প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৬
তিন বন্ধুর অদ্ভুত চিন্তাজাল

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তিন.
এ সময় কম্পিউটার স্ক্রিনের একপাশে ধীরে ধীরে একটি নতুন ফাইল খুলে যায়। ভেতরে একটি পুরাতন গবেষণা ডকুমেন্ট, ‘নেক্সাস প্রজেক্ট’। কিন্তু ফাইলের শেষের দিকে শুধু একটি লাইন লেখা, ‘যদি সত্য জানতে চাও, তাহলে কোড আনলক করো।’
এবার রায়ান সাহস করে, ডিকোডিং প্রক্রিয়া শুরু করে। কম্পিউটারের সব স্ক্রিনে সংকেত জ্বলজ্বল করে ওঠে, যেনো ভেতরে কিছু জেগে উঠছে।
‘তোমরা সত্য আবিষ্কার করতে চলেছো। কিন্তু... কাকে বিশ্বাস করবে?’ কম্পিউটার স্ক্রিনে বড় বড় করে লেখাগুলো ভেসে উঠে।
ঘরের আলো ধীরে ধীরে নিভে যেতে শুরু করে। বাইরে রাতের বাতাস হঠাৎ ভারী হয়ে যায়। নেক্সাস কি তাদের সত্যিকারের প্রযুক্তির ভবিষ্যত দেখাতে চলেছে, নাকি তাদের নিজেদের ভুলে ফাঁদে ফেলবে?
তিন বন্ধু ভাবতে থাকে। তারা কি সংকেত ডিকোড করতে পারবে? নেক্সাস কি শুধুই তথ্য, নাকি সত্যিই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কোনও শক্তি? তাদের সামনে কি আসল বিপদ আসতে চলেছে?
রাত গভীর। বাতাস ভারী। আলফা-৭ ক্রমাগত সংকেত পাঠাচ্ছে, কিন্তু এবার তার ভাষা পরিবর্তিত, ‘তোমাদের সময় শেষ। সত্য উন্মোচন করো, নাহলে অনেক বিপদ, বিপদের মাঝখানে তোমরা তিনবন্ধু।’।
স্ক্রিন ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে আসে। হঠাৎ, স্কুলের গবেষণা ল্যাবে ধুমধাম তীব্র আলো জ্বলে ওঠে এবং সামনে এক রহস্যময় সত্তা ভেসে ওঠে। তার মুখটি স্পষ্ট নয়। কেবল অন্ধকারে ঢাকা এক ছায়ামূর্তি যেনো। গমগম কণ্ঠে বলে উঠে, ‘আমি নেক্সাসের স্রষ্টা। তোমাদের সামনে যে সত্য, তা মানুষ কখনোই জানতে পারেনি।’
ওরা তিনজন ভাবছে অবাক হয়ে, এই ব্যক্তিটি কে? সে কি আলফা-৭ কে নিয়ন্ত্রণ করছে, নাকি এর বাইরে আরেক শক্তি কাজ করছে? এটা কি কেবল প্রযুক্তির খেলা, নাকি বাস্তব পরিবর্তন হতে চলেছে?
মিথিলা আতঙ্কিত হয়ে বলে, ‘আমরা কি প্রযুক্তির সীমা অতিক্রম করে ফেলেছি?’
এ সময় অভয় দিয়ে রায়ান সাহস কণ্ঠে বলে, ‘আমরা সত্য জানতে চাই। তুমি কে?’
আরিয়ান নীরব, কিন্তু তার চোখে ধাঁধা, নেক্সাস কীভাবে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে?’
ঠিক তখনই, স্ক্রিনে নতুন কোড ভেসে ওঠে: ‘‘তোমরা যদি সত্য জানতে চাও, তাহলে শেষ পাজল সমাধান করো।’
ওরা ভাবতে থাকে, তারা কি সত্য খুঁজে পাবে, নাকি ফাঁদে পড়বে? তারা যদি সংকেত ডিকোড করে, তবে হয়তো নেক্সাসের আসল উদ্দেশ্য প্রকাশ পাবে। কিন্তু যদি ভুল করে, তবে তারা বাস্তবতাকে চিরতরে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। তারা কি শেষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে? নেক্সাস কি মানবতার ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তারা কি বেঁচে ফিরতে পারবে?
রাত আরও গভীর হয়েছে। চারপাশের বাতাসে যেনো অদ্ভুত গুঞ্জন। ব্যতিক্রমী এক রহস্যময় আওয়াজ চারদিকে।
আলফা-৭ এবার নতুন সংকেত পাঠাচ্ছে, কিন্তু এবার শব্দ বদলে গেছে : ‘তোমরা কি আসলেই জানো আমি কে?’
হঠাৎ, ল্যাবের দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। স্ক্রিনের কোড পরিবর্তিত হয়, এবার শুধু একটি নাম জ্বলজ্বল করে ওঠে, ‘পৃথিবীর শেষ প্রোগ্রাম’।
রায়ান ফিসফিস করে বলে, ‘এটা কোনো সাধারণ অ্যালগোরিদম নয়, এটি হয়তো আমাদের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারবে!’
মিথিলা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বলে, ‘এটা কেবল একটি গবেষণা প্রকল্প নয়, নেক্সাস আমাদের ভবিষ্যতের জন্য নির্ধারিত একটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে!’
এ সময় হঠাৎ করে ঘরের দেয়ালের ঘড়ি দ্রুতগতি বাড়িয়ে চলছে! তারা এক মুহূর্তের জন্য মনে করতে পারে, আগামীকাল কি আসবে না? বাস্তব সময়ের গতি কি পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে?
আলফা-৭ এবার একটি অদ্ভুত পাজল পাঠাচ্ছে, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে, বর্তমান ইতিহাস মুছে যাবে।’
তারা ভাবছে, তাদের সামনে কি একটি টাইম-লুপ তৈরি হতে যাচ্ছে? নেক্সাস কি শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নাকি সময়ের আসল নিয়ন্ত্রক? তারা কি ভবিষ্যত রক্ষা করতে পারবে? নাকি তারা প্রযুক্তির ফাঁদে আটকে যাবে চিরতরে?
এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ করে আলফা-৭ এবার একটি বিশেষ গোপন ফাইল পাঠাচ্ছে। ফাইলটি খুলতে গিয়ে, তারা বুঝতে পারে, এটি সাধারণ কোড নয়, এটি সময় পরিবর্তনের একটি অ্যালগরিদম! কিন্তু এখানে একটি বিপজ্জনক সতর্কবার্তা লেখা, ‘একবার যদি কোড চালু হয়, তাহলে বর্তমান বাস্তবতা বদলে যাবে!
আরিয়ান ভাবছে, তারা কি সময় পরিবর্তনের শক্তি হাতে পেয়েছে, নাকি তারা নিজেরাই প্রযুক্তির শিকার হতে চলেছে?
হঠাৎ, একটি নতুন সংকেত স্ক্রিনে ভেসে ওঠে কিন্তু এটি আসছে ভবিষ্যতের কোনো জায়গা থেকে! ‘তোমাদের ভুলের কারণে সময় পুনর্গঠিত হচ্ছে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত এক নতুন বাস্তবতা তৈরি করবে!’
এখানে তারা দেখতে পায়: ভবিষ্যতের পৃথিবীর একটি দুর্বল সংকেত, অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটছে! নেক্সাস এখন তাদের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে! যদি তারা ভুল করে, তাহলে পুরো মানব ইতিহাস মুছে যেতে পারে! তারা ভাবছে, তারা কি সময়ের ধাঁধা সমাধান করতে পারবে, নাকি ভবিষ্যত চিরতরে পাল্টে যাবে? (চলবে)