প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০১:০৩
মতলবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি!
বেড়েছে চুরি-ডাকাতি

মতলব উত্তর উপজেলায় চুরি ও ডাকাতিসহ বেড়েছে নানা অপরাধ। আইনশৃঙ্খলার অবনতির মতো ঘটনা ঘটে চলেছে।
|আরো খবর
উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের পূর্ব কলসভাঙ্গা গ্রামে ঘটে গেছে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। গত ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১০টায় মাওলানা বদিউজ্জামান বাহারের মাদ্রাসার সামনে অবস্থিত বিজিবি সদস্য মো. নাঈমের বসতঘরের তালা ভেঙ্গে এবং শাবল দিয়ে স্টিলের আলমারি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ঘরের মালামাল লুটে নেয় ডাকাতরা।
পৌরসভার বারোআনী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন দেওয়ান বলেন, আমি গরুর ব্যবসা করি। আমার বাড়িতে ৩টি গরু ছিলো। একদল ডাকাত রাতের আঁধারে পিকআপ ভ্যানে করে গরুগুলো নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার ২ ছেলে ডাকাত দলকে বাধা দিলে তারা ছুরি, চাপাতি ও দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে গরু নিয়ে পালিয়ে যায়।
সাহাবাজকান্দি গ্রামের অটোচালক নূর হোসেন বলেন, কিস্তি উঠিয়ে ও ধারদেনা করে একটা গাড়ি কিনেছিলাম। সপ্তাহখানেক চালানোর পর গাড়ি চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে সকালে উঠে দেখি গাড়ি চোরে নিয়ে গেছে।
গজরা ইউনিয়নের শাহাদাত বলেন, শ্বশুর বাড়ি থেকে কিছু টাকা এনে পুরাতন একটা অটোগাড়ি কিনেছিলাম। বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চার্জে লাগিয়ে ঘুমাতে যাই। গভীর রাতে উঠে দেখি আমার গাড়ি নাই। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর ফেসবুকে গাড়ির ছবি দিলে ১৮দিন পরে শাহরাস্তি থেকে গাড়ি উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
বাড়ি ভাঙ্গা গ্রামের মোহন মিয়া বলেন, গত দুদিন আগে আমার ঘরের আলমারি, শোকেসের তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়।
আমিনপুর গ্রামের সোহাগ বলেন, আমার অটো গাড়ির ব্যাটারিগুলো রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যায়। এখন আমার গাড়িটা বাড়িতে পড়ে আছে। কিস্তি তুলে গাড়িটা কিনেছিলাম, এখন কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছি না।
গত একমাসে এ উপজেলায় এমন আরো চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ৫ আগস্টের কয়েকদিন পর পুলিশ কাজে ফিরলেও তাদের মধ্যে এখনো ভীতি কাজ করছে। পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে এখনও কঠোর না হওয়ায় দিন দিন অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। ফলে এখানকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।
তবে প্রশ্ন ওঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা নানা অপরাধে জড়িত ছিলো তারা ছদ্মবেশে এ কাজ করছে, নাকি নতুন কোনো গ্রুপ এ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এদিকে প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় শ্রীরায়েরচর ব্রীজ থেকে মতলব সেতু বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা মানুষকে দিন দিন আতঙ্কিত করছে।
মতলব উত্তর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, প্রায় রাতেই মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের উপরে, সুজাতপুর হাইওয়ে রোড থেকে শুরু করে সাহেব বাজার ব্রিজ, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র থেকে ষাটনল এলাকায় চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এলাকাটি অন্ধকার হওয়ার কারণে ছিনতাইকারীরা নিরাপদ পয়েন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে। পুলিশ এবং প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খায়রুল কবির জানিয়েছেন, মতলব উত্তরে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশ টহল জোরদার করার পাশাপাশি চিহ্নিত চোর, ডাকাতদের তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
— ডিসিকে/এমজেডএইচ