বুধবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৮

পরিবেশ বিষয়ে অংশীজনের এমন সভা সময়োপযোগী

অনলাইন ডেস্ক
পরিবেশ বিষয়ে অংশীজনের এমন সভা সময়োপযোগী

‘পরিবেশগত মৌলিক সমস্যাসমূহ এবং এ সকল সমস্যা হতে উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক অংশীজন সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেছেন, পরিবেশ রক্ষার্থে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে। নদীমাতৃক চাঁদপুরে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদী বাঁচলে আমাদের পরিবেশ বাঁচবে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের ফলে আরো একটি সমস্যা হচ্ছে বাস্তুচ্যুতদের নিয়ে। নদীভাঙ্গন না কমালে বাস্তুচ্যুতদের মাধ্যমেও পরিবেশ দূষণ হবার একটি কারণ বলা যেতে পারে। নদী ভাঙ্গন কমালে বাস্তুচ্যুতদের কমানো সম্ভব হবে। সোমবার (৬ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জেলার পরিবেশগত মৌলিক সমস্যাসমূহ এবং এ সকল সমস্যা হতে উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক অংশীজন সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় উন্মুক্ত আলোচনার আলোচিত বিষয়গুলো প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ডুবোচরসহ আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন আমাদের জন্যে অনেক ক্ষতিকর। যৌক্তিক মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ইজারা দিতে পারলে পরিবেশের ক্ষতি হতো না। তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একেবারে ভালো নয়। যার কারণে সামাজিক বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে, যা পরিবেশ দূষণ করবে। এ জেলায় পলিথিনের কারণে সামগ্রিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শব্দ দূষণ শুধু এ জেলায় নয়, সব জেলাতেই হচ্ছে। যত্রতত্র নিয়ম না মেনে মাইকের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ। জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থার অবস্থাও তেমন ভালো নেই। যা কিছু রয়েছে তাও বন্ধ হয়ে গেছে, যা পরিবেশ দূষণ করছে। ইটভাটার প্রভাব তাৎক্ষণিক না পাওয়া গেলেও বেশ কিছুদিন পরে তার প্রভাব দেখা যায় ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের মাধ্যমে। মেডিক্যাল বর্জ্যের জন্যে ডাম্পিং স্টেশনের আলাদা জায়গা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। পরিশেষে সকলকে আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ইতোমধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে, কিন্তু সমাধান আসেনি। সমস্যা জানি, সমাধানও জানি, কিন্তু বাস্তবায়ন পারছি না। এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আজকের সভায় যারা আছেন তারা অন্তত বুঝতে পেরেছেন পরিবেশ রক্ষায় কী কী ভূমিকা রাখা যায়। এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সমস্যা মনে করিয়ে দেয়া বা তাগিদ দেয়া। এসব আলোচ্য বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের দেশে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ বেশি চোখে পড়ে প্রতি বছরের ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির কারণে। আর সারা বছর পরিবেশ ছাড়পত্রবিহীন ও লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা (ব্রিক ফিল্ড)-এর বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে জরিমানা করার বিক্ষিপ্ত কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে জানা যায় পরিবেশ অধিদপ্তর নামে ক্ষমতাধর একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। এছাড়া পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতনতামূলক ও উদ্বুদ্ধকরণ সংক্রান্ত ধারাবাহিক কার্যক্রমে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম চোখে পড়ে না। এমন বাস্তবতায় চাঁদপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘পরিবেশগত মৌলিক সমস্যাসমূহ এবং এ সকল সমস্যা হতে উত্তরণে করণীয়’ শিরোনামে অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা আয়োজনের সংবাদ গতকালকের চাঁদপুর কণ্ঠে দেখে কিছুটা নড়েচড়ে বসতে হয়েছে অনেককে। এমন সভা যদি সারাদেশের প্রতিটি জেলায় হয় এবং এ সভা থেকে চিহ্নিত সমস্যাসমূহ থেকে উত্তরণে যদি সরকারি উদ্যোগ গৃহীত হয় এবং তাতে নাগরিকরা সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে একাত্ম হন, তাহলে সমস্যা থেকে উত্তরণের কাজটি সহজতর হয়ে যাবে। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের এমন আলোচনা উপজেলা পর্যায়েও করা যায় কিনা সেটি ভেবে দেখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়