সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫, ০৮:২৪

চাঁদপুর শহরে আছে কী দেখার?-হকার, হকার!

অনলাইন ডেস্ক
চাঁদপুর শহরে আছে কী দেখার?-হকার, হকার!

চাঁদপুর শহরে চলছে চরম অরাজকতা। অভিভাবকহীনতায় চাঁদপুর শহরের পুরোটাই হকারদের দখলে। পালবাজারের পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী ভীষণ ক্ষুব্ধ। উপরের তিনটি বাক্যে শিরোনাম দিয়ে শনিবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় গুরুত্বের সাথে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটি পড়ে এক পাঠক তাই রসিকতা করে বললেন, চাঁদপুর শহরে আছে কী দেখার?-হকার, হকার। এই পাঠকের কথার বিশ্লেষণে মিলে সত্যতা। কেননা এই শহরের জনাকীর্ণ সড়কের ফুটপাত ও পাশেই শুধু হকারের দেখা মিলছে না। গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সকল স্থানেই মিলছে হকারের দেখা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জজ কোর্ট প্রাঙ্গণ, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ভেতর ও বাহির, সংলগ্ন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সম্মুখস্থ ফুটপাত, চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ, সিএনজি স্ট্যান্ড নামে পরিচিত চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পূর্ব পাশ, শহরের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র মোলহেড, নূতনবাজার-পুরাণবাজার সেতু, ফরিদগঞ্জ রোডের চাঁদপুর সেতুসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখস্থ খালি জায়গা ও সু্বধিাজনক স্থান এবং বাজারগুলোর সম্মুখভাগে হকারের অবস্থান আছেই। মাঝেমধ্যে পৌরসভা এসব হকার উচ্ছেদ করে ঠিকই। এক/দুদিনের ব্যবধানে হকাররা আবার নিজেদের পূর্ববর্তী অবস্থান নিশ্চিত করে। এক প্রচ্ছন্ন-অপ্রচ্ছন্ন অধিকারেই যেনো হকাররা সবসময় বলীয়ান থাকে। সেজন্যে চাঁদপুর শহরে হকারের দেখা মিলবেই।

এবার চাঁদপুর কণ্ঠের সংবাদটিতে কী লিখা হয়েছে, সেটা একটু দেখি। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর শহরটির যেনো কোনো অভিভাবক নেই। চরম এক অরাজকতা এবং বিশৃঙ্খলার মধ্যে আছে শহরটি। হকার তথা ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ি দোকানের সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না। যেখানে ফাঁক পায় সেখানেই ভ্যানগাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। শহরের পালবাজার গেট থেকে শুরু করে সোজা জেএম সেনগুপ্ত রোডের জোড় পুকুর পাড় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশ, শপথ চত্বরের পুরো এলাকা, হকার্স মার্কেটের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের দুপাশ, হাজী মহসিন রোডের দুপাশ, চিত্রলেখা মোড় হয়ে সরকারি কলেজের পূর্ব গেট পর্যন্ত সড়কের পুরোটাই থাকে হকারদের দখলে। সবচেয়ে বাজে অবস্থা থাকে পালবাজার গেট থেকে জোড় পুকুর পাড় পর্যন্ত। এই সড়কের দু পাশে মাছ, সবজি, ফল হতে শুরু করে এমন কোনো পণ্য নেই যে ভ্যানগাড়িতে করে বিক্রি হয় না। এতে পালবাজারের কয়েকশ’ ব্যবসায়ী ভীষণ ক্ষুব্ধ। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা বাজারে দোকান দিয়ে বসে থাকি। পৌরসভাকে ট্যাক্স দেই। বিদ্যুৎ খরচ, কর্মচারী বেতন ও দোকান ভাড়া তো রয়েছে। অথচ ভ্যানগাড়ির দোকানদাররা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে ব্যবসা করছে। তারা পৌরসভাকে কোনো ট্যাক্সও দেয় না। আমরা ভ্যানগাড়ি সরাতে গেলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। পৌরসভার সামনের সড়কেই চলে এই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা। এই ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ির দোকানগুলো পুরো রাস্তা দখল করে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা করে রাখে। এদের দৌরাত্ম্যে রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, পথচারীরাও হাঁটতে পারে না। ভুক্তভোগী জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেমন শহর এটা! এই শহরটির কি কোনো অভিভাবক নেই!? পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন কি এসব দেখে না!? তারা কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়!? চাঁদপুর শহরবাসী এই অরাজক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চায়।

আমরা চাঁদপুর পৌরসভার উচ্ছেদ অভিযানেই কেবল চাঁদপুর শহর হকারমুক্ত হবে-এটা বিশ্বাস করি না। এজন্যে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন বাজার কমিটি, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র প্রতিনিধি, সচেতন নাগরিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ আগ্রহী ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে হকারবিরোধী এমন কর্মসূচি হাতে নিতে হবে, যাতে টেকসই ফলাফল পাওয়া যায়। একই সাথে হকারদের পুনর্বাসনের চিন্তাও মাথায় রাখতে হবে। হোক সেটা সীমিত বা অবারিত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়