শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

সন্ধ্যা-রাতে শহরে এমন ডাকাতি উদ্বেগজনক
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর শহরে রাতের বেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল কার্যক্রম চলে। সেটা আবার সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী সূর্যোদয় পর্যন্ত নয়। বস্তুত রাত ১১টা থেকে ফজরের নামাজের আজান পর্যন্ত চলে এই টহল কার্যক্রম। সেজন্যে চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারী সহ অন্য অপরাধীরা ওঁৎ পেতে থাকে দিনের ২৪ ঘণ্টার কোন্ সময়টাতে চাঁদপুর শহরে তাদের কাজটা নিরাপদে সম্পাদন করা যায়। এজন্যে তারা রেকি তথা পূর্ব পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে পরিকল্পনা নেয়। সেমতে ফজর নামাজের আজানের পর সকাল ৭-৮টা, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অফিস চলাকালীন দিনের সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং মাগরিবের নামাজের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই তিনটি সময়ে চাঁদপুর শহরের কোথায় তাদের কাজটা নিরাপদে সারতে পারবে সেজন্যে নিখুঁতভাবে রেকি করে। এই রেকি অনুযায়ী বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও সকালে চুরি এবং ছিনতাই করে। আর দিনের মূল সময়টাতে খালি বাসার তালা খুলে কিংবা ভেঙ্গে স্বর্ণ, নগদ অর্থ সহ সহজে বহনযোগ্য মূল্যবান মালামাল চুরি করে। এ ক্ষেত্রে যেসব আবাসিক এলাকায় তথা বাসা-বাড়িতে দারোয়ান এবং সিসি ক্যামেরা আছে, সেসব এলাকায় সাধারণত চোরেরা তাদের কাজ চালায় না। তবে দারোয়ানের অনুপস্থিতির সুযোগ ও দারোয়ানের সাথে যোগসাজশ করে চোরেরা দিনের কাজটা করার সাহসিক অভিযানও চালায়। আর চোরসহ ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা সন্ধ্যারাতে তাদের অভিযান পরিচালনার আচমকা সুযোগ খোঁজে। তবে সেটা খুব কম। সেই কমের তৃপ্তিতে ভোগাবস্থায় গত মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরে ঘটে গেলো ডাকাতির ঘটনা।

‘রহমতপুর কলোনীতে সন্ধ্যা-রাতে ডাকাতি ॥ নগদ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার লুট ও আহত ১’ শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে গোলাম মোস্তফা লিখেছেন, চাঁদপুর শহরের ১০নং ওয়ার্ডস্থ রহমতপুর আবাসিক কলোনীতে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা-রাতে ১৪৫নং রহমতপুর কলোনীর মনা মিয়ার তিনতলা বিল্ডিংয়ের ডান পাশে মোঃ শাহআলম শেখের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল বিউটি আক্তার (২৫) নামের এক নারীকে হাত-পা, মুখ বেঁধে খাটের নিচে ফেলে রেখে ঘরের আলমিরা ভেঙ্গে নগদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১ ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, স্মার্ট ও বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।মোঃ শাহআলম শেখ তার অভিযোগে বলেন, আমি ট্রাক রোডে ইট, বালু, সিমেন্ট ব্যবসায়ী। আমার মেয়ে বিউটি আক্তারকে সন্ধ্যায় ঘরে রেখে শহরের গুয়াখোলায় আমার ব্যবসায়িক টাকা কালেকশনে যাই এবং আমার স্ত্রী পাশের দোকানে যান। এই সুযোগে অজ্ঞাত কিছু লোক নাকে, মুখে মুখোশ পরে ঘরে প্রবেশ করে আমার মেয়েকে হাত-পা, মুখ বেঁধে খাটের নিচে ফেলে আলমিরা ভেঙ্গে আমার ব্যবসায়িক নগদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১ ভরি ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন (যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা), ঘরে থাকা স্মার্ট ও বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী ঘরে এসে দেখে আমার মেয়ের নাক, মুখ, চোখ ও হাত-পা বাঁধা। আমার স্ত্রী মেয়ের বাঁধন খুলে মেয়ের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেন। পরে আমার স্ত্রী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাকে সবকিছু জানান। আমি তাৎক্ষণিক বাসায় গিয়ে দেখি, ঘরে থাকা টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন ডাকাত দল নিয়ে গেছে। আমার মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাই। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহম্মদ আব্দুর রশীদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

পুলিশের এ তদন্তে সাফল্য আসবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেই আমরা বলতে চাই, রহমতপুর কলোনীর এই ডাকাতি উদ্বেগজনক। গত ক'বছর আগেও চাঁদপুর শহরের আদালত পাড়া সহ আরো ২-১টি স্থানে এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটার পর পুলিশি তৎপরতায় সেটি বন্ধ হয়। কিন্তু আবার সেটি শুরু হওয়াটাকে শহরবাসী কুলক্ষণ বা অশনি সংকেত বলেই ভাবছেন। সেজন্যে চাঁদপুর শহরের দুটি পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাসহ সমুদয় ফোর্সের সক্রিয় তৎপরতা খুবই প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে চাঁদপুর মডেল থানার চৌকষ ওসি ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিবিড় তদারকি আবশ্যক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়