মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫৭

ফরিদগঞ্জে বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মিথ্যাচার

শামীম হাসান।।
ফরিদগঞ্জে বৃদ্ধা কোহিনুর বেগমের মৃত্যু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মিথ্যাচার
ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালের প্রবেশমুখ।

ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোহিনুর বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। মৃত্যুর পর স্বজনদের অভিযোগ ছিলো চিকিৎসকের অবহেলা। কিন্তু এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেওয়া বিতর্কিত বক্তব্য নতুন করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।

হাসপাতালের অন্যতম মালিক ডা. সাদেকুর রহমান গণমাধ্যমে দাবি করেন, কোহিনুর বেগমকে প্রথমে অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করার পরও স্বজনরা তাকে আবার ডায়াবেটিক হাসপাতালে এনে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। তিনি এমনকি মৃত্যুর পেছনে ‘ভিন্ন উদ্দেশ্য’ থাকার ইঙ্গিতও দেন। কিন্তু কোহিনুর বেগমের ছেলে স্বপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। ডায়াবেটিক ছাড়া আমরা আর কোথাও মাকে নেইনি। অন্য হাসপাতালে নিলে সেখানে অবশ্যই রেকর্ড থাকতো।”

ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত থেকে। সেদিন স্বপন ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত চিকিৎসক ডা. হুমায়ুনকে মায়ের অসুস্থতার কথা জানালে তিনি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী কোহিনুর বেগমকে সরাসরি ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় তার।

ডা. হুমায়ুন বলেন, “রোগী অন্য কোনো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কিনা সে বিষয়ে আমার কোনো তথ্য নেই।” কিন্তু হাসপাতাল মালিক ডা. সাদেকুর রহমান দাবি করেন রোগী অন্য হাসপাতালে ছিলেন। ডা. সাদেকুর রহমানের এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা ফরিদগঞ্জের আরেক বেসরকারি হাসপাতাল ‘লাইফ জেনারেল’-এ যোগাযোগ করলে চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসে। হাসপাতালটির মার্কেটিং ও অ্যাডমিন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহেল মাহমুদ জানান, “আমাদের সফটওয়্যারভিত্তিক সিস্টেমে প্রতিটি ভর্তি রোগীর রেকর্ড থাকে। যাচাই করে দেখেছি, কহিনুর বেগম নামে গত কয়েকদিনে কোনো রোগী ভর্তি হয়নি।”

এই তথ্য প্রকাশের পর স্পষ্ট হয়ে যায়, হাসপাতাল মালিকের বক্তব্য ছিলো অসত্য। এর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার জবাবদিহি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হয়। কেবল একটি মৃত্যু নয়, এই ঘটনা আবারও সামনে এনেছে ফরিদগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বহীনতা ও মিথ্যাচারের ভয়াবহ চিত্র।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়