প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৫, ০৮:৩৬
সাহিত্য পাতায় প্রকাশিত কবিতা
জাগো শোষিত নর-নারী
- বিপুল চন্দ্র রায়
ওরা জানে কী ?
আমরাই শ্রমিক রাষ্ট্রের জীবন্ত ইঞ্জিন,
সভ্যতা নির্মাণের পিলসুজ।
রক্ত ঘামে কাঠফাটা রোদে সেঁকে চামড়া,
দেশের অর্থনীতির চাকা রাখি চাঙ্গা
অথচ বেতন পাইনা ঠিক মতো
পাইনা যোগ্য সম্মান।
শুধুই জোটে গাল মন্দ
চোখের জলে ভাসে জীবন তরী।
এ কেমন মহাজন
শ্রমিকের দেয়না ন্যায্য দাম।
জাগো শোষিত নর-নারী জাগো
আলোড়ন তোলো চূড়ান্ত মুক্তির।
ভুলে যেও রেজাউল করিম রোমেল
কী হবে আর মনে রেখে,
সুখেই তো আছো।
সুখের সংসার, সরকারি চাকরিজীবী স্বামী,
তোমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নাকি
তোমাকে অনেক ভালোবাসে এবং যত্নও করে।
তোমার স্বামীও তোমাকে নাকি
অনেক ভালোবাসে,
এক মুহূর্তের জন্যে চোখের আড়াল
হতে দিতে চায় না।
শুনেছি...
এমন ভাগ্য কয়জনের হয় বলো !
তুমি কারো সাথে প্রেম করো না,
পরিবার এবং সমাজের কাছে
তুমি একজন ভালো ও ভদ্র মেয়ে।
সেটাও জানলো তোমার পরিবার এবং সমাজ।পথে চলতে চলতে যদি কখনো আনমনে
আমাকে ভেবে মনের অজান্তে হেসে ওঠো,
অথবা যদি কখনো আমাকে মনে করে
কেঁদে উঠে প্রাণ তোমার,
মনের অজান্তেই আমাকে মনে করে
যদি কখনো তোমার চোখের দু ফোঁটা
অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
তারপরও আমি বলবো, তুমি সুখি হও।
আর ভুলে যেও এই আমাকে।সম্পূর্ণ তুমিও ডাকোনি দেবদাস কর্মকার
বেলা পেরিয়ে যায় আমি নিমজ্জিত হই
ক্রমাগত আমার ভেতরে কী জেগে উঠে
জলের উপরে প্রতিফলিত আকাশ
নীল থেকে ক্রমশ কমলার রঙে
নদীর জলের আয়নায় আমারই মুখ অন্যরকম
বয়স বেড়ে গেলে চেহারায় পোশাকে দৈন্যতা
ছেঁড়া কাগজের মত মুখ থুবড়ানো ভবিষ্যৎ।
বিকেলের আকাশে বৃষ্টি আসে নির্ভেজাল
বন্ধুত্বের আহ্বান
বুকের মধ্যে বৃহৎ বৃহস্পতি, উল্টো রথের ছন্দ
বহমান রাস্তা চা খানার উপরে চন্দ্রমল্লিকার ছাদ
টুপটাপ বৃষ্টিতে ভিজে আমরা ঠিক এসেছিলাম সেই দিন।তারপর ফিরে যাওয়া নিজের ভেতরে,
ঘন হয়ে আসে হাওয়া
সব মানুষের মতো জমে যাই যেন খুব আমিতে
অন্ধকে ছুঁয়ে যায় অন্ধকার, কী আর সম্ভাবনা আগামীর
পৃথিবী জুড়ে হাত-পা বাঁধা মানুষের চীৎকার
যখোন দেখি জলের আয়নায় আমারই মুখ অন্যরকম
কাউকে ডাকেনি কেউ, সম্পূর্ণ তুমিও ডাকোনি
তবুও ভোরের আলোয় আমার বিশ্বাস বেঁচে আছে
সিঁড়ির শেষ ধাপে কী সুন্দর জেগে আছো তুমি
আনন্দের দুর্বাজলে।২ মে ২০২৫, ঢাকা, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২
অনাবৃত আকাশে দেবদাস কর্মকার
চন্দনের ঘ্রাণ যখোন আমার নাক ছুঁয়ে যায়
তখোন মাথা তুলে অনাবৃত আকাশ দেখি
কতো মেঘ কতো আকাঙ্ক্ষার সাদা সাদা আকৃতি
মৃত্তিকা থেকে অনেক দূরে চন্দ্রাবলি নৃত্য ।শহরের অলিগলিতে ফুরফুরে সন্ধ্যা নেই আর
উদ্বিগ্ন ভীরু মুখগুলো ফাঁকা বুকে প্রদীপ জ্বালে
যদিও রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানে প্রাণহীন উৎসব
হঠাৎ করেই ট্রাফিক থেমে যায়,গাড়ির অসহ্য আওয়াজ
যখোন তখোন কতোমুখী কতো যুক্তির শ্লোগান
রাত্রির মধ্যে রাত্রি কেমন নিকষ ঘন অন্ধকার ।যখোন বৃত্তের ভেতরে বসে থাকি
আরশির ভাঙাকাচে মুখ ঢেকে যায়
জলতিলকের ফোঁটা একে পেছনে দাঁড়িয়ে তুমি
আদ্যোপান্ত বিশ্বাসের মাথা খেয়ে পেছনে তাকাই
পৃথিবী জুড়ে আততায়ীর শাণিত ছোরা
উদভ্রান্ত মানুষের মুখ কোন্ অজানার পথে ধায়
কি জানি কোথায় ঈশ্বরের ক্রীড়ারত আঙুল
কেন এতো বিনাশের অদ্ভুত আয়োজন,
ভয়ংকর রক্তপাত ,
পূরবীর বিষণ্ন সুর বেজে যায় অনাবৃত আকাশ মণ্ডলে
রজনীগন্ধার মেয়ে জানালার গ্রীলে চোখ রাখে
তবুও যেন সে মৃদু চাঁদকে নিরবে ডেকে যায় ।২৫ এপ্রিল ২০২৫, ঢাকা, ১২ বৈশাখ ১৪৩২