না হাজার হাজার শ্রমিক। অনেকে অর্ধাহারে-অনাহারে ভবঘুরের মতো জীবনযাপন করছেন, কেউ মানসিক বিপর্যয়ের শিকার, কেউ কেউ হতাশায় ডুবে আছেন, আবার কেউ আত্মহত্যার মতো চরম পথ বেছে নিচ্ছেন। এই দুর্দশাগ্রস্ত প্রবাসীদের ওপর যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

একদিকে জীবন রক্ষা, অন্যদিকে নানা বিপদের মুখে পড়া তাদের প্রতিদিনের বাস্তবতা।

বেকারত্ব-দারিদ্র্য দূরীকরণ, ভালো পরিবেশে বসবাস করা এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার আশায় বাংলাদেশীরা প্রবাসে পাড়ি জমায়। সম্প্রতি জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান (বিবিএস) ব্যুরো জানিয়েছে, ‘বিদেশে অবস্থানরত’ প্রবাসীর সংখ্যা ৫০ লাখের অধিক। প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বসবাস করে, তাদের সংখ্যা প্রায় ২.১২ মিলিয়ন।

সৌদি প্রবাসীদের অভিমত অনুযায়ী, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সংঘটিত সহিংস ঘটনার পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। তার মধ্যে দূতাবাসের কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঘাটতি, প্রবাসীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা, একঘেঁয়েমি, মানসিক চাপ, ক্রোধ ও অমানবিক আচরণ। এসব কারণেই অনেক সময় তুচ্ছ ঘটনা থেকেই হাতাহাতি, মারামারি, এমনকি খুনের মতো ঘটনাও ঘটছে।

এছাড়াও রুমের প্রাইভেসি লঙ্ঘন, মতের অমিল কিংবা সামান্য বিষয়ে বিরোধের জেরে এসব সহিংসতা জন্ম নিচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতির ফলে সৌদি আরবের মানবসম্পদ বিভাগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রতি আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে, যার ফলে কর্মসংস্থানের বিশাল একটি সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

সৌদি প্রবাসী আনোয়ার মাঝির আক্ষেপ, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। অথচ, দেশে বা বিদেশে প্রবাসীদের যে সম্মান ও আত্মমর্যাদার দাবি, তা কোনো সরকারই যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে না। বিদেশের মাটিতে আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা বিনা বিচারে হত্যার শিকার হন, অপহৃত হন, নানা রকম অপমান ও নির্যাতনের সম্মুখীন হন। দুঃখজনকভাবে এসব গুরুতর বিষয়ে দেশের কর্তৃপক্ষ কোনো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।

প্রবাসী জুয়েল পাটওয়ারী জানান, সৌদি মানবসম্পদ বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি শক্তিশালী ও কার্যকর ভিত গড়ে তোলাই এখন সবচেয়ে জরুরি। যেমনটি ভারত, পাকিস্তান কিংবা নেপালের দূতাবাসগুলো তাদের নিজ নিজ প্রশাসনিক সংস্থার সঙ্গে গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, ‘এখানকার প্রবাসীরা নানান সমস্যায় জর্জরিত থাকলেও দূতাবাস থেকে চাইলেই সহায়তা পাওয়া যায় না। যদি দূতাবাস সৌদি প্রশাসনিক অধিদপ্তরের সঙ্গে জবাবদিহিমূলক ও সক্রিয় সম্পর্ক স্থাপন করতো, তাহলে যে কোনো সমস্যার সমাধানে তা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারতো।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের বিষয়ে সৌদি আরবের স্থানীয় প্রশাসন বরাবরই সজাগ ও যত্নবান। অনেকেই ধারণা করেন, বিদেশে বাংলাদেশীদের প্রতি এই অবহেলা বা উপেক্ষার পেছনে রয়েছে কর্মদক্ষতার অভাব। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত বেশিরভাগ বাংলাদেশী শ্রমিকই দক্ষ ও অভিজ্ঞ; এমনকি ভাষাগত জ্ঞানেও তারা যথেষ্ট পারদর্শী।

তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের বহু শ্রমিক অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশীদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন দক্ষতা ও পারদর্শিতায়। এরপরও বাংলাদেশীদের প্রতি সৌদি প্রশাসনের অনাগ্রহের মূল কারণ হিসেবে উঠে আসে রাষ্ট্রীয় অভিভাবকদের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব এবং প্রবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি ও দ্বন্দ্ব। এসব কারণেই বহু ক্ষেত্রেই বাংলাদেশীরা বঞ্চিত ও অবহেলিত থেকে যাচ্ছেন।

প্রবাসীরা আক্ষেপ করে জানান, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে বৈধ উপায়ে সৌদি আরবে আসতে যেখানে তুলনামূলকভাবে খুব কম খরচ হয়, সেখানে বাংলাদেশের শ্রমিকদেরকে গুণতে হয় এক অস্বাভাবিক উচ্চ ব্যয়। ভারতে সৌদি আরবগামী শ্রমিকদের গড় খরচ পড়ে মাত্র ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও ব্যয় প্রায় একই। এমনকি নেপাল থেকে আরও কম খরচে শ্রমিকরা সৌদি আরবে কাজের ভিসায় আসার সুযোগ পান।

অন্যদিকে, একজন বাংলাদেশি শ্রমিককে একই ধরনের কাজের জন্যে সৌদি আরবে যেতে খরচ করতে হয় প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই খরচ আরও বেশি হয়ে থাকে। এতো বড়ো অঙ্কের অর্থ ব্যয় করার পর যখন দেখা যায় বেতন মাসে মাত্র ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা, তখন অনেক শ্রমিকই হতাশ হয়ে বিকল্প পথ খোঁজার চিন্তায় পড়ে যান। আর এই হতাশা থেকেই কেউ কেউ জড়িয়ে পড়েন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা মানসিক একঘেঁয়েমিতে, যা শেষ পর্যন্ত ক্ষতি ডেকে আনে ব্যক্তি, সমাজ ও দেশের জন্যে।

ভুক্তভোগী প্রবাসীরা জানান, বাংলাদেশ থেকে কিছু অসাধু এবং অদক্ষ (ভুইফোঁড়) এজেন্সি বিদেশে ভালো কাজ ও উচ্চ বেতনের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের সৌদি আরবে পাঠায়। এসব ভিসার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই হয় ভুয়া বা ভুয়া প্রতিশ্রুতিভিত্তিক। সৌদি আরবে এসে শ্রমিকরা বুঝতে পারেন, এজেন্সির দেওয়া তথ্যের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শ্রমিকদের মাসখানেক দালালদের কাছে আটকে রাখা হয়। পরে এক পর্যায়ে জোরপূর্বক রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়, অথচ হাতে থাকে না কোনো বৈধ ইকামা (কাজের অনুমতিপত্র), না থাকে কোনো চাকরি। এই পরিস্থিতিতে অসহায় শ্রমিকরা বাধ্য হন রাস্তায় মানবেতর জীবনযাপন করতে।

বিগত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশি প্রবাসীরা দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা বারবার ঘটছে। এদের মধ্যে কিছু হত্যাকাণ্ড বিশেষভাবে দৃষ্টিগোচর ও আলোচিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক কানাডা যাওয়ার কথা বলে কামরুজ্জামান কাকনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নেন গাজীপুরের দালাল বাহার উদ্দিন। কাকনকে শেষ পর্যন্ত বাহার উদ্দিন কানাডা পাঠাতে পারেন নি। পরে কাকনের ছোট ভাই কামরুল ইসলাম সাগরকে ভালো বেতনে সৌদি আরব পাঠানোর প্রস্তাব দেন তিনি। ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকায় সাগরকে পাঠানো হয় সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে। পরবর্তীতে কাকনকেও কৌশলে বাহার তার ছোট ভাই সাগরের কাছে পাঠান। গত ২২ মে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের একটি ফ্ল্যাটে এই দুই ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।

