প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ০০:২৪
মিলছে না কৃষি বিভাগের সহযোগিতা
হাজীগঞ্জের মাটি ড্রাগন চাষের উর্বর ভূমি

ডাকাতিয়া বিধৌত হাজীগঞ্জের মাটি যে কোনো ফলনের জন্যে এক উর্বর ভূমি হিসেবে ইতোমধ্যে প্রমাণ মিলেছে। রঙ্গিন বাঁধাকপির বাম্পার ফলনের পর এবার ড্রাগন ফল চাষে সাফল্য দেখেছেন আব্দুল কুদ্দস নামে এক কৃষক। মাত্র আড়াই শ' কলাম (স্থানীয় ভাষায় কলপ) আর ৬০টি পাকা পিলার নিয়ে তিন বছর আগে শুরু করা ড্রাগনের কলম এখন কেউ চাইলে ২০ হাজার কলমও সরবরাহ করতে পারবেন এই কৃষক। ছোট জাতের সুস্বাদু এই ড্রাগন গাছে এভাবে অবিশ্বাস্য ফুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও হাজার কেজি ড্রাগন ফল পাবেন বলে আশা করেন আব্দুল কুদ্দস। একই জমিতে তিনি মাল্টা, বিভিন্ন জাতের আম ও চায়না কমলা গাছ লাগিয়েছেন। এগুলোতে ইতোমধ্যে ফল আসতে শুরু করেছে। অথচ স্থানীয় কৃষি অফিসের কোনো পরামর্শ বা সহযোগিতা নেই।
|আরো খবর
জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রাম। এই গ্রামের মাঝে আলী আহম্মদ একাডেমীর দক্ষিণ পশ্চিম কোণায় ১৫ শতাংশের এক খণ্ড জমিতে গত তিনবছর আগে ড্রাগন চাষ শুরু করেন স্থানীয় আটিয়া বাড়ির সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস। তিনি নিজেই তার প্রজেক্ট দেখাশোনা করেন।
সরজমিনে জানা যায়, চুল দাড়ি পাকা আব্দুল কুদ্দুস সড়কের পাশের উঁচু ভূমিতে ১৫ শতাংশ জমিতে ৬০টি পাকা পিলার আর আড়াইশ নাটোরের মিষ্টি ফলের কলম (কলপ) নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। গত বছর তিনি ৭০ হাজার টাকার মতো আয় করেছেন ড্রাগন ফল বিক্রি করে। এবারো আরো ভালো হবে বলে আশা করেন এই চাষী।
আব্দুল কুদ্দস জানান, ইউটিউব দেখে আমরা নিজেরাই এর চাষ শিখেছি। জৈব সার বেশি ব্যবহার করলে ভালো ফলন আর পুষ্ট ফলন হয়। পরাগায়নের জন্যে নিজে রাতে কাজ করেন, পাশাপাশি জমির এক কোণায় নিজেই মৌমাছি চাষ করছেন। তার এই ফলন মিষ্টি আর পুষ্ট হওয়ার কারণে সবাই জমিতে এসে ফল কিনে নিয়ে যায় এবং বাজারদর থেকে কেজিপ্রতি ৫০/৬০ টাকা কমে বিক্রি করা হয়। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। ড্রাগন গাছের পাশাপাশি এই জমিতে মালটা, চায়না কমলা আর কয়েক জাতের আমের ফলন এসেছে।
আব্দুল কুদ্দস আরো জানান, কৃষি অফিসার গত বছর এখানে এসেছেন। তিনি আমার কাছ থেকে ফল কিনে নিয়েছেন। এবারে এখনো কেউ আসেননি। কখনো কোনো দিন কোনো সরকারি সহযোগিতা বা পরামর্শ পাইনি। যা করি নিজের ক্যাপাসিটিতে করি। তবে যে কেউ চাইলে তার কাছ থেকে কলাম কিনে নেয়াসহ চাষাবাদে পরামর্শ নিতে পারেন বলে জানান এই কৃষক।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম উক্ত ড্রাগন বাগানের একটি ছবি দেখে বলেন, মাশাআল্লাহ অনেক ফুল এসেছে। ফুল টিকিয়ে রাখা ও ফল সেট হওয়ার টেকনিক্যাল সাপোর্ট আমরা নিশ্চয়ই দেবো।
তিনি আরো বলেন, ড্রাগন চাষের জন্যে আমাদের কোনো আর্থিক সহযোগিতা এখনো নেই। যদ্দুর মনে পড়ে, উনি কোনো একটা প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন। গত বছর আমরা উনার বাগানে গিয়েছিলাম।
উল্লেখ্য, প্রান্তিক পর্যায়ে হাজীগঞ্জে ইতিমধ্যে রঙ্গিন বাঁধাকপি, ড্রাগন চাষ, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বাঙ্গি (হুট) ব্যাপক সফলতা পাচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, যে কোনো ফলনে হাজীগঞ্জের মাটি উর্বর ভূমি।