প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ২০:০১
ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়া কলেজে অনিয়ম
প্রবেশপত্রের নামে অতিরিক্ত ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা আদায়

ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ এনেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
|আরো খবর
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ বছর নিয়মিত, অনিয়মিত মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান মিলিয়ে মোট এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৮৬ জন। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন। প্রবেশপত্রের জন্যে আলাদা কোনো ফি নেওয়ার নিয়ম নেই। বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কেন্দ্র ফি ফরম পূরণের টাকার সাথেই নেওয়া হয়েছে।
'কেন্দ্র ফি আগে নিয়ে গেছেন, প্রবেশপত্র ফি নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই; কিন্তু আপনারা নিচ্ছেন, এটা কেন করলেন' এমন প্রশ্নের জবাবে সহজ-সরল স্বীকারোক্তি দিলেন কলেজের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, সত্যি কথা বলতে কি, কেন্দ্র খরচ ছাড়াও আমাদের অনেক খরচ রয়েছে। যেমন ধরেন পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন পুলিশ ডিউটি করেন, তারপরে যাতায়াত খরচ আছে, যারা ডিউটি দেন অথবা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে যারা আসেন তাদের নাস্তা খাওয়াতে হয়। এছাড়া হল সুপার, ট্যাগ অফিসার, উপজেলা প্রশাসন থেকে লোক এলে তাদেরকেও সম্মানি দেওয়া লাগে। এই খরচের টাকাগুলো আমরা কোথায় পাবো? সে জন্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই খরচটা নিচ্ছি।
প্রশ্ন হচ্ছে, কেন্দ্র খরচের জন্যে কেন্দ্র ফি বাবদ যে পরীক্ষার্থী প্রতি বিজ্ঞান ৮৫৫, বাণিজ্য ও মানবিক ৪৯৫ করে টাকা করে নেওয়া হয়েছে, এই টাকা গেল কোথায়? কলেজের তথ্য মতে, মোট পরীক্ষার্থী ৫৮৬ জন। সে হিসেবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র ফি বাবদ আদায় করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা। এই টাকা যে এবারই তোলা হয়েছে তা কিন্তু নয়। সব সময়ই তোলা হচ্ছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে প্রতিটি স্কুল-কলেজ এই কাজটি করে আসছে।
পরীক্ষার্থীর একজন ভাই সংবাদকর্মীকে কল দিয়ে এ বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, এতোগুলো টাকা তারা আমাদের কাছ থেকে নিচ্ছে, যা রীতিমতো অন্যায়। তারা পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেবে, তারা চলে যাবে পরীক্ষা দিতে। আমার বোনের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ ৮০০ টাকা ও মিলাদের জন্যে ২০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। মিলাদের টাকার জন্যে আপত্তি নেই, তবে প্রবেশপত্রের টাকার জন্যে আপত্তি আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী জানান, আমরা এ বছর আনুমানিক ৭০০ জন পরীক্ষা দেবো। প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রবেশপত্র ফি ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
প্রবেশপত্রের ফি সম্পর্কে জানতে শিক্ষা বোর্ডের সচিব খন্দকার সাদেকুর রহমানকে কল দিলে তিনি বলেন, প্রবেশপত্র ফি বাবদ কোনো টাকা নেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই। কেউ অতিরিক্ত ফি নিয়ে থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল্লাহ বলেন, শুধুমাত্র প্রবেশপত্রের জন্যে কোনো ফি নেওয়ার বিধান নেই। যদি তাদের বেতন ও অন্যান্য ফি বকেয়া থাকে, তাহলে সেটা ভিন্ন হিসাব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া জানান, কোথায় কতো ফি নিতে হবে তা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত। বোর্ডের নির্দেশনার বাইরে কোনো ফি নেওয়ার সুযোগ নেই। পরীক্ষার খরচ, কেন্দ্র ফি বোর্ড যা নির্ধারণ করে দেবে, এর বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই।