মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৮

মো. সেলিম : কৃতী সাঁতারু, সাঁতার প্রশিক্ষক ও সাঁতার সংগঠক

ক্রীড়াকণ্ঠ প্রতিবেদন
মো. সেলিম : কৃতী সাঁতারু, সাঁতার প্রশিক্ষক ও সাঁতার সংগঠক

একজন সাঁতার অন্তঃপ্রাণ মানুষ হচ্ছেন মো. সেলিম। সাঁতারকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে তাঁর জীবন। তিনি কৃতী সাঁতারু, যে পরিচয়ে তিনি একজন সাঁতার প্রশিক্ষক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি চাঁদপুরের সাঁতার সংগঠনগুলোতে সক্রিয় থেকে নিজেকে সাঁতার সংগঠক হিসেবে পরিচিত করেছেন। সম্প্রতি তিনি চাঁদপুরের সবচে' পুরানো সাঁতার সংগঠন চাঁদপুর সুইমিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এছাড়া অরুন নন্দী সুইমিং ক্লাব পুনর্গঠনেও দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন। চাঁদপুর কণ্ঠের পাক্ষিক আয়োজন 'ক্রীড়াকণ্ঠ' বিভাগ থেকে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়, নিচে সেটি তুলে ধরা হলো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : সাঁতার শিখেছেন কতো বছর বয়সে, আর প্রথম প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলেন কবে? সাঁতারে আপনার উল্লেখযোগ্য সাফল্য কী কী?

মো. সেলিম : সাঁতার শিখেছি ছয় বছর বয়স থেকে। প্রথম প্রতিযোগিতায় ১৯৮৭ সালে নাম লিখিয়েছি। উল্ল্যেখযোগ্য সাফল্য : ২০ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ, ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সাঁতারে সুনামের সাথে অংশগ্রহণ, আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন। আমার জন্ম তারিখ ১৪/০১/১৯৭৮।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আমরা যদ্দুর জানি, আপনি একজন সাঁতার প্রশিক্ষক। বর্তমানে কোথায় কতোদিন কী পদে কর্মরত আছেন?

মো. সেলিম : ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনে নবিশ সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পাশাপাশি ২০০৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে খ্যাতিমান সাঁতারু অরুন কুমার নন্দী ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত করেছিলেন। বর্তমানে ওখানেই স্থায়ীভাবে সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত আছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনার মতে, শিশু থেকে সববয়সী মানুষের জন্যে সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা কতোটুকু?

মো. সেলিম : ১০০% সাঁতার শেখা দরকার। যেহেতু আমরা নদীমাতৃক দেশে অবস্থান করছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরের সাঁতারের অতীত ঐতিহ্যের সাথে বর্তমান অবস্থার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করুন।

মো. সেলিম : চাঁদপুরে সাঁতারের ঐতিহ্য অপরিসীম। যেখানকার কৃতী সন্তান আ. মালেক ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী, অরুন নন্দী অবিরাম সাঁতারে বিশ্ব রেকর্ডধারী ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত, বাদশা ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতারে কৃতিত্ব প্রদর্শনকারী, সে তুলনায় পরবর্তী সময়ের সাঁতারুদের তেমন কৃতিত্ব নেই। অতি সম্প্রতি চাঁদপুরের সাঁতারু নুরুল ইসলাম নূরু ভারতের মুুর্শিদাবাদে ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় ২য় স্থান অর্জন করে চাঁদপুরের সাঁতারে নূতন করে আশার সঞ্চার করেছেন।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনারা সম্প্রতি চাঁদপুর সুইমিং ক্লাব ও অরুন নন্দী সুইমিং ক্লাব পুনর্গঠন করেছেন? উদ্দেশ্য-লক্ষ্য কী?

মো. সেলিম : চাঁদপুরের খুদে ও উদীয়মান সাঁতারুদের প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে চাঁদপুরের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা।

ক্রীড়াকণ্ঠ : অতীতে চাঁদপুরে সাঁতারের গৌরবজনক অধ্যায় নির্মাণে যাঁরা যাঁরা অবদান রেখেছেন, তাঁদের নাম বলুন। আর বর্তমানে কারা সম্ভাবনাময় ও প্রতিশ্রুতিশীল সাঁতারু তাঁদের নাম বলুন।

মো. সেলিম : অতীতে চাঁদপুরের সাঁতারে অবদানকারী যেমন ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী আ. মালেক, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁতারু অরুন কুমার নন্দী এবং ঢাকা-চাঁদপুরে দূরপাল্লার সাঁতারে অংশগ্রহণকারী বাদশা মিয়া, রোকন উদ্দিন ভূঁইয়া ও মো. ছানাউল্লাহ খান, বর্তমানকার প্রতিশ্রুতিশীল সাঁতারু নুরুল ইসলাম নূরু, মাঈনুদ্দিন, মো. হোসেন, শুভ, মিঠু, হাসানাত রহমান প্রমুখ।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরের ঝিমিয়ে পড়া সাঁতারকে পুনরুজ্জীবিত করতে কী কী করা দরকার বলে আপনি মনে করেন? আপনাদের সাঁতার সংগঠনগুলো কি কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারে?

মো. সেলিম : তৃণমূল থেকে বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করতে হবে। এক্ষেত্রে সাঁতার সংগঠনগুলো সাঁতার প্রশিক্ষণসহ প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার আয়োজন ও অংশগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুর সুইমিং ক্লাবের সদস্য মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নুরু বিশ্বের দীর্ঘতম ৮১ কিলোমিটার সাঁতার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছেন। এতে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আপনি কি মনে করেন তাঁর এই কৃতিত্ব চাঁদপুরের সাঁতারের পুনরুজ্জীবনে প্রভাব ফেলবে?

মো. সেলিম : যে কোনো কৃতিত্বই প্রশংসার দাবিদার। আর সে যদি হয় নিজ জেলার, তাহলে তো আর কথাই নেই। বিশ্বের দীর্ঘতম ৮১ কিলোমিটার সাঁতারে চাঁদপুরের সন্তান মো. নুরুল ইসলাম নূরুর সাফল্যে আমরা গর্বিত। তাঁর এ কৃতিত্ব চাঁদপুরের সাঁতারের পুনরুজ্জীবনে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনার পরিবার সম্পর্কে কিছু বলুন।

মো. সেলিম : আমার পরিবারে আমার মা, আমরা ৩ ভাই ও ৪ বোন মিলে সবাই সবার সংসারে ভালোই আছি।

আমার ভাইদের মধ্যে আমি তৃতীয়। আমার স্ত্রী ও ১ ছেলে নিয়ে মায়ের সাথে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে অবস্থান করছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আর কিছু বলবেন কি?

মো. সেলিম : চাঁদপুরের সাঁতারে হারানো ঐতিহ্যের মতো ভবিষ্যতেও উজ্জ্বল সম্ভাবনা কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়