শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ০৭:৫৪

মাদক নির্মূলে আমার ভাবনা

মোহাম্মদ শামছুল আলম সূর্য
মাদক নির্মূলে আমার ভাবনা

মাদক একটি জীবননাশক নেশাদ্রব্যের সমষ্টিগত নাম, যা ক্যান্সারের ভাইরাস থেকেও মারাত্মক। ক্যান্সার একটি ব্যক্তি জীবনকে সংকটাপন্ন করে, কিন্তু মাদক শুধু ব্যক্তিই নয়, একটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সংকটাপন্ন করে তোলে। মাদকের কুফলে বহু ব্যক্তি ও পরিবার দিনে দিনে মাসে মাসে বছরে বছরে যুগে যুগে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মাদক আইনগত নিষিদ্ধদ্রব্য, যা বহন, বিক্রয়, সেবন ও মজুদ আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি আইনগত নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ হওয়ার পরও এর বিক্রয় ও বিস্তার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা যাচ্ছে না, যার কারণে এখনো অনেকে মাদক ও মাদকাসক্তির কারণে নিজে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে, সেই সাথে পরিবার ও সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। মাদকের প্রভাবে একটি পরিবারের সুখ, আনন্দ, হাসি, খুশি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যক্তিকে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করে। মাদক ব্যক্তিকে নিজের পরিচয়, অবস্থান, যোগ্যতা, সক্ষমতা, ভবিষ্যৎ সব কিছু ভুলিয়ে নিজেকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। সেই সাথে মা, বাবা, ভাই-বোনের স্বপ্নকে মাটিচাপা দিয়ে পরিবারের ওপর পাহাড়সম বোঝা হয়ে দঁাড়ায়। মাদক একজন ব্যক্তি ও পরিবারকে ধ্বংসের সাথে সাথে সমাজকেও বিশৃঙ্খল করে তোলে, যা একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে বড়ো বাধা হয়ে দঁাড়ায়। তাই মাদক নির্মূল করা অতীব জরুরি। মাদক নির্মূলে আইন থাকা সত্ত্বেও তা পুরোপুরি নির্মূল করা যাচ্ছে না। তাই মাদকের চূড়ান্ত নির্মূলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি, কর্মপন্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

যেমন :

আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন

বিচারিক কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বিদ্যমান আইনে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন, বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড থাকা সত্ত্বেও মাদক পুরোপুরি নির্মূল হচ্ছে না। তাই মাদকের মামলাগুলোর জন্যে আলাদা ট্রাইবুনাল গঠন করে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকের সাথে সম্পৃক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে এই অবৈধ কাজ থেকে অনেকেই বিরত থেকে মাদক নির্মূলে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এতে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে।

পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও কারাগার কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় সাধন করা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত কোনো মাদক ব্যবসায়ী যেন আদালতে প্রেরণের সাথে সাথে জামিন না পায় সেই ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে।

মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের পর আদালতে প্রেরণের সময় মামলা এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে আইনের ফঁাক ফোকরে জামিন প্রাপ্তিতে সহায়ক না হয় এবং খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে হবে, যাতে মামলার ফলাফল চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়।মাদকের আসামি কারান্তরীণ হওয়ার পর কারাগারে যাতে কোনো ধরনের অনৈতিক সুযোগ সুবিধা না পায় সে ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে যদি মাদকের সাথে সম্পৃক্ত পাওয়া যায়, সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার, চাকরিচ্যুত ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আদালত

বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে খুব দ্রুত সময় (৩০/৬০/৯০ কার্যদিবস)-এর মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার ব্যবস্থাগ্রহণ করা, মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীকে আটকের পর আদালতে প্রেরণ করার সাথে সাথেই যেন জামিন মঞ্জুর না করা হয়, বিশেষ মানবিক প্রয়োজন ব্যতীত জামিন যেন না দেওয়া হয় এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে মামলার নিষ্পত্তি করা যায় সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সাক্ষ্যপ্রমাণে প্রমাণিত হলে আইনের ধারা মোতাবেক শাস্তি নিশ্চিত করা। মাদকের শাস্তি যথাযথ নিশ্চিত হলে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী অবৈধ এ কাজ করার সাহস হারিয়ে ফেলবে। ফলে সমাজ, রাষ্ট্র থেকে মাদক নির্মূল হতে বাধ্য হবে।

