সোমবার, ১২ মে, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১৯:১৩

ভারতে পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ, বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড়

বিশেষ প্রতিবেদক: মো. জাকির হোসেন
ভারতে পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ, বাংলাদেশে সমালোচনার ঝড়
ছবি : সংগৃহীত

অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, ব্লগার, লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার (১০ মে) রাতে পিনাকী ভট্টাচার্য তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য নিশ্চিত করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। পরবর্তীতে জুলকারনাইন সায়েরও তার ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করার খবরটি নিশ্চিত করেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘আমার, ইলিয়াসের এবং কনকের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। ভারতমাতা তার শত্রুদেরকে চিনে।’ তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলাদেশে কারা পিনাকী, ইলিয়াস আর কনকের শত্রু, তাদেরকে কি এখন চিনতে পারেন?’

অন্যদিকে, সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার পোস্টে বিস্ময় প্রকাশ করে লেখেন, ‘আমার অপরাধটা কিরে ভাই? কবে ইউটিউব চ‍্যানেল একটা খুলছিলাম, তেমন কিছুই পোস্ট করি না, ওইটাও ভরত মাতা তাগো দেশে ব্যান কইরা দিলো।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার (৯ মে) ভারত সরকারের অনুরোধে বাংলাদেশে সম্প্রচারিত অন্তত চারটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল – যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন ও মোহনা টিভি – ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে ব্লক করা হয়। ভারতে এই চ্যানেলগুলো প্রবেশ করতে গিয়ে দর্শকরা একটি বার্তা দেখতে পাচ্ছেন, যেখানে লেখা রয়েছে – ‘সরকারি নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণে এই কনটেন্ট এই দেশে (ভারতে) পাওয়া যাচ্ছে না।’

ডিসমিসল্যাবের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব অথবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি মনে করা হলে ইউটিউবকে কোনো তথ্য ব্লক করার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) জানিয়েছিল যে, ভারতে তাদের আট হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে।

পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেলগুলি কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সে বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এই চ্যানেলগুলোর কনটেন্ট ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার পরিপন্থী বলে বিবেচিত হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের অবাধ প্রবাহের ক্ষেত্রে এটি একটি নেতিবাচক পদক্ষেপ। সামাজিক মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অনেকে সরব হয়েছেন এবং ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। একইসাথে, বাংলাদেশে এই চার ব্যক্তির ‘শত্রু’ কারা, পিনাকী ভট্টাচার্যের এমন মন্তব্যেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে কোনো আলোচনা শুরু হয়েছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের মধ্যে অনলাইন মাধ্যম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই ঘটনার পরবর্তী গতিপ্রকৃতির দিকে সকলের দৃষ্টি রয়েছে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়