প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫, ০৮:৪৬
খণ্ডে খণ্ডে অখণ্ড জীবন

ত্রিশতম পর্ব প্রাণবন্ত পঞ্চাশে
ভাটি বাংলার কবি জীবনানন্দ। তাঁর কবিতায় জীবনের নদীর কথা তিনি বার বার বলেছেন। অন্য সবার মতো আমার জীবনেরও এক নদী আছে। সে নদীর স্রোত লক্ষে-অলক্ষে সতত বহমান। কর্ণফুলি হতে মস্কোভা, মস্কোভা হতে মেঘনা; সকল নদীর স্রোতে জীবননদীর সে ফল্গুধারা মিশে আছে স্মৃতিসুধায় প্রীতি নিয়ে। যে জীবনস্রোত কর্ণফুলির আঁতুরঘরে একদিন সূচিত হয়েছিলো, সময়ের ঊর্মিমালায় সে স্রোত অর্ধজীবনের বরমাল্য নিয়ে প্রতীক্ষায় ছিলো মেঘনার পাড়ে। সাধারণত যারা লেখালেখির প্রেমে জীবনকে উপভোগ করে, তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা এগিয়ে আসে জীবননদীর এক বিশেষ ঘাট তথা অর্ধশতকের পথ পরিক্রমাকে স্মৃতিশিলাফলকে ধরে রাখতে। আমারও এমন ক’জন শুভাকাঙ্ক্ষীর সমন্বয় ঘটলো, যারা অর্ধজীবনের উপাখ্যানকে উদযাপনের উৎসবে রূপদান করেছে। দুহাজার তেইশ সালের জানুয়ারির শেষের দিনগুলোর কোনো এক বিকেলে কবি সৌম্য সালেক, মাইনুল ইসলাম মানিক, আশিক, ফরিদ হাসান, কাদের পলাশ ও আরিফ রাসেল আমার বাসায় এলো আড্ডার অভিপ্রায়ে। আমার বাসা তখন লেডি দেহলভী স্কুলের সীমানা প্রাচীর লাগোয়া, আলিম পাড়ায়। বাসার পশ্চিমে কবরস্থান, পূর্বে স্কুল, অনতিদূরে ডা. মোবারক ভাইয়ের ক্লিনিক। বাসায় ঢোকার গেটের সামনে রাস্তাটা কিছুটা প্রশস্ত, কারণ স্কুলের সিংহদ্বার এ জায়গায়। তবে সিংহদ্বার বড় কোনো উপলক্ষ ছাড়া খোলা হতো না। পকেট গেইটের দুয়ার দিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকমণ্ডলী আসা-যাওয়া করতেন। ফলে বাসার গেটের সামনের প্রশস্ত জায়গাটা সবাই স্থায়ী গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান হিসেবে যেন বারোয়ারি বন্দোবস্ত হিসেবে মেনে নিয়েছে। কারো এতে কিছু না এসে গেলেও, আসলো কেবল আমাদের আর কিছু খেলাপাগল কিশোরের। আমরা যারা বাসাটার অন্তর্বাসী, তারা গেট খুললেই প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো গাড়ির অবস্থিতি লক্ষ করতাম। হয় ড্রাইভার উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন, নইলে সিটে বসে দুপা সামনের দিকে উপরে তুলে অশোভন ভঙ্গিতে মোবাইল স্ক্রলে মেতে আছেন। কখনো কখনো আমরা স্বচ্ছন্দে বের হওয়ার প্রয়োজনীয় জায়গাটুকুও থাকতো না। স্থানীয় শিশুকিশোর যারা স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী , তারা মাঝে মাঝে বিকেলে ওই প্রশস্ত জায়গায় কখনও ক্রিকেট, কখনও ফুটবল আর কখনও ব্যাডমিন্টন খেলার চেষ্টা করতো। স্কুলের মাঠে সুযোগ কখনও পেতো, কখনও পেতো না। কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষের ভয় ছিলো, কিশোরদের খেলার সরঞ্জামে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে স্কুল ভবনের পার্থিব সৌন্দর্য। প্রসঙ্গক্রমে বলতেই হয়, একদিন আট-দশজন স্কুলগামী কিশোর অপরাহ্নে ক্রিকেট খেলার সময় পাড়ার একজন সম্মানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ মুরুব্বি তাদের ব্যাট কেড়ে নিয়ে সজোরে ছুড়ে মারেন অপ্রত্যাশিত ক্ষুব্ধতায়। এতে ব্যাটটি নিক্ষিপ্ত হয়ে আঘাত হানে আমাদের বাসার কম্পাউন্ডের ভেতরে থাকা আমের শাখায়। নাতিক্ষুদ্র আমশাখাসহ ব্যাটটি সজোরে ভূপাতিত