বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:০৩

নষ্ট হচ্ছে রংসহ কল, কমোড, বাতি : জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অধীনে ৪টি গণশৌচাগার বন্ধ এক বছর

তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুর
নষ্ট হচ্ছে রংসহ কল, কমোড, বাতি : জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অধীনে ৪টি গণশৌচাগার বন্ধ এক বছর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সোনাপুর ইউপির রাখালিয়া বাজারে ১টি হাইস্কুল, ২টি প্রাথমিক স্কুল ও মাদরাসা, ৪টি ব্যাংক-বীমা, ৬টি হোটেল সহ চার শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মসজিদের পাশে পরিত্যক্ত শৌচাগারে যেতে হয় মানুষকে। দূর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হয়ে উঠেছে। তার পাশেই তালাবদ্ধ নতুন গণশৌচাগারটি। নির্মাণ কাজ বহু আগে শেষ হলেও এখনও তা তালাবদ্ধ। গণশৌচাগারটির রংসহ নষ্ট হচ্ছে অন্যসব কল, কমোড, বাতি।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, গত ১ বছর আগে ৪টি গণশৌচারগার (৬০ লাখ টাকা ব্যয়) নির্মাণ শেষ হলেও ইজারা সংক্রান্ত জটিলতার কারণেই তা তালাবদ্ধ রয়েছে। মসজিদ কমিটি, না বাজার কমিটি, না পরিষদের তত্ত্বাবধানে চলবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েই ঝামেলা চলছে।

মেঘনার নদী পাড়ে আলতাফ মাস্টার ইলিশা ঘাট, মোল্লারহাট বাজার, শহরের বাসটার্মিনাল এলাকায় একই অবস্থায় পড়ে আছে আরও ৩টি গণশৌচাগার। শৌচাগারগুলো প্রায় বছর খানেক ধরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় নষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা যায়, রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া বাজারটি ব্যস্ততম এলাকা। গণশৌচাগারের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু প্রায় এক বছর তালাবদ্ধ রায়পুর শহরের একমাত্র বাসটার্মিনালে ঢুকতেই হাতের বাম পাশে, মেঘনা নদীর পাড়ে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের আলতাফ মাস্টার ইলিশ মাছ ঘাট (মিনি কক্সবাজার) থেকে কিছুটা দূরে, মেঘনা নদী সংলগ্ন চরবংশী ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারের পাশে শৌচাগার নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের যেন শেষ নেই।

উপজেলা শহরে কোনো কাজে আসা হাজারও মানুষজনের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে চরম বেকায়দায় পড়েন। বাসটার্মিনালের পরিত্যক্ত শৌচাগারে ঢুকলেই যেন আতংকে থাকতে হয়। ভোগান্তির সমাধানে কেউ এগিয়ে আসছে না।

দেখা গেছে, উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ভাঙ্গন কবলিত মেঘনা নদীর পাড়ে রায়পুর উপজেলার একমাত্র বড় ইলিশঘাট এবং বিনোদনকেন্দ্র (মিনি কক্সবাজার)। প্রতিনিয়ত প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকায় এলাকাটি ব্যস্ততম হিসেবে পরিচিত। পাউবোর জায়গায় তৈরি করা হয় একটি গণশৌচাগার। কাছে গিয়ে দেখা যায়, এর দুই দিকের প্রবেশ মুখে দরজায় তালা ঝুলছে।

অপরদিকে, আরেক ব্যস্ততম স্থান দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারে গরুহাটা ও কাঁচাবাজার এলাকা। সেখানেও একটি গণশৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। সেটারও একই অবস্থা। ঝুলছে তালা। নির্মাণকাজ শেষ হলেও অজ্ঞাত কারণে উদ্বোধন করা হচ্ছে না গণশৌচাগারটি। এতে হাটবাজারে আসা মানুষ পড়েন বেকায়দায়। নিরুপায় হয়ে খোলাস্থানেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হচ্ছে তাদের। তবে এতে নারীরা পড়েন চরম কষ্টে।

1758106271111

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে পৌরশহরের বাসটার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৪টি গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়। আর এসব কাজ বাস্তবায়ন করেছে লক্ষ্মীপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এগুলোর নির্মাণ ব্যয় ১৪ লক্ষ টাকা করে মোট ৫৬ লাখ টাকারও বেশি। পৌর শহরসহ ব্যস্ততম ৪টি স্থানে নির্মাণকাজ প্রায় বছরখানেক আগে শেষ হলেও ব্যবহারের জন্যে এখানো তালা খোলা হয়নি।

রাখালিয়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল কাদের ও মাসুদ আলম বলেন, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আমাদের বিভিন্ন মসজিদে বা পাশের স্কুল বা ক্লিনিক ও হাসপাতালের টয়লেটে দৌড়াতে হয়। বেশ ভোগান্তিতে আছি।

রায়পুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন বাহার ও ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আইনুল কবির মনির বলেন, নির্মাণ শেষ হওয়া বাসটার্মিনাল এলাকার ভেতরে গণশৌচাগার পাবলিকের জন্যে উন্মুক্ত জরুরি।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিলকিস আক্তার, সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন ও রায়পুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রমিজ উদ্দিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। তবে জেলার প্রক্কলনিক সোহেল চন্দ্র দাস বলেন, রায়পুর পৌরসভায় বাসটার্মিনাল সহ চারটি গণশৌচাগারের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন হয়। চারটির কাজ শেষ হলেও সেগুলো কবে খুলে দেওয়া হতে পারে তা উপজেলা কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।

রায়পুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ মোর্শেদ জানান, বাস টার্মিনালের ভেতরে গণশৌচাগার নির্মাণ শেষ হওয়ার এক বছর ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ইজারা নিয়ে কিছুটা ঝামেলার কারণে তালা খুলে দেয়া যাচ্ছেনা এবং সহসায় সমাধান হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়