শনিবার, ০৭ জুন, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৩০

চাঁদপুর জেলাজুড়ে বর্ষার বার্তাবাহী কদম ফুল

কৃষিকণ্ঠ প্রতিবেদক
চাঁদপুর জেলাজুড়ে বর্ষার বার্তাবাহী কদম ফুল

বর্ষা নামলেই চাঁদপুরের প্রকৃতিতে নতুন প্রাণ ফিরে আসে। সেই প্রাণের অন্যতম বাহক হলো কদম ফুল—সাদা-হলুদ বর্ণের গোলাকৃতি এক মোহনীয় ফুল, যা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নয়, বর্ষার আগমনী দূত হিসেবেও পরিচিত। চাঁদপুর জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই এখনও কোথাও কোথাও টিকে আছে এই ফুল গাছের অস্তিত্ব, যদিও আগের মতো সংখ্যায় নেই।

মতলব উত্তর ও দক্ষিণ :

মতলব দক্ষিণের নায়েরগাঁও, উপাদী ও খাদেরগাঁও এলাকায় কিছু পুরানো কদম গাছ দেখা যায়। বর্ষার শুরুতে এসব গাছে ফুটে উঠে কদমের সৌন্দর্য। স্কুলপড়ুয়া শিশুরা ফুল কুড়াতে মেতে উঠে। মতলব উত্তরে ধনাগোদা নদীর পাড় ঘেঁষা গ্রামের পথের পাশে এখনও মাঝে মাঝে চোখে পড়ে কদম গাছের সারি।

হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি :

হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল, কালচোঁ এবং গন্ধর্ব্যপুর এলাকায় গ্রাম্য সড়কের পাশে, স্কুল মাঠের আশপাশে কিছু কদম গাছ টিকে আছে। শাহরাস্তি সদরে কম হলেও নাওড়া, চিতোষী এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে সম্প্রতি কিছু কদম চারা রোপণ করা হয়েছে।

ফরিদগঞ্জ :

কৃষিপ্রধান উপজেলা ফরিদগঞ্জে একসময় অনেক কদম গাছ দেখা যেতো। ভীমরুলি, গোবিন্দপুর, রূপসা এলাকায় কিছু গাছ এখনও টিকে আছে।

স্থানীয় শিক্ষকেরা জানান, বিদ্যালয়ের গাছ লাগানোর উৎসবে কদম গাছও এখন আবার গুরুত্ব পাচ্ছে।

কচুয়া :

কচুয়া উপজেলার পালাখাল ও গোহাট গ্রামে বর্ষা এলেই কদম ফুল দেখা যায়। এখানকার অনেক বাড়িতেই এখনও কদম গাছ আছে, যা পারিবারিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে রোপণ করা হয়েছে।

চাঁদপুর সদর ও হাইমচর :

চাঁদপুর সদরের বাগাদী, আশিকাটি ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় কদম গাছ অতীতে বেশি দেখা যেতো। তবে এখন সংখ্যায় কম। হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে জলাবদ্ধতার মাঝে টিকে থাকা কিছু কদম গাছ বর্ষা এলেই নজর কাড়ে।

পরিবেশ ও কৃষি কর্মকর্তাদের মতামত :

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কদম একটি পরিবেশবান্ধব, দ্রুত বর্ধনশীল গাছ। এটি মাটির ক্ষয় রোধ করে, ছায়া দেয় এবং ফুল ও কাঠ উভয় দিক থেকেই উপকারী। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও রাস্তার ধারে কদম গাছ রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই কদম ফুলের স্মৃতি ও অস্তিত্ব রয়েছে। বাস্তবে এটি আজ বিলুপ্তির পথে। কদম শুধু একটি ফুল নয়, এটি বাংলার বর্ষা, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির প্রতীক। কদম গাছ রোপণ ও সংরক্ষণে একযোগে কাজ করলে আবারও চাঁদপুর জেলাজুড়ে ফিরে আসতে পারে কদমের হারানো গন্ধ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়