হয় তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কনিষ্ঠ কিশোরের হাত দুয়েকের মধ্যেই। এতে কিশোরেরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আমার পত্নী, যিনি শিশু-কিশোরদের জন্যে একটি স্বনামধন্য আবৃত্তি সংগঠন পরিচালনা করেন এবং যিনি পুরস্কারের স্বীকৃতি পাওয়া একজন বিদিত নারীনেত্রীও বটেন, তিনি এ ঘটনায় কিশোরদের পক্ষ নিয়ে মমতাময়ী মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ফলস্বরূপ বয়োজ্যেষ্ঠ সম্মানীয় ব্যক্তি তাঁর অকারণ ক্ষুব্ধতার জেরে তার প্রতিবাদের সম্মুখীন হন।
পত্নীর প্রতিবাদ ছিলো জুতসই। আমরা বড়োরা বলি, ছোটরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা মাদকাসক্তি, ইভটিজিং ও ডিভাইসমুখী হয়ে পড়ছে। কিন্তু তাদের আমরা খেলার মাঠ দিতে পারি না, নির্মল চিত্তবিনোদনের সুযোগ দিতে পারি না। অথচ শাসন ও বদনাম দেওয়ার বেলায় কেউ কম যাই না। এ নিয়ে অবশ্য এলাকাবাসীরা একজোট হয়ে আমাদের কিছু কথা শোনানোর চেষ্টা করেছে। তাদের অভিযোগ ছিলো, একজন নারী কেন পাড়ার সবচেয়ে বয়স্ক মুরুব্বিকে হেনস্তা করলো। অথচ ঐ কিশোরেরা সবাই ওনাদেরই কারও কারও সন্তান। তাদের মায়েরা এসে আমার পত্নীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেছে শিশুদের হয়ে প্রতিবাদ করার জন্যে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ছিলো, ভূপাতিত ব্যাটে কোনো কিশোরের অপূরণীয় শারীরিক ক্ষতি হয়ে গেলে। এটা হওয়ার ঝুঁকি ছিলো শতভাগ। এমনিতেও, ঐ বাসায় ওঠার শুরুর কিছুদিনের মধ্যে আমার পত্নী মুক্তা পীযূষের সংগঠনের আবৃত্তি শিক্ষার ক্লাস চলাকালীন তারা বিভিন্ন দোহাই ও অজুহাতে আপত্তি জানাতো। ফলে এক-দেড়ঘন্টার ক্লাসে দুয়েকবার বিরতি দিতে হতো। পরে অবশ্য তারা তাদের চিন্তার দীনতা বুঝতে পেরেছিলেন। নিজেদের উপযুক্ত বাচ্চাদের ভর্তি করিয়ে নিয়েছিলেন আবৃত্তি সংগঠনে।
যাই হোক, বাসার অবস্থান বর্ণনা করতে গিয়ে খেই যেন না হারাই। শুভাকাঙ্ক্ষীদের আড্ডায় সৌম্য সালেক শুরু করলেন কথা। তারপর একে একে সবার তাতে সংশ্লিষ্টতা শুরু হলো। অক্টোবরের দশ তারিখ জীবনের অর্ধশতক উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণ। সে উপলক্ষে একটা কমিটি হলো। কমিটির আহ্বায়ক বানানো হলো চিত্রনির্মাতা ও দৈনিক আদিবাংলার সম্পাদক আরিফ রাসেলকে। বাকিরা তার সদস্য। একটা স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের সিদ্ধান্ত হলো। আমাকে বলা হলো এর লেখক তালিকা তৈরি করে দিতে। স্মারকগ্রন্থের প্রাথমিক নাম ঠিক হলো
‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে।’ নামটা নিয়ে আরিফ রাসেল যখন শাহাদাত ভাইয়ের সাথে দেখা করে, তখন তিনি আরও ভাবতে বললেন। কিন্তু দিনশেষে অন্য কোনো নাম আর কারও পছন্দ হলো না। এটা ‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ নামেই সুস্থির থাকলো। এর উপদেষ্টা সম্পাদক হলেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত আর সম্পাদনা পরিষদে থাকলো আরিফ রাসেল, কাদের পলাশ, মাইনুল ইসলাম মানিক ও ফরিদ হাসান৷