এছাড়াও, সৌদি আরবে এক বাংলাদেশী প্রবাসীর ছুরিকাঘাতে আরেক প্রবাসী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ মক্কায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজর আলী (৪০) টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার কোকড়হরা ইউনিয়নের বলধী গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। নিহতের পরিবার জানায়, রুমের অন্যান্য বাংলাদেশীরা নামাজে গেলে ফজর আলী ও নুরুল রুমে থাকে। নুরুলকে রুম থেকে বের হয়ে ফোনে কথা বলার জন্যে বললে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এভাবে কয়েকবার ছুরিকাঘাত করার কারণে দ্রুত মৃত্যু হয় তার।

সৌদি আরবে বাংলাদেশি হাফেজ আল আমিন নামে এক মসজিদের ইমামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সড়কের পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। (২১ মার্চ, ২০২৫) স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৌদি আরবের ইয়েমেন সীমান্তবর্তী শহর জিজানে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ আল আমিনের মরদেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সৌদি আরবের শহর পবিত্র মক্কায় অ্যাসিড নিক্ষেপ ও ছুরিকাঘাত করে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশী। এছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে আরও একজনকে খুন করেছেন তিনি। (৩১ মার্চ, ২০২৫) এই হামলায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সৌদি গেজেট।

সৌদি আরবে পুলিশের অভিযানের সময় বহুতল ভবন থেকে পড়ে রিদোয়ান (২৭) নামের এক বাংলাদেশি প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। গত ১৮ মে, ২০২৫ দিবাগত রাতে মক্কার আল রূসেফা জেলার খালেদিয়া এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

সৌদি আরবে নিজ জেলার প্রতিবেশীর হাতে সাব্বির হোসেন (২৭) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩ মার্চ ২০২৪ বিকেল ৪টার দিকে সৌদি আরবের জেদ্দায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবার সূত্র জানা যায়, সৌদি আরবের জেদ্দায় পাশের কক্ষে থাকা অন্য বাংলাদেশীদের সঙ্গে সাব্বিরের কথা কাটাকাটি হয়। এই কথাকাটাকাটিকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে কিল-ঘুসির শিকার হন সাব্বির। সাব্বির এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিচার দিতে কফিলের (মালিক) কাছে যাচ্ছিলেন। এরপরেই প্রতিপক্ষের লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তার গলা চেপে ধরেন। এতে সাব্বিরের মৃত্যু হয়।

সৌদির আরব দাম্মামে গাড়ি পার্কিং নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ক্ষুব্ধ সৌদি নাগরিকের ছুরির আঘাতে প্রবাসী এক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির হাওলাদার (৩০) ফরিদপুরের ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামের মো. গিয়াস হাওলাদের ছেলে। দাম্মামে তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়ায় চালাতেন। সৌদি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাসিরের লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক সৌদি নাগরিককে আটক করে।

বিশিষ্ট প্রবাসী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা মন্তব্য করেন, সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের যেভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হচ্ছে, তা নিয়ে বাংলাদেশের শ্রম ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। অনেক হত্যাকাণ্ডই ঘটেছে প্রবাসীদের নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও ভুল বোঝাবুঝির জেরে। তবুও দূতাবাসের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তারা বলেন, ‘আমরা সবাই শ্রমিক। বৈধ উপায়ে উপার্জিত আয় দেশে পাঠাই। অথচ সরকার আমাদের নিরাপত্তা ও ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’

সৌদি আরব বাংলাদেশ দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সব ধরনের হত্যাকাণ্ড মানব সভ্যতার জন্যে অগ্রহণযোগ্য এবং দুঃখজনক। বর্তমান রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের যে কোনো সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রবাসীদের অভিযোগকে তিনি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

তবে উল্লেখ করা হয়, সৌদি আরব একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র, যার নিজস্ব কঠোর নিয়মনীতি রয়েছে, যার বাইরে কোনও পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব নয়। তবুও দূতাবাসের কার্যক্রম পূর্বের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়