শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৫

সর্বত্র এমন ঘোষণা নয়, বাস্তবতা কাম্য

অনলাইন ডেস্ক
সর্বত্র এমন ঘোষণা নয়, বাস্তবতা কাম্য

‘শাহরাস্তিতে গ্রুপিং ভুলে একমঞ্চে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ॥ ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা’Ñএটি গত বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় ছোট্ট করে প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম। দলীয় দৃষ্টিকোণ বা মানসিকতা পোষণ করে নয়, সচেতন অনেক পাঠক সংবাদটিতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিষয় খুঁজেছেন। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, সকল ভেদাভেদ ভুলে ধানের শীষের পক্ষে এক হয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে শাহরাস্তি পৌর এলাকার সদর ওয়ার্ড বিএনপির নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর ২০২৫) সন্ধ্যায় বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাবেক পৌর কাউন্সিলর সফি উল্লাহ মিয়াজীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মিয়াজী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল করিম মিনার, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মঈনুল ইসলাম কাজল, পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম সুমন, বিএনপির নেতা মনির হোসেন মিন্টু, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক গাজী ইউনুস, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, বিএনপির নেতা আব্দুল মালেক, সফি আহমেদ, হায়দার আখন্দ, সাহাদাত হোসেন প্রমুখ। সভায় সকল ভেদাভেদ ভুলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন যিনি পাবেন তার পক্ষে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দেয়া হয়। এই প্রথম প্রকাশ্যে বিএনপিকে সকল ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ করার এই প্রয়াসটিকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। এতে করে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও নেতাকর্মীদের মাঝে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে বলে সাধারণ নেতা-কর্মীরা মনে করেন।

শাহরাস্তিতে বিএনপির সকল গ্রুপের নেতারা পৌর সদর ওয়ার্ড কমিটির সভায় সকল ভেদাভেদ ভুলে আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে এক হয়ে কাজ করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। তারা নিজেরা যে দ্বিধাবিভক্ত সেটা স্বীকার করলেন প্রকাশ্যে এবং এ দ্বিধাবিভক্তি যে অকল্যাণকর সেটার অভিব্যক্তি ঘটালেন। নেতিবাচক দিক হলো, উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তো এক মঞ্চে ভেদাভেদ ভোলার ঘোষণা দেন নি এখনও। তাঁরা কি পারস্পরিক বিবাদ এখনও মেটাতে পারেন নি? তাঁরা কি পছন্দের প্রার্থীর মনোনয়নের প্রশ্নে এখনও গোঁড়ামি ত্যাগ করতে পারেন নি? সোজা কথা, মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা নিছক ঘোষণা, প্রতিশ্রুতি, অঙ্গীকারসহ মুখরোচক কোনো কথাতে এখন সন্তুষ্ট হতে চান না, তারা বাস্তবতা দেখতে চান।

উল্লেখ করা দরকার, দেশের বড়ো বড়ো ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে ফেলেছে এবং মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। অথচ বিগত ১৭ বছর ধরে পোড় খাওয়া দল বিএনপি জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকার দাবি করে আত্মতুষ্টিতে ভোগলেও সংসদীয় আসনগুলোতে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে বস্তুত অনেক পিছিয়ে আছে এবং প্রায় প্রতিটি আসনে নিজেরা গ্রুপিং রাজনীতিতে আসক্ত হয়ে পরস্পরকে ঘায়েল করার মৃদু ও প্রকট সাংঘর্ষিক পরিবেশ সৃষ্টিতে মগ্ন হয়ে আছে। এ সংক্রান্ত বিষয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মুখরোচক/ভাইরাল উপজীব্যে পরিণত হয়েছে। এতে সাধারণ্যে কম-বেশি অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বাস্তবতাকে ধামাচাপা না দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে সর্বাত্মক ঐক্য সৃষ্টি এবং তাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির সঞ্চার ও দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন থাকার প্রয়াস প্রশংসনীয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়