প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৩, ০০:০০
হাসপাতালে দালালদের পাকড়াও অব্যাহত রাখতে হবে

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৪ দালাল গ্রেফতার হয়েছে বলে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে খবর বেরিয়েছে। এটা ভুক্তভোগীদের জন্যে কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর। এই খবরে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোঃ মাসুদ (২৬), সবুজ (২২), দীপ দে (২৩) ও হৃদয় দাস (২৫) নামে ৪ দালালকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুর ১২টার দিকে তাদেরকে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মেহরাজ মাহমুদ। গ্রামাঞ্চল থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সহজ-সরল রোগীদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এদেরকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
|আরো খবর
প্রতিদিন সকালে শত শত রোগী আসে হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ নেয়ার জন্যে। রোগীরা যখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন টিকিট কিংবা ঔষধ নেয়ার জন্যে, তখনই দালালরা গিয়ে সিরিয়াল ছাড়া আগে টিকেট এবং ঔষধ নিয়ে দিবেন বলে টাকা নেন। আবার যারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চেম্বার থেকে বের হন, তখন তাদেরকে এক রকম জোর করে নিয়ে যান হাসপাতালের সামনে থাকা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর দালাল হিসেবে তারা কাজ করেন।
এএসআই মেহরাজ মাহমুদ জানান, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের হয়রানি করার কারণে রোগীদের পক্ষে মোবাইলে ফোনে থানায় অভিযোগ করা হয়। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে চার দালালকে পাওয়া যায় এবং তাদেরকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, হাসপাতালে আসা রোগীদেরকে দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির দালাল বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তারা সাধারণ রোগীদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার নাম করে তাদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেকেই সঠিক চিকিৎসা সেবা পায় না। আজকে রোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সংঘবদ্ধ দালালদের দৌরাত্ম্যের কাছে শুধু রোগী নয়, হাসপাতালের নিরীহ কর্মচারী ও কিছু ডাক্তারও জিম্মি হয়ে পড়ে। দালালদের আশ্রয় প্রশ্রয় কারা দেয়, সেটা ধৃত দালালদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণে বেরিয়ে আসতে পারে বলে আমরা মনে করি। বর্তমানে টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে গঠিত অ্যাকটিভ সিটিজেন গ্রুপ এই পর্যবেক্ষণের কাজটি করতে পারে বলে আমাদের অভিমত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও দালালদের বিষয়ে তদন্ত কিংবা নিজস্ব পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে। যেভাবেই হোক এই হাসপাতালে দালালদের উপদ্রব বন্ধে সাময়িক কোনো পদক্ষেপ নয়, নিতে হবে টেকসই পদক্ষেপ। অন্যথায় হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধির প্রয়াস কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা সত্ত্বেও ব্যাহত হবার আশঙ্কা থেকেই যাবে।