নাম নির্ধারণের পরে তার প্রচ্ছদের বিষয়। প্রচ্ছদ করিয়ে আনালো মানিক। নির্ঝর নৈঃশব্দ্যের প্রচ্ছদে আমার হাল আমলের রিক্তকেশ একটা ছবি প্রাধান্য পেলো। ইউনুছ নাজিমের কাছে পাণ্ডুলিপির যাবতীয় জমা হতে লাগলো। পঞ্চাশজনের লেখক তালিকা বাছাই করা হলো। লেখা পাঠানোর তারিখ জুনের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ হলেও অনেকে সময় নিলেন আরও বেশি। তাগাদা দিয়ে লেখানো হলো কাউকে কাউকে। শেষে লেখা যা পাওয়া গেলো তাতে মোটামুটি দুশো ছাপ্পান্ন পৃষ্ঠার একটা স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ পেলো। তৎকালীন মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর লেখা থেকে শুরু করে সাবেক জেলা প্রশাসক, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কবি, জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদকসহ অনেকেরই লেখা পাওয়া গেলো। এর মধ্যে এমন কয়েকজন লেখা পাঠাতে অপারগ হলেন, যারা লেখা সবার আগে পাঠানোর কথা ছিলো। স্মারকগ্রন্থটাতে জীবনী, ব্যক্তির মূল্যায়ন, সাহিত্যের মূল্যায়নসহ নিবেদিত কবিতাও স্থান করে নিলো। আবদুস সবুর মন্ডল, জাফর ওয়াজেদ, রাশেদ রউফ, ওবায়েদ আকাশ, হরিদাস ঠাকুর, ইলিয়াস ফারুকী, জাকির হোসেন কামাল, মনজুর কাদের, মিজান খান, ফজিলাতুন্নেছা রুনু, রুবি বাড়ৈ, মনসুর আজিজ প্রমুখের লেখায় গ্রন্থটি সমৃদ্ধি পেলো। তার পাশাপাশি স্থানীয় লেখক বন্ধু অগ্রজ-অনুজরা তো আছেই। ফরিদের নেওয়া একটা সাক্ষাৎকারও ছাপানো হলো। বই আলোচনায় মাহবুবা হক কুমকুম আপা, সৌম্য সালেক, মানিক, কাদের পলাশ, জাহিদ নয়ন, সজীব মোহাম্মদ আরিফ, মরিয়ম আক্তার, মুক্তা পীযূষেরা অংশ নিলেন। হাসান আলী ভাই ও কাজী শাহাদাত ভাইয়ের লেখা দুটো স্মারকগ্রন্থে আনলো পূর্ণতা। ইকবাল পারভেজের নিবেদিত কবিতা ছিলো অমূল্য প্রাপ্তি। পরিবারের পক্ষ থেকে আমার ছোট বোন রূপার স্মৃতিমাখা লেখা শৈশবকে জাগিয়ে রাখলো চির নবীন করে। ভাগিনা আশীষ, বন্ধু শ্যামল সরকার ও সরোয়ার কামাল পাশার লেখাতেও আমি স্থান পেলাম। শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুপ্রতিম রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আমাকে নিয়ে লিখলেন।
বইতো হলো। এবার চাই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অতিথি কাকে করা যায়। ফরিদ ও মুক্তা পীযূষের ইচ্ছা, তারা মন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করে দেখবেন। এ দায়িত্ব ফরিদ নিলো। তবে ওনার সময় পাওয়া সাপেক্ষে অনুষ্ঠান দশ অক্টোবর না হয়ে পেছানো হতে পারে। যাই হোক, চাঁদপুরের সাংবাদিকতার দেড়শো বছরের ইতিহাস নিয়ে কাদের পলাশের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মহোদয় আসলেন। আরিফ রাসেল ও ফরিদ ওই অনুষ্ঠানস্থলে তাঁকে ধরলো সময় নিতে। তিনি রাজি হলেন। তেরো অক্টোবর বিকেল পাঁচটায় তিনি সময় দিলেন। অনুষ্ঠানস্থল ঠিক হলো চাঁদপুর প্রেসক্লাবের তিনতলার মিলনায়তন। তৎকালীন প্রেসক্লাব সভাপতি আহসানউল্লাহ ভাইয়ের বদান্যতায় তা পাওয়া গেলো সহজে। কিন্তু মন্ত্রী মহোদয়ের স্থানীয় রাজনৈতিক সচিব তাতে বাগড়া দিলেন। তিনি বললেন, মন্ত্রী মহোদয় তিন তলায় উঠতে পারবেন না। ব্যাস্। লেগে গেলো একটা সংশয়। অবশেষে সকল সংশয় জয় করে তিন তলাতেই তিনি উঠলেন এবং বেশ কিছু মূল্যবান সময় তিনি দিয়েছেন। যদিও কথা ছিলো কুড়ি মিনিটের, তিনি প্রায় ঘন্টাখানেক ছিলেন। কাজী শাহাদাত ভাইয়ের সভাপ্রধানে উদযাপিত অনুষ্ঠানে এসেছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অজয় ভৌমিক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার, বিজয়মেলার মহাসচিব ও চতুরঙ্গের ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ, বাবুরহাট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রমুখ। ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসানউল্লাহ। আরও অনেকেই ছিলেন, যাদের কাছে ঋণ অফুরান। ঢাকা থেকে মিজান ভাই, হাসান ভাই, মনসুর আজিজ বন্ধুবর এসেছিলেন। ছিলেন নাট্যজন ও সাংবাদিক শরীফ ভাই, মাহবুবুর রহমান সুমনসহ আমন্ত্রিত মিডিয়া ব্যক্তিত্ববৃন্দ। রবীন্দ্রভারতীর সংগীত বিভাগের ছাত্রী মৌমিতা আচার্যী ছিলেন সংগীত পরিবেশনে। আরও ছিলো বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের শিল্পী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সহ-সভাপতি রোটারিয়ান উজ্জ্বল হোসাইন অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করে আমার প্রতি তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন অকপটে। সার্বিক সহযোগিতায় মাহমুদা ভাবী, দিদি মীরা রায় চৌধুরী, আয়েশা আক্তার রূপা আপা, গাজী মুনসুর আজিজ ভাইয়ের ভাগিনা সৈকত (সিদ্দিক) এবং বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্নেহভাজন মিঠুন বিশ্বাস ছিলেন অনিবার্যভাবে।
অনেকের কাছেই এ অনুষ্ঠানটা অভিনব ছিলো। মন্ত্রী মহোদয় তাঁর বক্তব্যে সে সংশয় দূর করে দিলেন। গুণীদের জীবৎকালে সম্মান জানানোর বিষয়টি সমাজে প্রতিনিয়ত চর্চিত হওয়ার কথা তিনি জোর দিয়ে বলেন। পাশাপাশি চাঁদপুরের ইলিশ নিয়ে আমার লেখাগুলোর কথা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক পাতার বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে যাতে বিভিন্ন জনের লেখা ও কথা স্থান পায়। ‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’র অনুষ্ঠানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ মনে করিয়ে দেয়, এখনও সাহিত্যের আবেদন, সংস্কৃতির আবেদন মানুষের মনে ঝিরিধারায় প্রবহমান আছে।‘প্রাণবন্ত পঞ্চাশে’ গ্রন্থের চমৎকার এক রিভিউ লিখেছেন কবি জাহিদ নয়ন। জাহিদ নির্মোহভাবে নাতিদীর্ঘ আলোচনায় বইটাকে তুলে ধরেছেন। এ লেখাটি জাতীয় পত্রিকা দৈনিক সংবাদের বৃহস্পতিবারের সাহিত্য সাময়িকীতে ছাপা হয়। কাজী শাহাদাত ভাই দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের পক্ষ থেকে ক্রোড়পত্রের একটা ছাপানো ফেস্টুন আমাকে উপহার দেন, যা ছিলো অনন্য উপহার। তিনি আরও একটা উপহার আমাকে দেন। তা হলো, প্রাণবন্ত পঞ্চাশকে কেন্দ্র করে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের সাহিত্য পাতায় আমার জীবনকথা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা। তাঁর তাগাদায় ও অনুপ্রেরণায় শুরু হলো আমার ধারাবাহিক জীবনগদ্য ‘ খণ্ডে খণ্ডে অখণ্ড জীবন।’ এর প্রথম খণ্ড ছাপা হয় দুহাজার তেইশের দশ অক্টোবর, সোমবার। প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, নজরুলকে ঔপন্যাসিক বানিয়েছিলেন সওগাত সম্পাদক নাসিরউদ্দীন। আর আমাকে বিতর্ক সাহিত্যিক ও আত্মজীবনীকার বানিয়েছেন কাজী শাহাদাত। ‘খণ্ডে খণ্ডে অখণ্ড জীবন’ তাই গ্রন্থাকারে ভবিষ্যতে প্রকাশিত হলে তাঁকেই আমি তা উৎসর্গ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি। এটার রচয়িতা আমি হলেও রূপকার অদ্বিতীয়ভাবে তিনি। (চলবে)