প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৭
দাম বৃদ্ধি পেঁয়াজের, ভারত থেকে আমদানির অনুমোদন

পেঁয়াজ আমদানির জন্যে শেষ পর্যন্ত ভারতকেই বেছে নিলো সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রোববার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) ভারত থেকে ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে।
আমদানি অনুমতিকে সংক্ষেপে আইপি বলা হয়। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে এ আইপি দেওয়া হয়। তবে কোনো আমদানিকারকই ৩০ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন না। আবার কেউ দ্বিতীয়বারের জন্যে আমদানির আবেদন করতে পারবেন না। আমদানির অনুমতি বা আইপির মেয়াদ থাকবে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার কারণে গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আইপির জন্যে আবেদন করেছেন, তারাই পাবেন এই সুযোগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আইপির জন্যে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০টি আবেদন জমা আছে। ৫০টি আবেদন বাছাই করা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে। সার্ভারে যারা আগে ঢুকতে পেরেছেন, তারাই আইপির জন্যে বিবেচিত হয়েছেন।
হিলি সীমান্তের কাছে অবস্থিত বিজয় এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বন্টি জয়সয়াল বলেন, আজ তিনি সারা দিন চেষ্টা করেও সার্ভারে ঢুকতে পারেননি। কাল আবার চেষ্টা করবেন। একজনের জন্যে ৩০ টন, পরিমাণটা কম হয়ে গেছেও বলে মনে করেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত ৯ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাজারে দাম না কমলে এক সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের আইপি দেওয়া হবে। তবে দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে তা আর দেওয়া হবে না। বাণিজ্য উপদেষ্টার এমন ঘোষণা কার্যকর হয়েছে এক মাস পর।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) এক বছর আগে পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প উৎস খেঁাজার জন্যে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিলো। উৎসগুলো হচ্ছে পাকিস্তান, তুরস্ক, মিসর, চীন ও মিয়ানমার। বাংলাদেশ এতো বছর ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করে আসছিলো। এ ছাড়া চীন ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছিলো, তবে তা পরিমাণে কম।
গত ২৮ নভেম্বর ভারতের দ্য ইকোনমিকস টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের বরাতে বলা হয়েছে, একসময় ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া পেঁয়াজের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের গন্তব্য ছিলো বাংলাদেশ। তবে গত আট মাসে বাংলাদেশ খুবই সামান্য পরিমাণ পেঁয়াজ কিনেছে ভারত থেকে। যদিও ঢাকার বাজারে পেঁয়াজের দাম ভারতের স্থানীয় বাজারের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘ভোক্তাস্বার্থের কথা ভেবে আজ ৫০টি আইপি দেওয়া হয়েছে, আরও দেওয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে পরিস্থিতি অনুযায়ী এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে পেঁয়াজের দাম কমে এলেই আমদানির অনুমতি বন্ধ করা হবে। কারণ, কৃষকের কথাও আমাদের চিন্তা করতে হবে’।








