বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ০৮:৪৭

এ মৃত্যু মর্মান্তিক, দায়ী ব্যক্তির শাস্তি চাই

অনলাইন ডেস্ক
এ মৃত্যু মর্মান্তিক, দায়ী ব্যক্তির শাস্তি চাই

‘হাজীগঞ্জে মাদরাসার টিনের চালায় বিদ্যুতায়িত হয়ে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু’ শিরোনামের একটি সংবাদে অধিকাংশ পাঠকই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সংবাদটিতে কামরুজ্জামান টুটুল লিখেছেন, মাদরাসার একাডেমিক ভবনের টিনের চালায় বল কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মো. সাঈফ বিন আনোয়ার (১১) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৫ মে ২০২৫) রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এর আগে এদিন বিকেলে সে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ আহমাদিয়া কামিল মাদরাসার টিনশেড ভবনের ছাদে এ ঘটনার শিকার হয়ে মারাত্মক দগ্ধ হয়। সে হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ গ্রামের কাসারি বাড়ির মো. আনোয়ার হোসেন লিটনের একমাত্র ছেলে ও হাজীগঞ্জ আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ আহমাদিয়া কামিল মাদরাসার একাডেমিক টিনশেড ভবনের চালায়।

স্থানীয়রা জানান, এদিন বিকেলে সাঈফ অন্যান্য শিশুদের সাথে বল নিয়ে খেলাধুলা করছিলো। খেলাধুলার এক ফাঁকে বলটি মাদরাসার টিনের চালায় আটকে যায়। এ সময় চালায় উঠে বলটি নামিয়ে আনতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কুমিল্লায় রেফার করেন। রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাঈফ। এদিকে শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎস্পৃষ্টের খবর পেয়ে রাতেই চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর লাইনম্যান ঘটনাস্থলে এসে মাদরাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ধারণা করা হচ্ছে, সর্ট-সার্কিট কিংবা বিদ্যুতের তার (ক্যাবল) ছিঁড়ে মাদরাসার চালায় পড়ায় টিন বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। যার কারণে, চালা থেকে বল নামিয়ে আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সাঈফ।

খেলতে গিয়ে শিশুদের পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণের ঘটনা সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে হাজীগঞ্জে সাঈফ নামের যে শিশু শিক্ষার্থী খেলার সময় বল কুড়াতে গিয়ে টিনের চালায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলো, সেটা অস্বাভাবিক ঘটনা। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনের টিনের চালা বিদ্যুতায়িত হওয়া মানে ওই প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকা। সাঈফ ওই টিনের চালায় বল কুড়াতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে শত শত শিক্ষার্থীর জীবনকে নিঃসন্দেহে ঝুঁকিমুক্ত করেছে। কেননা দুর্ঘটনার খবর শুনে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। নিশ্চয়ই টিনের চালাটি কী কারণে বিদ্যুতায়িত হয়েছিলো সেটা জানা গেছে। আমরা এই কারণের জন্যে যে বা যারা দায়ী, সে বা তাদেরকে শায়েস্তা করার জন্যে আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, আমাদের শিশুদের অধিকাংশ নয় শুধু, সর্বোচ্চ নব্বই শতাংশই এখন খেলাবিমুখ। তারা স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারে গেমস্, ইউটিউব, ফেসবুকেই বেশি মগ্ন থাকছে। সেজন্যে খেলার মাঠগুলো ক্রমশ শিশুশূন্য হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় খেলার মাঠের আশপাশ বা চারপাশ সর্বদিক থেকে নিরাপদ রাখাটা বাঞ্ছনীয়। এর অন্যথা হলে খেলার মাঠমুখী সাঈফদের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঠেকানো যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়