প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫, ০৯:৩৫
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
চাঁদপুরের বাজারে ভারতীয় চোরাচালানি পণ্য আসছে অভিনব কৌশলে

চাঁদপুরের বাজারে ভারতীয় চোরাচালানি পণ্যে বিভিন্ন কৌশলে আসছে। আর সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত ভারতীয় চোরাচালানি পণ্যের ব্যবসা করে আসছে। এরা প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে ব্যবসা করলেও প্রশাসন কোনোভাবে টের পায় না। এ চক্রটি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সিলেট, কুমিল্লা ও ফেনীসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পণ্য চাঁদপুরে নিয়ে আসে। আর এদের কৌশলের নিকট প্রশাসন হেরে যায়। এ চক্রটি একেকবার একেক কৌশল অবলম্বন করে থাকে। যার ফলে প্রশাসন এদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারে না। এরা ভারতীয় পণ্য চাঁদপুর থেকে ঢাকায়ও পাচার করে থাকে।
এরা বিশাল চক্র গড়ে তুলেছে। এরা মালামাল বহনের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় নারীদেরকে ব্যবহার করে। স্কুল ও কলেজের ছাত্র- ছাত্রীদেরকেও ব্যবহার করে আসছে।
একটি সূত্র জানায়, উঠতি বয়সী যুবকদেরকে এ কাজে ব্যবহার করা হয়। এসব যুবক বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে এ পণ্য নিয়ে আসে।
এরা বর যাত্রী, আনন্দ ভ্রমণ, স্কুলের ভ্রমণ, পিকনিকসহ আরো কিছু কৌশল অবলম্বন করে। মাইক্রো, যাত্রীবাহী বাস ও হাইস গাড়িগুলোতে ব্যানার টানিয়ে চাঁদপুর থেকে ২/৩ দিনের জন্যে ঘুরতে চলে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়। সেখানে ১/২ দিন থেকে ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে গভীর রাতে কিংবা ভোর বেলা চাঁদপুর এসে পৌঁছে। পণ্যগুলো তাদের নির্ধারিত লোকজন এসে বাবুরহাট, ওয়্যারলেস বা চাঁদপুর বাস স্টেশন থেকে নিয়ে থাকে। এভাবে তারা প্রশাসনের সাথে ও সুশীল সমাজের সাথে প্রতারণা করে ভারতীয় পণ্যের ব্যবসা করে আসছে।
চাঁদপুরে ভারতীয় পণ্যের ব্যবসায়ী কয়েকটি চক্র রয়েছে। এর মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল ২০২৫
ভোর ৪ টা ২৫ মিনিটের সময় ওয়্যারলেস বাজার মোড়ে হিলশা নামক যাত্রীবাহী বাস থেকে ভারতীয় পণ্য ব্যবসায়ী চক্রের ২ সদস্যকে চাঁদপুরের ডিবি পুলিশ আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভারতীয় চোরাই পণ্য Red BUII (Energy Drinking) ৫৭০ পিস, Dairy Milk ৩৬ বক্স, KitKat ১৭৪ বক্স, Gomela Cream ১৭৫ বক্স উদ্ধার করা হয়। যার মূল্য ৩ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ টাকা। এতো টাকার বিশাল পণ্য ২ জন লোক সিলেট থেকে প্রকাশ্যে কীভাবে নিয়ে আসে?
অপরদিকে
পণ্যগুলো
এভাবে যাত্রীবাহী গাড়িতে উঠানো হলেও গাড়ির চালকসহ স্টাফরা নীরবতা পালন করে। আর সবসময়ই এভাবে ভারতীয় পণ্যগুলো আনা হয় বলে সূত্র জানায়। পণ্যবহনকারী যাত্রীবাহী গাড়ির স্টাফ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন। তাহলে ভারতীয় পণ্য ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব।
একটি
সূত্র জানায়, প্রতি সপ্তাহে চাঁদপুরে ভারতীয় পণ্য প্রবেশ করে থাকে।
এ চক্রটি বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
চোরাকারবারিদের মাল ডিবি পুলিশ আটক করলেও তাদের কার্যক্রম থেমে নেই। তারা পূর্বের ন্যায় তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রটি জানায়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুরের
ডিবি পুলিশের ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ভারতীয় মাল প্রবেশ করছে এ রকম তথ্য পেলে আমরা অভিযান করবো। ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় পণ্য আটক করেছি।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহার মিয়া বলেন, গত মাসে ভারতীয় পণ্যসহ ডিবি পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। এদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভারতীয় পণ্য চোরাকারবারিদের আটক করতে আমরা থানা পুলিশ তৎপর রয়েছি।