শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ১২:৫৩

প্রিয়ার প্রিয় বিড়াল

মো. তাইয়্যেব হোসাইন
প্রিয়ার প্রিয় বিড়াল

প্রিয়া ছিল অত্যন্ত সহজ-সরল মেয়ে, যার জীবনে একমাত্র সঙ্গী ছিল বিড়াল। ছোটবেলা থেকে সে বিড়ালদের প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করত। সকালে বিড়ালদের খাওয়ানোর পর, সারাদিন তাদের সাথে খেলতে এবং কথা বলতে ভালোবাসত। বিড়াল গুলোও প্রিয়াকে ভালোবাসতো, তার কাছ থেকে এক মুহূর্তও দূরে থাকতে চাইতো না। প্রিয়ার সাথে সময় কাটানো মানে ছিল শান্তি ও সুখের এক অদ্ভুত অনুভুতি।

একদিন, ক্লাস ৪-এ পড়া নাহিদ আর লাবিব তার কাছে এল। তারা তাদের হাতে তিনটি ছোট বিড়াল ছানা নিয়ে এসে বলল, “আপু, এগুলো আমাদের খুব প্রিয় ছিল, কিন্তু মা বিড়ালটি মারা গেছে। আমরা জানি, আপনি এগুলোকে ভালোভাবে দেখবেন।” প্রিয়া তাদের কথা শুনে সান্ত্বনা দিল এবং তিনটি বিড়াল ছানাকে আশ্রয় দিল।

প্রিয়া জানতো, এই ছোট্ট প্রাণীগুলোর জন্য সে কেবল একটি নিরাপদ আশ্রয়ই নয়, বরং মা- এর মমতা দিতে পারবে। সে তাদের সাধ্যমতো যত্ন নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। তিনটি ছোট বিড়াল ছানাকে সে নিজের হাতে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করল। কষ্ট করে সিরিজ দিয়ে তাদের গরম দুধ খাওয়াল। সেই সময় প্রিয়া অনুভব করল, বিড়াল ছানাগুলো তাকে কতটা প্রয়োজনীয়। যেন তার জীবন আরও একবার পূর্ণ হলো।

কিন্তু কপাল খারাপ। প্রিয়া যতই চেষ্টা করুক না কেন, সময়টা তাদের পক্ষে ছিল না। তিন দিন পার হওয়ার আগেই, তিনটা বিড়াল ছানা মারা গেল। একেবারে প্রিয়ার সামনে, তাদের জীবনের আলো নিভে গেল। প্রিয়া আর কিছুই করতে পারল না। তার মনের মধ্যে এক অদ্ভুত শূন্যতা অনুভব হলো। কান্না থামছিল না। তার অশ্রু একের পর এক গড়িয়ে পড়ছিল, যেন তার হৃদয়ের ভিতর গভীর একটা খালি জায়গা তৈরি হয়ে গেছে।

এটি প্রিয়ার জন্য এক গভীর আঘাত ছিল। ছোট্ট বিড়াল ছানাগুলোর জন্য সে এত ভালোবাসা দিয়েছিল, তারপরেও তাদের বঁাচানো গেল না। সে ভাবলো, জীবনে অনেক কিছুই অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে। কিছু কিছু মুহূর্তে আপনি যা চান, তা হয় না। তার মতো স্নেহশীল হৃদয়ের জন্য এতোটা কষ্ট সহ্য করা কঠিন ছিল।

এরপর প্রিয়া দীর্ঘ সময় বিড়াল গুলোর পাশে বসে রইলো। একে একে ভেবেছে তাদের কতো অল্প সময়ের মধ্যে সে কত কিছু শিখেছে। জীবনের অমূল্য শিক্ষা হয়তো এখানে ছিল— জীবনের সঠিক পথ কখনো সহজ নয়। তবে জীবন চলতে থাকে। সেই ক্ষতি বা কষ্টও হয়তো কোন এক সময় কিছু শিক্ষা দেবে।

তবে, প্রিয়া জানতো, তার জীবন এখনো পূর্ণ হয়নি। তার কাছে বিড়ালদের জন্য যা কিছু ছিল, তা তার হৃদয়ে ছিল। সে সিদ্ধান্ত নিল, পরবর্তী সময়ে যতই ছোট প্রাণী আসুক, সে তাদের যত্ন নিবে, যত্নের পরও যদি কিছু ঘটে, তবে সে তার ভালোবাসা এবং সহানুভূতির সাথে সবার পাশে দঁাড়াবে।

প্রিয়া বুঝতে পারলো জীবনে কিছু কিছু ভালোবাসা অস্থায়ী হতে পারে, কিন্তু যে ভালোবাসা মনের গভীরে থাকে, তা চিরকাল থাকবে। বিড়াল ছানাগুলোর মৃত্যু তার হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করেছিল, কিন্তু সেই ক্ষত তাকে আরও ভালো মানুষ হতে শিখিয়েছিল।

প্রিয়া ঠিক করেছিল, জীবনে কিছুই স্থায়ী নয়, তবে ভালোবাসা কখনো মুছে যায় না। তা চিরকাল অটুট থাকে।

ছবি : ০১

রক্তে রাঙা গাযা

আলভী

রাত জাগে গাযা, আগুনে পোড়ে,

শিশুরা কঁাদে, মায়ের কোলে।

নক্ষত্র ভাঙে, আশায় নেই আলো,

বোমার শব্দে নীরবতা কালো।

ছোট্ট ফুটবল, এখন রক্তে মাখা,

হাসির বদলে শুধু কান্নার ধ্বনি রাখে।

স্কুলের খাতা, এখন ছেঁড়া ছাই,

স্বপ্নগুলো গলে যায় বিষাক্ত বাষ্পে যাই।

ইসরায়েলি আকাশ থেকে নামে মৃত্যু,

বিনা নোটিসে শেষ হয় জীবনযুদ্ধ।

বিবেক গুম, বিশ্ব চুপচাপ,

কত প্রাণ হারাল— কে রাখে হিসাব?

একজন পিতা খেঁাজে সন্তানের হাড়,

একজন মা কবর দেয় নিজ হাতে তার।

জীবন এখানে চরম পরীক্ষা,

নির্যাতনে ডুবে যায় প্রতিটি দিগন্ত রেখা।

তবুও গাযা গান গায়Ñ

জীবন চায়, প্রেম চায়, ভোরের রায়।

জ্বলুক ঘর, পুড়ুক শহর,

আমরা আছি— প্রতিরোধের গহর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়