প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৫, ১৮:৫১
ট্রাম্পের 'বিনোদন কর' সুনামি: বলিউড কি ডুবতে বসলো?
ট্রাম্পের ১০০% বিনোদন শুল্কে বিপর্যস্ত হতে পারে বলিউড: উঠছে শঙ্কার মেঘ

|আরো খবর
ট্রাম্পের ১০০% বিনোদন শুল্কে বিপর্যস্ত হতে পারে বলিউড: উঠছে শঙ্কার মেঘ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ‘১০০ শতাংশ বিনোদন শুল্ক’ বিশ্বব্যাপী সিনেমা বাজারে তীব্র আলোড়ন তুলেছে।
এই সিদ্ধান্ত বলিউডসহ ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে চরম বিপদের মুখে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। বিদেশি সিনেমার ওপর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তির ক্ষেত্রে শতভাগ কর আরোপের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন কার্যত আমদানি-নির্ভর বিনোদন শিল্পে এক নতুন বৈশ্বিক সংকটের সূচনা করলো।
ভবিষ্যতের বাজারে অন্ধকার ঘনাচ্ছে বলিউডের জন্য
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর মুক্তি পায় বহু বলিউড সিনেমা। দেশটিতে থাকা ভারতীয় ডায়াসপোরা ও দক্ষিণ এশীয় দর্শকরা বলিউড ফিল্মের বড় বাজার তৈরি করেছে। শুধু বক্স অফিসেই নয়, ওটিটি (OTT) প্ল্যাটফর্মেও বলিউডের চাহিদা ব্যাপক। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বছরে কয়েক হাজার কোটি রুপি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
বিবেক অগ্নিহোত্রীর সতর্কবার্তা
“ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০০ শতাংশ বিনোদন শুল্কে ভারতীয় সিনেমা জগৎ শঙ্কিত। এটি একটি ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ। যদি এটি চালু থাকে, তবে ভারতীয় ছবির জগৎ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।”
“এখনই সময় ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জেগে ওঠার। আত্মতুষ্টি ও পাপ্পারাজ্জি-সংস্কৃতি ত্যাগ করে বাস্তব সংকটের মুখোমুখি হতে হবে।”
বিনোদন বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
“যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় সিনেমার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই নতুন শুল্ক বলিউড প্রযোজকদের যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমা রপ্তানিকে প্রায় অসম্ভব করে তুলবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক ফিল্ম বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরির ইঙ্গিত দিচ্ছে।” — অনিল চৌধুরী
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া অনুপস্থিত
এখন পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে চলচ্চিত্র শিল্পের একাধিক সংগঠন এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও ধাক্কা লাগতে পারে
শুধু প্রেক্ষাগৃহ নয়, ভারতীয় কনটেন্টের উপর নির্ভর করে এমন প্ল্যাটফর্ম যেমন নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, হুলু, ডিজনি হটস্টার ইত্যাদিও সমস্যায় পড়বে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির আওতায় স্ট্রিমিং লাইসেন্স ফিও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হলিউড বনাম বিশ্ববিনোদন: বাণিজ্য না আধিপত্য?
বিনোদন বাজারে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই বড় খেলোয়াড়। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই বলছেন ‘বিনোদন জাতীয়তাবাদ’। এটি শুধু বাণিজ্য নয়, বরং বিশ্ব সংস্কৃতির ওপর নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস হিসেবেও দেখছেন কেউ কেউ।
শেষ কথা
বিশ্ববাজারে যখন বিনোদন শিল্প বৈচিত্র্যের দিকে ঝুঁকছে, তখন এই নতুন শুল্কনীতি একটি উদ্বেগজনক পদক্ষেপ। ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফ্রান্স, ইরান, নাইজেরিয়ার মতো দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও এর প্রভাবের বাইরে নয়। এখন দেখার বিষয়, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় ও পদ্ধতি কী হয়, এবং ভারতসহ অন্যান্য দেশ কীভাবে কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিকভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে।
বিশেষ উদ্ধৃতি:
“শুল্ক চাপিয়ে সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এই পদক্ষেপ বৈচিত্র্যময় বিনোদনের জন্য হুমকি।” — সুস্মিতা সেন, অভিনেত্রী
“আমাদের সিনেমা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় গল্প। এই প্রতিবন্ধকতা মুক্ত বাণিজ্যের পরিপন্থী।” — करण জোহর, প্রযোজক
ডিসিকে / এমজেডএইচ