কারাগার

মাদক মামলার আসামী ও কয়েদির জন্যে কারাগারে আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে তারা ২৪ ঘন্টা কক্ষের মধ্যে বন্দী থাকবে, পরিবারের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা থাকবে সপ্তাহে বা ১৫দিনে বা মাসে একবার। যখন তারা কারাগারে দেখা- সাক্ষাতে পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে, তখন এই শাস্তি তাদের মনে কষ্ট, ভয় ও হতাশার সৃষ্টি করবে। যদিও জামিন বা খালাস বা সাজাপ্রাপ্তির পর মুক্তি পায়, তখন কারাগারের ভেতরের জীবনের কথা চিন্তা করে নতুন করে মাদকের মত অবৈধ পেশায় জড়িত হওয়ার সাহস থাকবে না। বর্তমানে মাদক কারবারিরা কারাগারে আরাম আয়েশে থেকে সেখান থেকেই বাইরে তাদের মাদকের কারবার দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে, যার কারণে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। একজন মাদক কারবারি যখন দেখবে মাদকের অবৈধ অর্থে বাইরে ও কারাগারের ভেতরে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যাচ্ছে, তখন তাকে এ পেশা থেকে নিবৃত্ত করা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। তাই মাদক মামলার আসামি বা কয়েদিদের সাথে উপরোল্লিখিত ব্যবস্থাগ্রহণ করা যেতে পারে। সেই সাথে একজন ফঁাসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে যেভাবে কারাগারে কনডেম সেলে রাখা হয়, ঠিক তেমনি মাদক মামলার আসামি ও কয়েদিদেরকে এমন সেলে রাখতে হবে, যাতে সে বুঝতে পারে তার কারণে সমাজে যেমন মাদকের কুফল ছড়িয়ে ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ ধ্বংস হচ্ছে, ঠিক তেমনি তার অপরাধের শাস্তিও তাকে পেতে হচ্ছে, তবেই মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে।

অভিযান পরিচালনা

জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে মাদকের বিরুদ্ধে ঘন ঘন অভিযান পরিচালনা করতে হবে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীকে যতক্ষণ না পর্যন্ত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।

সামাজিকভাবে প্রতিহতকরণ

যে এলাকায়, ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে কোনো মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়, তাকে/তাদেরকে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে কিংবা এদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীকে সহায়তা করতে হবে, সামাজিকভাবে এলাকার সকল ব্যক্তি ও মুরুব্বি নিয়ে বসে তাকে ও তার পরিবারকে বয়কট করতে হবে, তাদের একঘরে করে দিতে হবে, মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর পরিবারের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রহিত করতে হবে, তাদের পরিবারের সাথে বিবাহ দেওয়া নেওয়া বন্ধ করতে হবে, মাদককে সমাজের জন্যে চরম ঘৃণিত বিষয় হিসেবে গণ্য করে সামাজিকভাবে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবেই সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে মাদক নির্মূল হতে বাধ্য হবে।

সামাজিক আন্দোলন

প্রতিটি এলাকায়, ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি এলাকায়-ওয়ার্ড-ইউনিয়নে সামাজিক সংগঠন (যদি থাকে), ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া সংগঠন, সেবামূলক সংগঠন ও স্থানীয় যে কোনো সমিতি বা সমবায় সমিতি যদি থাকে, তাদেরকে নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ করে এলাকাবাসীকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেই সাথে পুলিশ প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিগণ সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। তবেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল হওয়া সম্ভব হবে।

রাজনৈতিকভাবে বয়কট

মাদকের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি ও মাদক কারবারি যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে তাকে ঐ রাজনৈতিক দল থেকে সাথে সাথেই বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি যাতে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এমনকি সমর্থক হিসেবে বিবেচিত না হতে পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

রাজনৈতিকভাবে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা, সহযোগিতা, যোগাযোগ না করলে এবং তাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি, কর্মপন্থা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুললে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করলে অবশ্যই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল হতে বাধ্য হবে। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী-সমর্থককে অবশ্যই মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও মাদক কারবারির সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করাসহ যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হবে। তাহলে এই ধরনের অবৈধ মাদক কারবারি ও মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের সমাজে তাদের চলাচলের পরিধি সংকুচিত হয়ে আসবে। ফলে মাদকের সাথে সম্পৃক্ততা থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হবে।

প্রচার প্রচারণা

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সকল মাদক কারবারির ছবি, পিতা-মাতার নাম, বিবাহিত হলে বউ-স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ির নাম, স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা সহ পোস্টার করে তাদের প্রত্যেকের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানার এলাকায় এলাকায় লাগিয়ে দিয়ে এলাকাবাসীর নজরে আনতে হবে, যাতে ঐ এলাকার সকল নাগরিক জানতে পারে, চিনতে পারে তাদের এলাকার মাদক কারবারি ও তার পরিবার কে বা কারা। এতে করে ঐ মাদক কারবারি ও তার পরিবার এলাকাবাসীর তোপের ও বয়কটের মুখে পড়বে এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবে, যার ফলে মাদক নির্মূল হওয়া সম্ভব হবে।

জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজের সাথে সাথে গণবিরোধী সকল কার্যকলাপের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। মাদক একটি গণবিরোধী, সমাজবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী অবৈধ দ্রব্য, মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। তাই যে এলাকায় মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীকে পাওয়া যাবে, সেই এলাকার জনপ্রতিনিধিকে অবশ্যই কোনোভাবে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় না দিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাকে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ যদি মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবস্থান নেন ও এলাকাবাসীকে নিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, তাহলে সমাজ থেকে মাদক বিতাড়িত হতে বাধ্য হবে।

গণমাধ্যমের ভূমিকা

স্থানীয় ও জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস্ মিডিয়া, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো মাদক নির্মূলে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর প্রকৃত তথ্য, নাম, পিতা মাতার নাম, সঠিক ঠিকানা ও অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের নজরে এনে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করতে হবে।

সচেতনতা বৃদ্ধি

মাদকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে প্রতিটি এলাকায় মাসে একবার করে হলেও সভা, সমাবেশ কিংবা সেমিনার করে জনগণকে সচেতন করে রাখতে হবে। তবেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়