শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৫

শূন্য পদ ডাক্তার ২৩, নার্স ৪৮, অন্যান্য ৬২

চরম জনবল সংকটে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল

চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট
চরম জনবল সংকটে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর  জেনারেল হাসপাতাল
ছবি: ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালটি স্মরণকালের সবচে' কম জনবল নিয়ে চলছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। মঞ্জুরিকৃত ৩৯৯টি পদের বিপরীতে বর্তমানে আছে ২৬৬ জন। ১৩৩ পদই শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসকের ২৩টি এবং নার্সের ৪৮টি শূন্য পদ। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদ শূন্য আছে ৩৩টি এবং আউটসোর্সিংয়ের চতুর্থ শ্রেণির জনবল শূন্য রয়েছে ২৯টি। এই বিপুল সংখ্যক জনবল সংকট নিয়ে জেলার সরকারি এই সর্বোচ্চ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটি বলতে গেলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালটি চালাতে।

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালটি বর্তমানে রোগী ধারণা ক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত রোগী ধারণ করতে হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার কারণে আশপাশের শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুরসহ কয়েকটি জেলা থেকেও রোগী আসে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। গত ক'মাস যাবত এই হাসপাতালে রোগী গড়ে ভর্তি থাকে প্রায় চার শ'র মতো। হাসপাতালের বেড ছাপিয়ে ফ্লোর, করিডোর, বারান্দা কোথাও ফাঁকা জায়গা নেই রোগী ছাড়া। অতিরিক্ত বেড বসিয়ে রোগীভর্তি থাকতে দেখা যায়।

আর আউটডোরের কথা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। প্রতিদিন এক ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। সকাল ৮টার আগ থেকেই শত শত নারী-পুরুষ রোগী টিকিট কাউন্টার এবং ঔষধের কাউন্টারে লাইন ধরে থাকে ডাক্তার দেখানোর জন্যে। এতো বিপুল সংখ্যক রোগীর চাপের মাঝে চিকিৎসক এবং নার্সের তীব্র সংকটের কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে কর্তৃপক্ষকে গলদঘর্ম অবস্থায় পড়তে হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেয়া এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই হাসপাতালের জন্যে মঞ্জুরিকৃত চিকিৎসক পদের সংখ্যা হচ্ছে ৬৭ জন। এর মধ্যে বর্তমানে পূরণকৃত পদ হচ্ছে ৪৪ জন, শূন্য রয়েছে ২৩ পদ। সিনিয়র কনসালটেন্ট ১০ জনের মধ্যে কর্মরত আছেন ৫ জন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ১২ জনের মধ্যে আছেন ৮ জন, আরএমও ২ জনের মধ্যে ১ জন, ইএমও ৩টি পদের তিনটাই শূন্য, মেডিকেল অফিসার ১৪ জনের মধ্যে আছেন ১১ জন, সহকারী রেজিস্ট্রার ১৪ জনের মধ্যে আছেন ১১ জন, আবাসিক সার্জন পদ শূন্য, অ্যানেস্থেসিস্ট ৩ জনের মধ্যে আছেন ২ জন, রেডিওলজিস্ট পদ শূন্য।

সিনিয়র স্টাফ নার্স, স্টাফ নার্স এবং সহকারী নার্স পদে শূন্য রয়েছে ১৬৩ জনের মধ্যে ৪৮ জন। উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক পদ শূন্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স ১৩৬ জনের মধ্যে কর্মরত আছেন ১০৪ জন, স্টাফ নার্স ১১ জনের মধ্যে শূন্য পদ ৭টি, মিডওয়াইফ ৬টি পদের মধ্যে ছয়টিই শূন্য, আর সহকারী নার্স ৫টি পদের বিপরীতে আছে ৩ জন।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির মঞ্জুরিকৃত পদ ৯২ জনের বিপরীতে আছে ৫৯ জন। আর আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণির জনবল ৭৭ পদের বিপরীতে আছে ৪৮ জন। এই বিপুল সংখ্যক জনবল সংকটের কারণে যেমনি রোগীদের চিকিৎসা কাজ ব্যাহত হচ্ছে, একইভাবে নার্সিং সেবা কাজও চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকটের কারণে হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং অন্যান্য সেবামূলক কাজেও চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, চিকিৎসক হতে শুরু করে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির জনবলে তীব্র সংকটের মাঝেও হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে খুবই হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন রোগীর এতো চাপ যা বলার মতো না। জনবল নিয়োগ দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। সহসা পূরণ হওয়ার তেমন লক্ষণ দেখছি না। এমতাবস্থায় তিনি সচেতন জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়