চিতোষীর উন্নয়নের উজ্জ্বল নক্ষত্র কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিমের চির বিদায়

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাবেক সংসদ সদস্য, শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী এলাকার উন্নয়নের প্রতীক, লাখো মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, আলানা গ্রুপের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহি.......রাজিউন)। শুক্রবার (৩০ মে ২০২৫) দিবাগত রাত ৪টায় ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ জানাজানি হলে তাঁর সংসদীয় এলাকা কুমিল্লার লাকসাম-মনোহরগঞ্জসহ শাহরাস্তিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।

কর্নেল আনোয়ারুল আজিম মনোহরগঞ্জ উপজেলার শরিফপুর এলাকার কৃতী সন্তান হলেও শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী এলাকাকে নিজের মাতৃভূমি হিসেবে ভালোবাসতেন। চিতোষীর উন্নয়নে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। তাঁর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। তিনি চিতোষী ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ভূমিদাতা, ছিলেন প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি। কলেজটি প্রতিষ্ঠা করার জন্যে তিনি ১১৯ শতক জমি দান করেন। এছাড়া চিতোষী পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্যে ৩৩ শতক জমি দান করেন। চিতোষী বাজারে অবস্থিত উঘারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের জন্যে ৬০ শতক জমি দান করেন।

এখানেই শেষ নয়। কর্নেল আনোয়ারুল আজিম শাহরাস্তি সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নতুন ভবনের জন্যে ৬০ শতক জমি দান করেন। তাঁর স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠিত মনিরা আজিম একাডেমীর জন্যে ৭২ শতক জমি দান করেন। পোস্ট অফিসের জন্যে দান করেন ৬ শতাংশ জমি। তিনি এককভাবে চিতোষী বাজার জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিস মেরামতের জন্যে ১০ লাখ টাকা ও চিতোষী উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্যে ১৭ লাখ টাকা দান করেন। তিনি শাহরাস্তি উপজেলার সীমান্তবর্তী শাহ শরীফ ডিগ্রি কলেজ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাক্কুর পিতার নামে প্রতিষ্ঠা করেন সাজেদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে চিতোষী বাজার এলাকায় কর্নেল আনোয়ারুল আজিমের রয়েছে ১২ একরের একটি বাগান বাড়ি। চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের পাশেই মনোহরগঞ্জ উপজেলার শরিফপুর গ্রাম। তিনি সবসময়ই চিতোষী এলাকা অতিক্রম করে বাড়িতে যেতেন। ছোট বেলা থেকেই তাঁর যাতায়াত ছিলো চিতোষী বাজারকেন্দ্রিক। তিনি কখনোই চিতোষী এলাকার প্রতি মায়া ছাড়তে পারেন নি। বিগত সময়গুলোতে শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ সংসদীয় এলাকার সদস্যগণ ওনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে চিতোষীর উন্নয়নে তাঁর মতামতের গুরুত্ব বিবেচনা করতেন। শুধু চিতোষী নয়, লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। সে জন্যেই তিনি জনগণের ভোটে বারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছাড়াও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ঢাকার ডিওএইচএসসহ মোট তিনটি স্থানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বাদ এশা তাঁর নিজ বাড়ি মনোহরগঞ্জ শরিফপুর সাজেদুল হক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।