রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৩

দক্ষিণ কোরিয়া ফেরত জসিম গাজীর খামারের দুধ-মাংসে স্বনির্ভর তরপুরচণ্ডী

কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক
দক্ষিণ কোরিয়া ফেরত জসিম গাজীর খামারের দুধ-মাংসে স্বনির্ভর তরপুরচণ্ডী

বিদেশের চাকরির ওপর নির্ভর না করে দীর্ঘ প্রবাস জীবনশেষে নিজ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চঁাদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের তরুণ উদ্যোক্তা মো. জসিম উদ্দিন গাজী। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে ফিরে তিনি গড়ে তুলেছেন গাজী ডেইরি খামার ও গাজী পোল্ট্রি খামার, যা এখন এলাকায় দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চঁাদপুর সদর উপজেলার জিএম ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত এই খামার দুটি থেকে প্রতিদিন তাজা গরুর দুধ ও স্বাস্থ্যসম্মত মুরগির মাংস সংগ্রহ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

খামার মালিক জসিম উদ্দিন গাজী জানান, মানুষের নিরাপদ খাদ্যের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই তিনি ডেইরি ও পোল্ট্রি খাতে বিনিয়োগ করেন। তিনি আরো জানান, ২০১৪ সালে পোল্ট্রি খামার এবং ২০১৮ সালে ডেইরি ফার্ম কার্যক্রম তিনি শুরু করেন। বর্তমানে পোল্ট্রি খামারে এক হাজার মুরগির একটি সেট রয়েছে। ডেইরি ফার্মে শাহীওয়াল, পিজিএম ও জার্সি জাতের প্রায় ২০টিরও বেশি গরু রয়েছে। পাশাপাশি খামারে উন্নত জাতের ছাগলও পালন করা হচ্ছে।

২০০৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাস জীবন শুরু করা জসিম উদ্দিন গাজী বলেন, প্রবাসে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশে কিছু করতে চেয়েছি। ভবিষ্যতে খামার আরো সম্প্রসারণ করে স্বল্পমূল্যে গরু বেচাকেনার ব্যবস্থা করতে চাই, যাতে সাধারণ মানুষ কম দামে দুধ ও মাংস পেতে পারে।

চঁাদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, জসিম উদ্দিন গাজীর মতো উদ্যোক্তারা প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছেন। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমন উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সবসময় তাদের পাশে রয়েছে। এছাড়া তিনি আমাদের প্রাণিসম্পদ মেলায় খামারীদের মধ্যে তৃতীয় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি একজন পরিশ্রমী মানুষ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফায়েত বন্দুকসী সাফা ও সমাজসেবক মো. নাজিরুল ইসলাম জানান, গাজী ডেইরি ও পোল্ট্রি খামার এলাকার তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন নিরাপদ খাদ্য মিলছে, অন্যদিকে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে।

ব্যক্তিগত জীবনে জসিম উদ্দিন গাজী তিন সন্তানের জনক। তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলে মো. জাবের হোসাইন ফরক্কাবাদ কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। বড়ো মেয়ে সুমাইয়া ইসলামের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে মরিয়ম মেঘনা বাজার দারুল উলুম মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার স্ত্রী একজন আদর্শ গৃহিণী হিসেবে খামারের কাজেও স্বামীর গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী।

স্থানীয়দের মতে, প্রবাস ফেরত এই উদ্যোক্তার সাফল্য তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নে প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়