সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৮:০২

বীরত্ব গাঁথা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের স্মৃতিকথা

স্টাফ রিপোর্টার
বীরত্ব গাঁথা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের স্মৃতিকথা

একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরোচিত লড়াই বাঙালীর গর্বের অধ্যায়। দেশমাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধে। সেই যুদ্ধের একজন সৈনিক চাঁদপুর পুরান বাজার মাস্টার প্রিন্টারস এর

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহজাহান ভূঁইয়া। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রারম্ভিক সময়ে বাঙালি জাতির মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দিপ্ত আহবানে সারা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান ভূঁইয়া। যার মুক্তিযোদ্ধা পরিচিতি নাম্বার ০১১৩০০০০৭১২।

বীরত্ব গাঁথা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহানের স্মৃতিকথা জানান তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন শুভ ভূঁইয়া।

সে জানায় তার বাবা

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহজাহান ভূঁইয়া ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স ১৮ বছর।ওই বছর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। হত্যা-খুন-নির্যাতনে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। আমাদের বাবা তখন টগবগে তরুণ। পাকিস্তানের এই নির্মমতার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হতে থাকেন তিনি। ভেতরে-ভেতরে স্বপ্ন রচনা করেন। স্বপ্ন দেখেন সোনার বাংলার। আর বাংলাকে স্বাধীন করতে যোগ দেন মুক্তিসংগ্রামে। ১৮ বছরের তরুণ মোঃ শাহজাহান ভূঁইয়া জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে ঝাঁপিয়ে পড়েন সংগ্রামে। নয় মাস সংগ্রাম শেষে ওঠে সোনালি সূর্য। জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।স্বাধীনতাহীন জীবন কোনো জীবন নয়। আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছি। সেই স্বাধীন-সুন্দর রাষ্ট্রটি আমাদের বাংলাদেশ। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্যসন্তান। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নসারথি হয়ে এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। আমরা সেই সৌভাগ্যবানদের অন্যতম।

আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখতে পারবে না। ছুঁয়ে দেখতে পারবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নসারথিদের একজন আমার বাবা। যিনি দেশকে রক্ষা করার জন্য প্রাণের মায়া ত্যাগ করে, পরিবারের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের প্রশিক্ষন ক্যাম্পে যুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য ট্রেনিং নিয়েছিলেন। যাঁকে আমরা দেখতে পেরেছি, ছুঁতে পেরেছি, বুকে মাথা রাখতে পেরেছি। তাঁর কোলে বড় হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে পেরেছি। এ যে কত বড় সৌভাগ্যের, কত বড় গর্বের তা কেবল অনুমেয়। আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া এই যে আমরা একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। যাঁর ত্যাগ আমাদের তথা আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রাখে।

স্বাধীনতা অর্জনের ৫২ বছর হলো। আমার বাবার মতো অনেক মুক্তিযোদ্ধা হারিয়ে যাবেন। চির অম্লান হয়ে থেকে যাবে তাঁদের কীর্তি। আমরা অনেকেই হয়তো তাঁদের সান্নিধ্য লাভের জন্য ব্যাকুল থাকবো। দেশকে ভালোবাসার জন্য, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য আমাদের সবার একবারের জন্য হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের সান্নিধ্য লাভ করা উচিত। তাঁদের গল্প শোনা উচিত। তাঁদের ছুঁয়ে দেখা উচিত। কে জানে এই সৌভাগ্য সবার হবে কি না! বাবা এখন নেই, কিন্তু তাঁর গল্পগুলো রয়ে গেছে। আমাদের কাছে তিনি একজন ভীষণ সাহসী এবং নির্ভীক যোদ্ধা। একজন নায়ক। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা একেকজন নায়ক। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা একেকজন বীর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়